আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চীফ প্রসিকিউটরের পদে বর্তমানে রয়েছেন অতীতে যুদ্ধাপরাধীদের আইনজীবী হিসেবে পরিচিত তাজুল ইসলাম। এই নিয়োগকে ‘বিচার ব্যবস্থার প্রতি অবমাননা’ হিসেবে অভিহিত করে তাঁর অপসারণ দাবি করেছে বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন।
রবিবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনটি জানায়, জামায়াত নেতা এ টি এম আজাহারুল ইসলামের খালাস পাওয়া মামলায় প্রসিকিউশন টিমের ভূমিকা সন্দেহজনক। এতে বিচার প্রক্রিয়ার নিরপেক্ষতা নিয়ে জনমনে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।
ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি তামজিদ হায়দার লিখিত বক্তব্যে বলেন, “বর্তমান প্রসিকিউশন টিমে থাকা অনেক সদস্য অতীতে আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন। এটি সরাসরি স্বার্থের সংঘাত (কনফ্লিক্ট অব ইন্টারেস্ট)।”
তিনি বলেন, “৭১ ও ২৪-এর শহীদদের আত্মত্যাগকে উপেক্ষা করে যারা রাজাকারদের রক্ষা করতে চায়, তারা বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বের শত্রু।”
পরিবারের প্রতি হুমকি, হামলার অভিযোগ
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, আজাহারবিরোধী কর্মসূচির অংশ হিসেবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ও চট্টগ্রামে ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালানো হয়েছে।
ছাত্র ইউনিয়নের দাবি, এসব হামলার ধারাবাহিকতায় গত ৩০ মে সংগঠনের শীর্ষ তিন নেতার পরিবার হুমকির মুখে পড়েছে।
ভুক্তভোগীরা হলেন—ছাত্র ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক শিমুল কুম্ভকার, সহ-সভাপতি মনীষা ওয়াহিদ এবং স্কুল ছাত্র বিষয়ক সম্পাদক একরামুল হক জিহাদ।
তামজিদ বলেন, “এটি কেবল ব্যক্তি আক্রমণ নয়, এটি একটি গণতান্ত্রিক ছাত্র আন্দোলনকে দমন করার পরিকল্পিত প্রয়াস।”
তিনি আরও বলেন, “ফ্যাসিবাদী শাসনের সময় আমরা দেখেছি ভিন্নমত দমনে সাইবার হামলা, মব সন্ত্রাস ও শারীরিক আক্রমণ। এখন জামায়াত-শিবির সেই পথেই হাঁটছে।”
ছাত্রশিবির নিষিদ্ধসহ কয়েক দফা দাবি
সংবাদ সম্মেলনে আরও কিছু দাবি তুলে ধরেন ছাত্র ইউনিয়নের নেতারা।
তারা বলেন—
৯০’র গণ-অভ্যুত্থানের ঐকমত্য অনুযায়ী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্রশিবিরের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে;
৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্ন করতে হবে;
২০২৪ সালের গণ-অভ্যুত্থানে সংগঠিত হত্যাকাণ্ডের বিচার দ্রুত শেষ করতে হবে;
আজহারবিরোধী কর্মসূচিতে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করতে হবে;
এবং ছাত্র ইউনিয়নের তিন নেতার পরিবারকে হুমকি দেওয়া ব্যক্তিদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।
ছাত্র ইউনিয়নের দাবি, যুদ্ধাপরাধী আজাহারুল ইসলামের খালাস রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এতে বিচার বিভাগ ও প্রসিকিউশন টিমের নিরপেক্ষতা নিয়ে গভীর প্রশ্ন তোলে।