জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম পরিবর্তন করে স্বাধীনতাবিরোধী শাহ আজিজের নামকরণ করার প্রতিবাদ করায় ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) মানবসম্পদ ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের সভাপতি শহীদুল ইসলামকে হেনস্তা করেছে শিবির ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র (বৈছা) শিক্ষার্থীরা।
১১ই মার্চ, মঙ্গলবার দুপুরে এ ঘটনায় খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির হস্তক্ষেপে তাকে একটি গাড়িতে করে নিরাপদে ক্যাম্পাসের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়।
এদিন বেলা ১২টায় প্রশাসন ভবনে ভর্তিসংক্রান্ত একটি বৈঠকে অংশ নেন সব বিভাগীয় সভাপতি। এতে আওয়ামীপন্থি শিক্ষকরাও অংশ নিয়েছেন জানতে পেরে শিবির কর্মী উচ্ছৃঙ্খল শিক্ষার্থীরা সভাস্থলের বাইরে অবস্থান নিয়ে কুৎসিত স্লোগান দিতে থাকেন। পরে আওয়ামীপন্থি অন্য শিক্ষকরা সভাকক্ষ থেকে বের হয়ে যান।
তবে মানবসম্পদ ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের সভাপতি শহীদুল ইসলাম প্রশাসন ভবন থেকে বের হয়ে ভ্যানে করে বিভাগের উদ্দেশে রওনা হন। এ সময় তাকে পেছন থেকে শিবির কর্মী শিক্ষার্থীরা ধাওয়া দিলে তিনি দ্রুত নিজ অফিসকক্ষে চলে যান। এ সময় শিবির কর্মীরা বিভাগীয় সভাপতির কক্ষের সামনে গিয়েও বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক শাহীনুজ্জামান বলেন, “তার (শহীদুল ইসলাম) বিরুদ্ধে বিতর্কিত কাজে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ কতিপয় শিক্ষার্থীর। তার বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এখনও কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়নি। আপাতত কিছুদিন তিনি ক্যাম্পাসের বাইরে নিরাপদ থাকবেন বলে মনে করছি। তাই তাকে বাইরে পৌঁছে দিলাম।”
‘বাইরে পৌঁছে দিয়েছেন নাকি কৌশলে ক্যাম্পাসছাড়া করলেন?’- এমন প্রশ্নের কোনো উত্তর না দিয়ে এড়িয়ে যান প্রক্টর।
এদিকে, ধাওয়াকারী বৈছা-শিবির শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, শহীদুল ইসলাম জুলাই-আগস্টে আন্দোলনকারীদের বিরোধিতা করেছেন। সে সময় শাপলা ফোরামের ব্যানারে মিছিলে তিনি অগ্রণী ভূমিকা রাখেন। তিনি এখনও নিয়মিত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আওয়ামী লীগের পক্ষে লিখছেন। গত ৭ই মার্চেও উস্কানিমূলক পোস্ট দিয়েছেন তিনি।
এ বিষয়ে মানবসম্পদ ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের সভাপতি শহীদুল ইসলামকে ফোন করা হলে তিনি কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে শেখ পরিবারের নামে প্রতিষ্ঠিত ৬টি আবাসিক হল ও স্থাপনার নাম ৫ই মার্চ পরিবর্তন করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এর মধ্যে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের নাম পরিবর্তন করে রাখা হয় সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও স্বাধীনতাবিরোধী শাহ আজিজুর রহমানের নামে। মুসলিম লীগ নেতা শাহ আজিজ ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী ছিলেন। পরে জিয়াউর রহমানের আমলে তিনি প্রধানমন্ত্রী হন।