ঈদুল ফিতরের ছুটির পর ক্রয়াদেশের অভাবে বন্ধ রয়েছে অনেক পোশাক কারখানায়। ক্রয়াদেশের অভাব, উৎপাদন ঘাটতি, লে-অফ ঘোষণাসহ নানা কারণে এসব কারখানা চালু করতে পারছেন না কারখানা মালিকরা। এমনকি কারখানা সচল করতে সরকারের কাছ থেকে কোন সহযোগিতাও পাচ্ছেন না তারা।
বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) তথ্য বলছে, ঈদের ছুটি শেষ হওয়ার পর ২১শে এপ্রিল পর্যন্ত এখনও ১১টি কারখানা বন্ধ রয়েছে। ফলে অনিশ্চয়তায় দিন কাটাচ্ছেন এসব কারখানার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট হাজার হাজার শ্রমিকরা। তাদের ওপর নির্ভরশীল পরিবারের সদস্যরাও পড়েছেন বিপর্যয়ের মাঝে।
বিজিএমইএ সূত্রে জানা গেছে, সংগঠনটির আওতাধীন মোট কারখানার সংখ্যা ২ হাজার ৩৪টি। এর মধ্যে মধ্যে ২ হাজার ২৩টি কারখানা ইতোমধ্যে খুলে গেছে। তবে বাকি ১১টি কারখানা এখনও ছুটির তালিকায় রয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গাজীপুর ও ময়মনসিংহ অঞ্চলে ৭টি কারাখানা এখনও বন্ধ। আর সাভার-আশুলিয়া ও জিরানি অঞ্চলে এখনও ৪টি কারখানা খোলা হয়নি। এছাড়া নারায়ণগঞ্জে ১টি একটি এখনও ছুটিতে রয়েছে।
এসব কারখানা কেন বন্ধ রয়েছে- এমন প্রশ্নের জবাবে বিজিএমইএ বলছে, কিছু কারখানায় লে-অফ ঘোষণা, কিছু কারখানায় উৎপাদন ঘাটতি, রপ্তানি আদেশ সংকটের কারণে এখনও কার্যক্রম চালু হয়নি।
অন্যদিকে, শ্রমিকদের ফেব্রুয়ারি মাসের বেতন দিতে পারেনি ৫টি কারখানা। যার মধ্যে রয়েছে- বেসিক নিটওয়্যার লিমিটেড, টিএনজেড অ্যাপারেলস লিমিটেড, অ্যাপারেল প্লাস ইকো লিমিটেড, বেসিক ক্লথিং লিমিটেড এবং রোয়ার ফ্যাশন লিমিটেড। আর মার্চ মাসের ১৫ থেকে ৩০ দিনের বেতন দিয়েছে- এমন কারখানার সংখ্যা ২ হাজার ১৯টি এবং বেতন না দেওয়া কারখানার সংখ্যা ৫টি।
কয়েকটি কারখানা চালু না হওয়া নিয়ে কিছুটা উদ্বেগ থাকলেও, বিষয়টিকে স্বাভাবিক বলে মনে করছেন সরকারপন্থি খাতসংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি-বিজিএমইএ-এর সাবেক পরিচালক এবং বাংলাদেশ অ্যাপারেল এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল বলেন, কারখানা খোলা, বন্ধ হওয়া কিংবা নতুন কারখানা চালু হওয়ার বিষয়গুলো গার্মেন্টস সেক্টরে একটি চলমান প্রক্রিয়া।
তা ছাড়া, অর্থনৈতিক সমস্যা, অর্ডারের সংকট ইত্যাদি কারণে চলমান কারখানাগুলোর মধ্যে কিছু কারখানা সাময়িকভাবে বন্ধ থাকতে পারে। বিভিন্ন কারণে সবসময় শতভাগ কারখানা খোলা না-ই থাকতে পারে, এটা খুবই স্বাভাবিক বিষয়। প্রায় ৯৯.৪৮ শতাংশ কারখানা ইতোমধ্যে চালু হয়েছে, যা নিঃসন্দেহে ইতিবাচক ইঙ্গিত। এটি উদ্যোক্তা ও শ্রমিকদের সম্মিলিত প্রয়াসের ফল বলেও মন্তব্য করেন তিনি।