দেশটা তো এখন একটা ধুঁকতে থাকা মেশিন, আর স্টিয়ারিং-এ বসে আছে মোহাম্মদ ইউনুস নামের এক অনধিকারচর্চাকারী, যিনি বৈধতা, দায়িত্ববোধ বা দূরদর্শিতার ধারে-কাছে নেই। এই লোক আর তার নিযুক্ত অ-সরকার—যাদের কারও প্রতি জনগণের ম্যান্ডেট নেই—তারা দেশ চালাতে গিয়ে যা করছে, তাকে অব্যবস্থাপনা বলা অনেক বেশি শোভনীয় হয়ে যায়। গ্যাস নেই, বিদ্যুৎ নেই, ব্যাংকে টাকা নেই, বিনিয়োগ নেই, আর আছে শুধু অদ্ভুত সব হুকুম আর ঘন ঘন মুখরক্ষা করার চেষ্টা।
চন্দ্রার টাওয়েল টেক্সের করুণ হাল কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা না। এটা একটা প্রতীক, একটা আয়না যেখানে বর্তমান ক্ষমতাকাঠামোর অযোগ্যতা স্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হচ্ছে। একটা রপ্তানিমুখী শিল্প গ্যাস পাচ্ছে না—এমন পরিস্থিতিতে কীভাবে রপ্তানি বাড়বে? পাঁচ শতাধিক শ্রমিকের ভবিষ্যৎ একটা সিদ্ধান্তহীন, জবাবদিহিহীন গোষ্ঠীর হাতের খেলনা হয়ে আছে। বিদ্যুৎ দিয়ে টিকে থাকার চেষ্টা? সেটা তো এখন লোডশেডিংয়ের আরেক নাম। আর এই ব্যর্থতা ঢাকতে গিয়ে ইউনুস-নেতৃত্বাধীন অ-সরকার যা করছে, সেটা হচ্ছে গল্প বানানো—ব্যাংক তারল্য সংকটে নেই, গ্যাস সরবরাহ নাকি ঠিক আছে! কে বিশ্বাস করে এসব?
এই সরকারজীবী গোষ্ঠী ভুলে গেছে যে, অর্থনীতি ফটোসেশনের জায়গা না। এখানে নীতি লাগে, বাস্তবতা বোঝার ক্ষমতা লাগে। একদিকে গ্যাস-পানি ছাড়া মিল-কারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, অন্যদিকে মুখে ফেনা তুলে উন্নয়নগাঁথা পড়া হচ্ছে। ফলাফল? বিনিয়োগে ধস, কর্মসংস্থান শূন্যের কোঠায়, মানুষ চাকরি হারাচ্ছে আর বিদেশিরাও ঘুরেও তাকাচ্ছে না। এলসির সংখ্যা কমেছে, আমদানি কমেছে, রপ্তানি ঠেকেছে—এই সবকিছুর মাঝে তথাকথিত সরকারের কোনো উদ্বেগ নেই। আছে কেবল কীভাবে ক্ষমতা আঁকড়ে ধরা যায়, তার কৌশল।
বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান নিশ্চিন্তে বলছেন, বিনিয়োগ রাতারাতি আসে না। ঠিক আছে, রাতারাতি আসে না, কিন্তু এদের শাসনকালে তো বছর কাটে বিনা সংস্কারেই! গ্যাস নেই, বিদ্যুৎ নেই, আইনের শাসন নেই—এই হিমশীতল বাস্তবতায় একজন বিদেশি বিনিয়োগকারী কেন আসবে? সে কি পাগল?
ব্যবসা মানে শুধু একটা ঘর বানিয়ে কাগজে-কলমে রেজিস্ট্রেশন না। এটা একটা বিশ্বাস, একটা স্থিতিশীল পরিবেশের প্রয়োজন। আর আজকের বাংলাদেশে সেই পরিবেশ শুধু অনুপস্থিত নয়, একদম চুরি হয়ে গেছে। ব্যাংকগুলো ঋণ দিতে চায় না, সুদহার আকাশছোঁয়া, রিজার্ভ ফোকলা, তারল্য সংকট পাকা, আর এসবের মাঝেও প্রতিদিন নতুন ‘বড় প্রকল্পের’ ঘোষণায় ফাইল চড়ে। এই তো ‘ইউনুস অর্থনীতি’—মূর্খতা আর জালিয়াতির সম্মিলন।
কিন্তু সবচেয়ে ভয়ংকর দিক হলো, এরা নিজেদের ভুল মানে না। শিল্পমালিকরা বলছে, গ্যাস না পেয়ে উৎপাদনের ৪০ শতাংশই বন্ধ—কিন্তু মন্ত্রণালয় বলছে, “না না, সব ঠিক আছে।” ব্যাংকার বলছে টাকা নেই, ঋণ মিলছে না—সরকার বলে, “সঙ্কট কেটে গেছে।” এই আত্মপ্রবঞ্চনার রাজনীতিতে সবচেয়ে বেশি মার খাচ্ছে সাধারণ মানুষ—যাদের হাতে নেই কাজ, পকেটে নেই টাকা, সামনে নেই ভরসা।
দেশ আজ ধীরে ধীরে গিলে খাচ্ছে একদল অপদার্থের ক্ষমতালোভ। তারা যে শুধু অযোগ্য তাই না, তারা নির্লজ্জও। এই পরিস্থিতি কার সৃষ্টি? এই অ-সরকারের! বিনিয়োগে ধস, রপ্তানিতে স্থবিরতা, নতুন কর্মসংস্থানের অনুপস্থিতি—এসব শুধু সংখ্যার হিসাব না, এগুলো মানুষের জীবনের গল্প। বেকার বেড়েছে দেড় লাখ, আর এই লোকেরা টেলিভিশনে দাঁড়িয়ে “আশা জাগানিয়া বাজেট” দিবে!
না, মোহাম্মদ ইউনুস এই দেশ চালাতে পারে না। তার নেতৃত্বে কোনো অর্থনৈতিক মুক্তি আসবে না। বরং এরা আছে বলেই আজ ব্যবসা মুখ থুবড়ে পড়েছে, বিনিয়োগকারী মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছে, আর সাধারণ মানুষ প্রতিদিন একটু একটু করে ক্ষয়ে যাচ্ছে। এটা কোনো সময়ের ঘাটতি না, এটা নেতৃত্বের দেউলিয়াপনা। বাংলাদেশের অর্থনীতিকে আজকের এই গভীর গর্তে ফেলার জন্য কেউ দায়ী হলে, সেটা মোহাম্মদ ইউনুস আর তার অ-সরকার।
এদের হাতে এই দেশ নিরাপদ নয়।