দেশের জনপ্রিয় নায়ক আরিফিন শুভ। শেখ মুজিবুর রহমানের বায়োপিক ‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’-এ অভিনয় করে ব্যাপক আলোচনায় উঠে এসেছিলেন এ নায়ক। তবে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গত বছরের ৫ আগস্ট সরকার পতনের পর থেকে পর্দার বাইরে তিনি। তাকে আর অভিনয়ে দেখা যায়নি।
আড়ালেই চলে যান এ নায়ক। তবে সম্প্রতি আড়াল ভেঙে সামনে এসেছেন শুভ। কোরবানির ঈদে ‘নীলচক্র’ দিয়ে পর্দায় ফিরছেন তিনি। নিজের আসন্ন সিনেমা নিয়ে শুভ কথা বলেন গণমাধ্যমের সঙ্গে। সেখানেই উঠে এসেছে রাজনীতির প্রসঙ্গ। এ নায়ক জানালেন, অভিনয় করে দেশের কোনো ক্ষতি করেননি তিনি। তাকে নিয়ে মুখরোচক গল্প ছড়ানো হয়েছে।
‘মুজিব: একটি জাতির রূপকার’ ছবিতে অভিনয়ের কারণে ৫ আগস্টের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে সমালোচনা হয়েছে শুভকে নিয়ে।
ছবিটিতে অভিনয়ের জন্য এক টাকা পারিশ্রমিক নিয়েছেন শুভ, পেয়েছেন পূর্বাচলে প্লট। সেসব প্রসঙ্গে শুভ বলেন, ‘এ সমালোচনাটা বড় একতরফা। শ্রমের মূল্য একজন মানুষ নিজেই নির্ধারণ করেন। এটাই কি স্বাভাবিক নয়? আপনি কি আপনার বেতন নিজে ঠিক করেন না? বলেন তো, এত টাকার কম হলে আমি এখানে জয়েন করব না, সেটা কি অপরাধ? আমি যদি ১০০ টাকায় সিনেমা করি, আর ‘মুজিব’ করতে ১০ হাজার টাকা নিই- তাহলে সমালোচনার জায়গা ছিল। তখনই সমালোচনা করতে পারতেন। কিন্তু আমি তো উল্টোটা করেছি। পারিশ্রমিক নিইনি। টাকা না নিয়ে চুরি-ডাকাতি করিনি, দেশের ক্ষতি করিনি। আর হ্যাঁ, এটা প্রথম না। কাজের ক্ষেত্রে টাকাকে আমি কখনো সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিইনি। আমার কাছে গুরুত্ব পায় টিম, গল্প এসবই। সবশেষ ‘উনিশ ২০’র কথাই ধরুন, যে অঙ্কে চুক্তি হয়েছিল, পুরোটা নিইনি। কেন নিইনি, সেটা চাইলে প্রযোজকের কাছে জিজ্ঞেস করে জেনে নিতে পারেন।’
এক টাকা পারিশ্রমিকের বিপরীতে পূর্বাচলে রাজউকের জমি পাওয়া প্রসঙ্গে শুভ বলেন, ‘দেখুন, এক টাকার পারিশ্রমিক আর পূর্বাচলের জমি এই দুটোকে এক সুতায় গেঁথে যে গল্পটা ছড়ানো হয়েছে, সেটা যতটা মুখরোচক, বাস্তবতা থেকে তা ঠিক ততটাই দূরে। ফেসবুকে তো যেকোনো কিছু বলা যায়, সেখানে প্রমাণ লাগে না, দায় নিতে হয় না। কিন্তু বাস্তবে তো জবাবদিহিতা আছে। আমি কি প্রথম শিল্পী, যে রাজউকের জমি পেয়েছি? ‘শিল্পী’ কোটায় আগেও ১৫১ জন প্লট পেয়েছেন। তাদের মধ্যে তো কেউ ‘মুজিব’-এ ছিলেন না, কেউ এক টাকা পারিশ্রমিক নেননি। তাহলে তারা কিভাবে পেলেন? আমি যেভাবে নিয়ম মেনে আবেদন করেছি, সরকার নির্ধারিত অর্থ জমা দিয়েছি, বাকিরাও ঠিক একইভাবে পেয়েছেন। কিন্তু আমার ক্ষেত্রে গল্পটা আলাদা করে বলা হচ্ছে, যেন এই দুটি ঘটনা (সিনেমা আর জমি) একে অন্যের বিনিময়। আসলে যারা এ ধরনের গুজব ছড়াচ্ছে, তাদের উদ্দেশ্য তথ্যভিত্তিক প্রশ্ন তোলা নয়, জনমনে বিভ্রান্তি তৈরি করা। আর আমরা জানি, বিভ্রান্তি তৈরির জন্য সত্যের চেয়ে মুখরোচক গল্পই বেশি কাজে দেয়।’
ঈদে মুক্তি পাবে শুভর ‘নীলচক্র’। এতে আরো অভিনয় করেছেন মন্দিরা চক্রবর্তী, ফজলুর রহমান বাবু, শিরীন আলম, খালেদা আক্তার কল্পনা, শাহেদ আলী, প্রিয়ন্তী ঊর্বী, মাসুম রেজওয়ান প্রমুখ। মিঠু খানের সঙ্গে যৌথভাবে চিত্রনাট্য করেছেন নাজিম উদ দৌলা। ‘নীলচক্র’ ছাড়াও দেশে ও দেশের বাইরে কিছু কাজের কথা চলছে শুভর। দ্রুতই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসবে বলেও জানান এ অভিনেতা। ইত্তেফাক/এসএ