।। নিলুফা ইয়াসমিন হাসান।।
যখন বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ এবং মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম শ্লোগান ‘জয় বাংলা’ নিষিদ্ধ, সেই সময়ে বঙ্গবন্ধুর কালজয়ী ভাষণ ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম শুনে উজ্জীবিত এবং প্রতিবাদের স্পৃহাকে উপজীব্য করে একদল কিশোরের দ্রোহের গল্প নিয়ে নির্মিত শিশুতোষ চলচ্চিত্র মাইক প্রদর্শিত হয়েছে পূর্ব লন্ডনের জেনেসিস সিনেমা হলে। ‘মাইক’ সিনেমা দেখতে প্রচুর দর্শকের সমাগম ঘটেছিল ২৭শে এপ্রিল রোববার।
এফ এম শাহীন নিবেদিত গৌরবের একাত্তর এর প্রযোজনায় হাসান জাফরুল ও এফ এম শাহীন পরিচালিত দর্শক নন্দিত আন্তর্জাতিক পুরস্কারপ্রাপ্ত বাংলা চলচ্চিত্র ‘মাইক’-এর এক্সক্লুসিভ স্ক্রিনিং — ডায়েসপাড়া ‘৭১ এর সার্বিক তত্ত্বাবধানে প্রদর্শিত হয়। শিশুতোষ পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘মাইক’-এর মাধ্যমে তরুণ প্রজন্ম বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণসহ স্বাধীনতার ইতিহাস জানতে পেরেছেন। আয়োজকদের পক্ষ থেকে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান একাত্তরের রণাঙ্গনের বীর মুক্তিযোদ্ধারের উৎসর্গ করেন।
সম্পূর্ণ গ্রামীন লোকেশনে চিত্রায়িত ইংরেজি সাবটাইটেল করা শিশুতোষ ছায়াছবি মাইক দেখতে বাবা মায়ের সাথে শিশু কিশোরদের উপস্থিতিও ছিল বেশ।
পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র ‘মাইক’ বাংলাদেশ সরকারের অনুদানে নির্মিত। ‘মাইক’ সিনেমায় অভিনয় করেছেন বিশিষ্ট অভিনেতা তারিক আনাম খান, চিত্রনায়ক ফেরদৌস আহমেদ ও অভিনেত্রী তানভীন সুইটি, অভিনেতা নাদের চৌধুরী, ঝুনা চৌধুরী, জয়িতা মহলানবিশ, সংগীতা চৌধুরী, রহিম সুমন, ইকবাল হোসাইন, শিশুশিল্পী সানজিদ রহমান খান প্রমুখ।

যুক্তরাজ্যের কার্ডিফ, লিডস, ওল্ডহ্যাম , অক্সফোর্ড সহ বিভিন্ন শহর থেকে এসেছিলেন দর্শক। হল ভর্তি দর্শক সিনেমায় বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুনে উজ্জীবিত হয়ে করতালি দিয়ে ‘জয় বাংলা’ শ্লোগানে মুখরিত করে রেখেছিল।প্রায় ৬শতাধিক আসনের জেনেসিস সিনেমা হল পরিপূর্ণ ছিল দর্শকে। প্রদর্শনী শেষে বাইরেও ছিল দর্শকদের মতবিনিয়ম এবং বাংলাদেশ পরিস্থিতি নিয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় উজ্জীবনের আকাঙ্খার প্রতিফলন। একটি সিনেমা দেখে চটজলদি এর মূল্যায়ন এবং মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার দর্শকদের চোখমুখের ভাষা এই প্রথম ভিন্নমাত্রায় লক্ষ্য করা গেল। ‘মাইক’ প্রদর্শনের আগে ‘ডায়াস্পরা’৭১ এর পক্ষে মূখ্য কর্ণধার সৈয়দ এনামুল ইসলাম উপস্থিত সুধীদর্শকদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বক্তব্য রাখেন। সংস্কৃতিকর্মী ও কা্উন্সিলার জাসমীন চৌধুরী ‘মাইক’ সিনোমটির গল্প এবং তার নির্মাণ সম্পর্কিত তথ্যাদি, নতুন প্রজন্মের ইতিহাস অনুসন্ধান প্রেরণাদায়ক হবে এই সিনেমাটি,তা তুলে ধরেন। ’৭৫ পরবর্তী বধির সময়কে নিয়ে নির্মিত চলচ্চিত্রটি বর্তমান সময়েও প্রযোজ্য।
উল্লখ্য, এর আগে কার্ডিফ শহরেও চলচ্চিত্রটি ‘ডায়াস্পরা’৭১ প্রদর্শন করে। সেখানেও পুচুর দর্শক সমাগম হয়। দর্শক নন্দিত এ সিনেমাটি যুক্তরাজ্যের অন্যান্য শহরেও প্রদর্শনের ইচ্ছা আছে বলে উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন।