
।। লাকী আক্তার ।।
আমরা এইদেশের সাধারণ মানুষ। এদেশের সাধারণ মানুষের চাওয়া খুব সামান্য। লুটেরা, আর অসীম লোভীদের সাথে সেই চাওয়ার মিল নাই।
নিরাপত্তা, কাজের নিশ্চয়তা এইটুকুই রাষ্ট্রের কাছে চায় সাধারণ মানুষ।
অথচ দেখেন এই দেশে সাধারণ মানুষের জীবনের কোন নিরাপত্তা নাই।এটা সাত মাস ধরে নাই, এমন না। বহুবছর ধরেই নাই। বহুবছর ধরে রাস্তায় দাঁড়িয়ে আমরা একটা স্লোগান দিয়ে গেছি, ‘স্বাভাবিক মৃত্যুর গ্যারান্টি চাই’। কেননা রাস্তায় নামলে মানুষ জানেনা, সে আদৌ বাড়ী ফিরবে কিনা। আমাদের সমাজ এমনিতেই খুবই পুরুষতান্ত্রিক। নারী নির্যাতনের ঘটনা হিসাব করলে যেকারও মাথা খারাপ হয়ে যাওয়ার কথা।
এই দেশে সবচেয়ে সস্তা মানুষের জীবন। খুন, ধর্ষণ, নির্যাতন এগুলো কেন ঘটে? যারা অপরাধী তারা যদি ক্ষমতাবান হয় তাদের সাথে আইন একরকম আবার যারা ক্ষমতাহীন তাদের ক্ষেত্রে আইন আরেকরকম।এইগুলো খুবই বৈষম্যমূলক। আইন সবার জন্য সমান এই কথাটি দীর্ঘদিন ধরেই প্রহসনমূলক হিসেবে দাঁড়িয়ে গেছে।
বাংলাদেশে যে নারী নির্যাতন নিয়ে যে আইন আছে সেটার সংস্কার নিয়ে আলাপ হইতে পারে। কিন্তু মূল আলাপ হলো যেগুলো আছে সেগুলোরই কোন প্রয়োগ নাই। বিচারহীনতা ভয়ানক লেভেলে এখানে। ফলে অপরাধীরা ফাকফোকর গলে বের যায়।
আর অনেক ধর্ষণের ঘটনা নারীরা বলেও না। পরিবার চেপে যায়। কেননা তাদের সামাজিকভাবে হেয় করা হয়। ভিক্টিম ব্লেমিং আছে। ফলে রেকর্ড কম হয়। যেটুকু রেকর্ডে থাকে সেগুলো প্রমাণ করতে যেয়ে নারীরা যে হেনস্থার শিকার হয় সেগুলো নিয়েও আলোচনা খুবই কম। সরকার যদি দৃঢ় অবস্থান ব্যক্ত করে, প্রতিটি জেলায় এবং কাঠামোগুলোতে এর বিরুদ্ধে সচেষ্ট অবস্থান থাকে।
তাহলেই এগুলো রোধ সম্ভব। আছিয়া মরে গেছে। আছিয়াকে হেলিকপ্টার দিয়ে নিয়ে গেছে। কয়জন আছিয়াকে আপনারা হেলিকপ্টারে নিয়ে যাবেন? সাধারণ মানুষ কি এগুলো চায়?
মানুষ চায় নিরাপত্তা। নারীরা চায় নিরাপত্তা। আসিয়া এখানে একটা প্রতীক। কিন্তু আমরা চাই আইনের প্রয়োগ। বরগুনায় মেয়ে ধর্ষিত হয়েছে। বাবা মামলা করলো। সে অপরাধে বাবাকেই খুন করেছে। এই তো পরিস্থিতি। শুধু ভাইরাল ঘটনা নয়, সকল অন্যায়ের বিরুদ্ধে মানুষকে কথা বলতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলোকে সোচ্চার অবস্থান রাখতে হবে। নারী ইস্যু শুধু নারীদের এইসব ভাবনা থেকে রাজনৈতিক দলগুলোকেও বের হয়ে আসতে হবে।