বাগেরহাটের মোংলা বন্দরের পশুর চ্যানেলে নোঙর করা একটি বাণিজ্যিক জাহাজে ভয়াবহ ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। ‘এমভি সেঁজুতি’ নামের বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজে ভোররাতে হানা দেয় একদল সশস্ত্র ডাকাত।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, দেশীয় অস্ত্রে সজ্জিত প্রায় ১৪ জনের একটি দল ফিশিং ট্রলারে করে এসে জাহাজে প্রবেশ করে। তারা জাহাজের সাতজন নাবিকের মধ্যে কয়েকজনকে মারধর করে এবং সবাইকে হাত-পা বেঁধে তিন ঘণ্টাব্যাপী লুটপাট চালায়। ডাকাতরা জাহাজের মূল্যবান যন্ত্রাংশ, ব্যবহৃত বিয়ারিং, জ্বালানি তেল, মোবাইল ফোন ও নগদ অর্থসহ প্রায় ৫০ লাখ টাকার মালামাল লুট করে।
জাহাজটির চিফ অফিসার মো. সিরাজুল হক বলেন, “ডাকাতরা অস্ত্রের মুখে আমাদের বন্দী করে রাখে। আমরা প্রাণভয়ে কিছুই করতে পারিনি। তারা যন্ত্রপাতি খুলে নেয়, ব্যক্তিগত জিনিসপত্রও নিয়ে যায়।”
আহত তিন নাবিককে তাৎক্ষণিকভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
জাহাজটি পরিচালনা করে পিএনএন শিপিং লাইন্স। গত বছর জুনে ভারত থেকে পাথর নিয়ে আসার পর যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে এমভি সেঁজুতি পশুর চ্যানেলের বেসক্রিক এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে অবস্থান করছিল।
এ বিষয়ে জাহাজটির স্থানীয় শিপিং এজেন্ট আল সাফা শিপিং লাইন্সের খুলনা শাখার ম্যানেজার শরিফ জাহাদুল করিম অমিত জানান, এটি প্রথম ঘটনা নয়। আগেও একাধিকবার একই ধরনের হামলার শিকার হয়েছে জাহাজটি। প্রতিবারই প্রশাসনকে জানানো হলেও কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ করেন তিনি।
মামলা ও তদন্ত প্রসঙ্গে কোস্টগার্ড সদর দপ্তরের মিডিয়া কর্মকর্তা লেফট্যানেন্ট কমান্ডার হারুন অর রশীদ বলেন, “ঘটনার পরপরই পশ্চিম জোনের গোয়েন্দা দল অভিযান শুরু করেছে। লুণ্ঠিত মালামাল উদ্ধারে এবং জড়িতদের চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করতে সব ধরনের চেষ্টা চলছে।”
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের মুখপাত্র মাকরুজ্জামান মুন্সী জানান, তারা বিষয়টি শুনেছেন এবং বিস্তারিত খোঁজখবর নিচ্ছেন। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করা হচ্ছে।