কবি, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব সৌমিত্র দেব টিটু আর নেই। মঙ্গলবার সকালে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে রাজধানীর খিলগাঁও এর একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে চিকিৎসকগণ তাকে মৃত ঘোষণা করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৫৪ বছর। তিনি শ্বাসকষ্টসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন।
মৌলভীবাজারের সন্তান টিটু নব্বই দশকের শুরুর দিকেই তাঁর সাহিত্যে পথচলা। নানা টানাপোড়েন ও বাধা বিপত্তিতেও তিনি থেমে যাননি তার নিজস্ব চিন্তা- চেতনা থেকে। আজ চিরকালের জন্য থেমে যেতে হলো আপাদমস্তক সৃস্টিশীল এই মানুষকে।
কবিতা যাপনই তার মূল কর্ম ছিল। প্রাবন্ধিক হিসেবেও ছিলেন সমাদৃত। দৈনিক মানবজমিনে সহকারী সম্পাদক হিসেবেও তিনি দায়িত্ব পালন করেছেন। সর্বশেষ রেডটাইমস ডটকম ডট বিডির প্রধান সম্পাদক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
কবি ও সংগঠক সৌমিত্র দেব ১৯৭০ সালের ২৭ জুলাই মৌলভীবাজার শহরে জন্মগ্রহণ করেন। সাহিত্য, সাংবাদিকতা ও সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে তার অবদান অনস্বীকার্য। তার প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা ৪১টি। বাংলা একাডেমির তরুণ লেখক প্রকল্পে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত এই কবি ‘শময়িতাদের বাড়ি’সহ বহু কাব্যগ্রন্থ রচনা করেছেন।
তিনি লোকসাহিত্য গবেষণায়ও বিশেষ খ্যাতি অর্জন করেন, ‘মরমী কবি হাছন রাজা ও তার জীবন দর্শন’ বইটি তার এক গুরুত্বপূর্ণ কাজ। সৈয়দ মুজতবা আলীকে নিয়ে রয়েছে তার একাধিক প্রকাশনা। চলচ্চিত্রেও তার অংশগ্রহণ ছিল। ‘নেকাব্বরের মহাপ্রয়াণ’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এই গুণীজন ‘ডাকঘর’-এও অভিনয় করেন। মৌলভীবাজার জেলা শিল্পকলা একাডেমি থেকে তাকে সম্মাননা প্রদান করা হয় । বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ ই মার্চ ভাষণের রাষ্ট্রীয় দিবস বাতিলের প্রতিবাদে রাস্তায় নেমে তিনি অপদস্ত হয়েছিলেন। এরপর থেকে লেখনীর মাধ্যমে তাঁর প্রতিবাদ জারি রেখেছিলেন। বড় অসময়ে চলে গেলেন টিটু।
তাঁর ভক্ত,সতীর্থরা স্যোসাল মিডিয়ায় দেখা যাচ্ছে গভীর শোকাহত। অন্তিম শ্রদ্ধা জানিয়ে বলছেন, অন্তিম শ্রদ্ধা দাদা। পরপারে চির প্রশান্তিতে থাকুন। শোক সন্তপ্ত পরিবার পরিজনের প্রতি গভীর সমবেদনা। বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করি।