পেছনে কাশ্মীরের নৈসর্গিক দৃশ্য, সামনে দেখে মনে হচ্ছে স্বামীটি মাটির নরম বিছানায় শুয়ে আছেন। স্ত্রী পাশেই নানা গল্প করছেন।
প্রথম দেখায় আমিও বুঝতে পারিনি লাশ নিয়ে বসে আছেন স্ত্রী। অথচ কাশ্মীর যাওয়ার আগে নিশ্চয় নানা পরিকল্পনা করেছিলেন দুজন।
যাওয়ার আগে নিশ্চয় প্রচুর ভ্লগ দেখেছিলেন। নানা তথ্য নিয়েছিলেন। কোন হোটেলে থাকলে পুরো কাশ্মীর দেখা যায় সেটা ভেবে বাজেট বাড়িয়েছিলেন। হতে পারে তাদের বিয়ের পর এটাই প্রথম ঘুরতে যাওয়া। অথবা অনেকবারের একবার।
নতুন পোষাক কিনেছিলেন হয়তো। কোন দিন কোন পোষাকটা পড়ে বের হবেন সে পরিকল্পনাও করেছিলেন নিশ্চয়। কোন রেস্তোরাঁয় কোন খাবারটা খেতেই হবে সেটাও হয়তো দুজন মিলে ঠিক করে রেখেছিলেন আগেই। মুখোমুখি বসে খাওয়া হয়েছে অথবা হয়নি এখনো!
বাড়ির মানুষদের জন্য কেনাকাটা করেছিলেন কি? হয়তো। না করলেও কার জন্য কি নিবেন সেটার তালিকাও নিশ্চয় নোট করে রেখেছিলেন মোবাইলের নোটবুকে।

হতে পারে তাদের অনেক দিনের জমানো টাকায় প্রথম ঘুরতে যাওয়া। যেভাবে আমরা মাটির ব্যাংকে একটু একটু করে জমাই প্রতিদিন।হয়তো পুরোটা সময় দুজন হাত ধরে ছিলেন। বলেছিলেন, ছাড়বো না এই হাত।
মৃত্যু এত কাছে না জেনেই আমৃত্যু পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছিলেন দুজন। তারপর, এমন ছবির ফ্রেমে ভুল করে ঢুকে যায় আততায়ী। স্বামীর লাশ নিয়ে ফেরার অপেক্ষায় স্ত্রী।
পৃথিবীতে এরচেয়ে ভয়াবহতম সুন্দর ছবিও তো সৃষ্টিকর্তারই তৈরি। যিনি মানুষ তৈরি করেছেন। সাথে অমানুষও। কিন্ত তিনি কি জানেন, পুরো পৃথিবী জুড়ে আর মানুষ নেই!