‘সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ (সংশোধন) -২০২৫’ বাতিলের দাবি জানিয়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য জাহাঙ্গীর কবির নানক এক বিবৃতি প্রদান করেছেন। বিবৃতিতে তিনি বলেন, সাংবিধানিকভভাবে অবৈধ সরকার জোরপূর্বক রাষ্ট্রক্ষমতা দখল করে একের পর এক কালাকানুন ও অবৈধ অধ্যাদেশ জারি করে চলেছে। যাদের নিজেদের জনগণের ম্যান্ডেট নেই এবং যারা সাংবিধানিকভাবে অবৈধ তারা প্রণীত সকল আইন ও অধ্যাদেশ অবৈধ। এ রকম একটি অবৈধ সরকার কোনো রকম মতামত গ্রহণ না করেই মধ্য রাতে অধ্যাদেশের মাধ্যমে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বিলুপ্ত করেছে। আবার ‘সারকারি চাকরি অধ্যাদেশ (সংশোধন) – ২০২৫’ প্রণয়ন করেছে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এই অধ্যাদেশ জারি করার আগে থেকেই আন্দোলন করতে ছিল। অথচ যে অধ্যাদেশ তাদের উপরে প্রয়োগ হবে সে সম্পর্কে তাদের মতামত বা দাবি-দাওয়া না শুনে একপাক্ষিকভাবে ফ্যাসিবাদী কায়দায় এই অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে। এই অধ্যাদেশের মাধ্যমে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জনগণের সেবকের পরিবর্তে অপরাধপ্রবণ গোষ্ঠী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে এবং যেন সেই অপরাধীদের দমন করার জন্যই এই অধ্যাদেশ জারি করা হয়েছে। জনগণের ম্যান্ডেটবিহীন অবৈধ দখলদার গোষ্ঠী সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের প্রতিপক্ষ জ্ঞান করে এই অধ্যাদেশ জারি করেছে। যেটাকে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের পক্ষ থেকে নিবর্তনমূলক বলে অভিহিত করা হয়েছে। এই অধ্যাদেশের ফলে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মতপ্রকাশের জায়গা নেই এবং তাদেরকে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশনায় শুধু রোবটের মতো কাজ করে যেতে হবে। এভাবে একটা শ্বাসরুদ্ধকর পরিবেশে কাউকে দিয়ে কাজ করালে নিশ্চিতভাবে তার সেরাটা বের করা সম্ভব হবে না। এই অধ্যাদেশের ফলে তারা সভা-সমাবেশ বা কর্মবিরতি দিয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি করতে পারবে না। যা তাদের সাংবিধানিক ও গণতান্ত্রিক অধিকারকে ক্ষুণ্ণ করবে। আবার এটি কার্যকর হলে সবাই অফিসের বসদের অন্যায় আদেশ পালন করতে বাধ্য হবে। আবার সেটা না করলে তারা চাকরি হারানোর ঝুঁকিতে থাকবে। এমতাবস্থায়, বিরোধী মতে বিশ্বাসী কারো জন্য চাকরি করা কঠিন হয়ে যাবে।
বিবৃতিতে তিনি বলেন, এই অবৈধ দখলদারেরা সরকারের মধ্যে পক্ষ-বিপক্ষ খেলে রাষ্ট্রকে একটা চরম হুমকির মুখে ফেলে দিচ্ছে। অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীরা শুধু শুদ্ধ মানুষ, দেশের বাকি সবাই খারাপ। এই বয়ান প্রতিষ্ঠা করতে এই সরকারের রাষ্ট্র ও সমাজের সকল পর্যায়ের মানুষকে বিভিন্ন ট্যাগ দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমরা দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, শুধু এই অবৈধ দখলদার গোষ্ঠী দেশের ভালো নির্ধারণ করতে চাইলে সেটা কখনো সবার জন্য কল্যাণকর হবে না। আমরা সকল শ্রেণি-পেশার মানুষের মতামতের ভিত্তিতে আগামীর বাংলাদেশ গড়ে তুলতে বদ্ধপরিকর। জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।