শেখ হাসিনার ফাঁসি না হওয়া পর্যন্ত পহেলা বৈশাখের অনুষ্ঠান করতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে মিছিল থেকে চট্টগ্রামের ডিসি হিলে বৈশাখের বর্ষবরণ অনুষ্ঠানের মঞ্চ ভাঙচুর করা হয়েছে।
রোববার (১৩ এপ্রিল) সন্ধ্যা সোয়া সাতটার দিকে মঞ্চ এবং আশপাশের চেয়ার-টেবিল ভাঙচুর করা হয়। ভাঙচুরের পর ডিসি হিলে এবার বর্ষবরণ অনুষ্ঠান আর না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পরিষদ।
এর আগে, বিকেল সাড়ে ৪টায় জেলা প্রশাসন কার্যালয় থেকে ২০টি সংগঠনের একটি তালিকা দিয়ে নানা অভিযোগ এনে ওই সংগঠনগুলোকে মঞ্চে তুলতে নিষেধ করে।
তবে, সকালে জেলা প্রশাসন কার্যালয়ের সামনে বাংলা নববর্ষ অনুষ্ঠান উদ্যাপন আয়োজনের প্রতিবাদে’ সম্মিলিত বাংলা নববর্ষ উদ্যাপন মঞ্চ নামে একটি সংগঠনের ব্যানারে জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক সংগঠন (জাসাস) ও বিএনপির সহযোগী সংগঠন মিলে মানববন্ধন করে। তারা জেলা প্রশাসক বরাবর দেওয়া স্মারকলিপিতে বেশ কিছু সংগঠনগুলোকে নববর্ষের অনুষ্ঠানে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার দাবি জানান।
ভাঙচুরের বর্ণনা দিয়ে সম্মিলিত পহেলা বৈশাখ উদ্যাপন পরিষদের সদস্যসচিব মোহাম্মদ আলী বলেন, সন্ধ্যার দিকে ৪০ জনের মতো একটি দল মিছিল নিয়ে আসে। তারা হাসিনার বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়। একপর্যায়ে মঞ্চে উঠে ভাঙচুর শুরু করে।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল করিম বলেন, একটি মিছিল এসে কিছু বুঝে ওঠার আগেই ভাঙচুর করে চলে গেছে। বিষয়টা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
আমরা সোমবার অনুষ্ঠান করব না মন্তব্য করে সম্মিলিত পহেলা বৈশাখ উদ্যাপন পরিষদের সমন্বয়ক সুচরিত দাশ বলেন, যারা বিভিন্ন সংগঠনের নামে অভিযোগ দিয়েছে, তারাই এই ভাঙচুর করেছে। এভাবে আর অনুষ্ঠান করা যায় না। প্রশাসন শুরু থেকে আমাদের অনুমতি দিতে গড়িমসি করেছে। অসহযোগিতা করেছে। এ কারণে আজকের ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে কলেও অভিযোগ করেন তিনি।
এ বিষয়ে নগর পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) মো. আলমগীর হোসেন বলেন, এ ঘটনায় ৬ জনকে আটক করা হয়েছে। তাদের থানায় নেওয়া হয়েছে। সেখানে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ফরিদা খানম বলেন, সাতটি সংগঠন অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে থাকে। জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক সংগঠন (জাসাস) বলেছে তারা এই প্রোগ্রাম আয়োজন করতে দিতে চায় না। কিন্তু তারা লিখিত কোনোকিছু দেয়নি। তারা কয়েকজনের নাম দিয়েছে বলেছে এরা প্রোগ্রামে থাকতে পারবে না।
প্রসঙ্গত, সম্মিলিত পহেলা বৈশাখ উদ্যাপন পরিষদের ব্যানারে এখানে বাংলা বর্ষবরণের অনুষ্ঠান হয়ে আসছে। এবার অনুষ্ঠানটি ৪৭ বছরে পা রাখছে। আরটিভি/কেএইচ/এস