সিলেট প্রতিনিধি
সিলেটের দক্ষিণ সুরমা উপজেলাধীন সিলামে রিজেন্ট পার্ক এন্ড রিসোর্টে ঘটে যাওয়া অমানবিক ঘটনায় পুরো এলাকাজুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে। স্থানীয় বিএনপি নেতা তাজরুল ইসলাম তাজুলের নেতৃত্বে কয়েকজন তরুণ-তরুণীকে আটক, জোর করে বিয়ে এবং রিসোর্টে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের অভিযোগ উঠেছে।
গত ১৯ জানুয়ারি রোববার বিকেলে সিলেটের দক্ষিণ সুরমার সিলাম এলাকায় অবস্থিত রিজেন্ট পার্ক ও রিসোর্টে স্থানীয়রা অসামাজিক কার্যকলাপের অভিযোগ তুলে এ হামলা চালায়। এ সময় তরুণ-তরুণীদের আটক করে এক পর্যায়ে কাজী ডেকে জোর করে বিয়ে দেওয়া হয়।
স্থানীয়দের দাবি, দীর্ঘদিন ধরে রিজেন্ট পার্ক ও রিসোর্টে সন্দেহজনক কার্যকলাপ চলে আসছিল। রোববার দুপুরে জনতা রিসোর্টের বিভিন্ন কক্ষ থেকে ১৬ জন তরুণ-তরুণীকে আটক করে। এসময় তাদের অভিভাবকদের খবর দেন স্থানীয়রা। পরে কথিত প্রেমিক প্রেমিকাদের মধ্যে প্রাপ্তবয়স্ক ৮জন ছেলে-মেয়েকে প্রকাশ্যে কাজী ডেকে অভিভাবকদের সম্মতিতে বিয়ে পড়িয়ে দেওয়া হয়। আর অপ্রাপ্ত বয়স্ক আট তরুণ-তরুণীকে অভিভাবকের জিম্মায় দেওয়া হয়। বিয়ে পড়াতে কাবিনে ১০ লাখ টাকা করে ধার্য করেন জনতা। এছাড়া কাজির বিয়ে পড়ানোর টাকাও জনতা চাঁদা তুলে পরিশোধ করেন।
এই ঘটনার মূল পরিকল্পনায় ছিলেন দক্ষিণ সুরমা উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ও সিলেট জেলা কৃষকদলের সদস্য সচিব তাজরুল ইসলাম তাজুল। তার নেতৃত্বে রিসোর্টে ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
রিসোর্টের মালিক দাবি করেছেন, চাঁদা নিয়ে বিরোধের জেরেই এই হামলা হয়েছে। তিনি বলেন, “একটি গ্রুপ চাঁদা দাবি করত, পরে অন্য একটি গ্রুপ এসে আরও বেশি চাঁদা চাইত। চাঁদা না দেওয়াতেই এই ঘটনার সূত্রপাত।”
এ ধরনের গুরুতর ঘটনা ঘটলেও পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এলাকাবাসীর অভিযোগ, পুলিশ যথাসময়ে ব্যবস্থা নিলে রিসোর্ট পুড়িয়ে দেওয়ার মতো ঘটনা এড়ানো যেত। ভাঙচুরের পর স্থানীয়রা রিসোর্টটিতে আগুন ধরিয়ে দেয়। বর্তমানে রিসোর্টটি সম্পূর্ণ ভস্মীভূত অবস্থায় রয়েছে।
এ ব্যাপারে মোগলাবাজার থানার ওসি খন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান জানান, জনতা কর্তৃক কয়েকজন তরুণ-তরুণীকে আটকের খবর শুনে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। কিন্তু স্থানীয়রা পরিবারের কাছে তাদের হস্তান্তর করেছেন বলে শুনেছি। তবে আমি বারবার তাদেরকে বলেছি আটককৃতদের আমাদের জিম্মায় দিয়ে দেন। আমরা প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণপূর্বক তাদের অভিভাবকের কাছে হস্তান্তর করবো। কিন্তু তারা তা শুনেননি।