ভারতসহ চারটি দেশকে নিয়ে যৌথ অর্থনীতি গড়ে তোলার প্রত্যাশার কথা বলেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূস।
তিনি বলেন, আমাদের পণ্য, পৃথিবীর পণ্য। এই পণ্য নেপালে যাবে, ভুটানে যাবে, ভারতের সেভেন সিস্টার্সে যাবে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে গণঅভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে গঠন করা সরকারের প্রধান এই আগ্রহের কথা তুলে ধরেন।
এই ভাষণে আওয়ামী লীগ শাসনামলের নানা সমালোচনা করলেও শেখ হাসিনার মতিষ্কপ্রসূত এই প্রকল্প এগিয়ে নেওয়ার কথা বললেন ইউনূস।
বিবিআইএন ১৯৯৭ সালের ১৪ই মে গড়ে ওঠে। ৮ই জুন ২০১৫ সালে বাংলাদেশ সরকার বিবিআইএন মোটর ভেহিক্যাল এগ্রিমেন্ট এর খসড়া তৈরি করে ও ১৫ই জুন (২০১৫) ভুটানের রাজধানী থিম্পুতে এই খসড়ার অনুমোদন দেওয়া হয়। এই চুক্তি দ্বারা চারটি দেশের যাত্রীবাহি,পন্যবাহি ও ব্যক্তিগত যানবাহন নির্দিষ্ট রুটে চলাচল করতে পারবে এবং সমুদ্র বন্দর ব্যবহার করতে পারবে।
ইউনূস বলেন, “বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া আমাদের অন্যতম লক্ষ্য।”
ভাষণে বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থানকে কাজে লাগিয়ে এবং প্রতিবেশী ভারতকে নিয়ে একটি যৌথ অর্থনীতি গড়ার প্রত্যাশার কথা বলেন তিনি, যাতে আরও দুটি দেশকে রাখা হবে।
“প্রতিবেশীদের পণ্য আমাদের এখানে আসবে, সারা পৃথিবীর কাছে পৌঁছে যাবে, এভাবেই এটি একটি লাভজনক অর্থনৈতিক অঞ্চল হিসেবে দাঁড়িয়ে যাবে। আর এ অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় থাকবে বাংলাদেশ।”
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমি বরাবরই বলে এসেছি, আমরা মহা সৌভাগ্যবান এক জাতি, পৃথিবীর মানচিত্রে আমাদের অবস্থানের কারণে। বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটান—দক্ষিণ এশিয়ার এই চারটি দেশ মিলে একটি যৌথ অর্থনীতি গড়ে তুলতে পারলে চার দেশই লাভবান হবে।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, আমাদের রয়েছে এক বিস্তীর্ণ মহাসাগর। ভৌগোলিক অবস্থানগত কারণে আমাদের সামনে বিরাট অর্থনৈতিক সুযোগ এনে দিয়েছে। কুমিরা থেকে টেকনাফ পর্যন্ত দীর্ঘ উপকূল ভূমি। এই দীর্ঘ উপকূলজুড়ে বিরামহীনভাবে অনেকগুলি আধুনিক প্রযুক্তি সমৃদ্ধ আন্তর্জাতিক মানের সমুদ্র বন্দর, শিল্প কারখানা, রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ এলাকা স্থাপন করা গেলে পুরো অর্থনৈতিক অঞ্চলের ভবিষ্যৎ দ্রুত পরিবর্তন সম্ভব।
নেপাল ও ভূটান বাংলাদেশর জলবিদ্যুৎ দিতে অত্যন্ত আগ্রহী জানিয়ে তিনি বলেন, আমরাও নিতে আগ্রহী।
নেপাল থেকে জলবিদ্যুৎ আনতে পারলে জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর আমাদের নির্ভরশীলতা কমবে বলে মত দিয়ে ইউনূস বলেন, বর্তমানে বিশ্ববাসী পরিবেশ রক্ষায় সচেতন। তারা এটাকেই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিচ্ছে। জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর নির্ভরশীলতা কমিয়ে পরিবেশবান্ধব বিকল্প পাওয়া গেলে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের আরও বেশি মনোযোগ আকর্ষণ করা যাবে।
বাংলাদেশের শিল্পাঞ্চল গড়ে তুলতে নেপাল ও ভুটার থেকে বিদ্যুৎ আমদানির কোনো বিকল্প নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।