২০২৬ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচন এপ্রিল মাসের প্রথমার্ধে অনুষ্ঠিত হবে বলে জানিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। শুক্রবার সন্ধ্যায় জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি এ কথা জানান। তবে তাঁর এই ঘোষণায় রাজনৈতিক অঙ্গন ও সাধারণ মানুষের মধ্যে প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে—এই সময়সীমা কতটা বাস্তবসম্মত, কতটা প্রস্তুত নির্বাচন আয়োজনের প্রক্রিয়া?
ভাষণে অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘বিচার, সংস্কার ও নির্বাচন—এই তিনটি ম্যান্ডেটের ভিত্তিতেই তাঁরা দায়িত্ব পালন করছেন।’ তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন, রোজার ঈদের মধ্যেই বিচার ও সংস্কার কার্যক্রমে একটি গ্রহণযোগ্য পর্যায়ে পৌঁছানো সম্ভব হবে। তবে বাস্তবতা বলছে, এসব প্রক্রিয়া এখনো প্রাথমিক অবস্থায়ই রয়ে গেছে। বিশেষ করে, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার এবং সংস্কার কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে এখনো দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি।
তিনি আরও জানান, জুলাই মাসেই রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে একটি ‘জুলাই সনদ’ প্রণয়নের পরিকল্পনা রয়েছে, যেখানে সংস্কার-সংক্রান্ত কিছু বিষয়ে সম্মিলিত প্রতিশ্রুতি থাকবে। কিন্তু অতীত অভিজ্ঞতা বলছে, রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে পারস্পরিক অবিশ্বাস ও দ্বন্দ্বের প্রেক্ষাপটে এমন একটি ঐকমত্য অর্জন সহজ হবে না।
এছাড়া নির্বাচন কমিশন এখনো পর্যন্ত কোনো নির্দিষ্ট রোডম্যাপ বা কর্মপরিকল্পনা প্রকাশ করেনি। ফলে এপ্রিলের মধ্যে একটি গ্রহণযোগ্য, অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন কতটা সম্ভব—তা নিয়ে সংশয় থেকেই যাচ্ছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, সময়সীমা ঘোষণার আগে আরও বাস্তবভিত্তিক পরিকল্পনা, নির্বাচনী পরিবেশ তৈরি এবং রাজনৈতিক দলগুলোর কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা জরুরি ছিল। অন্যথায় এই ঘোষণাও আগের অনেক আশ্বাসের মতো বাস্তবায়নহীন প্রতিশ্রুতির তালিকায় ঢুকে যাবে।
সব মিলিয়ে অধ্যাপক ইউনূসের এই ঘোষণায় কিছুটা আশার আভাস থাকলেও, বাস্তব প্রস্তুতির অভাবে প্রশ্নই বেশি থেকে যাচ্ছে—নির্বাচন কি সময়মতো হবে, নাকি জনগণের সঙ্গে আরেকটি রাজনৈতিক ‘এপ্রিল ফুল’ খেলাই অপেক্ষা করছে?
(আওয়ামীলীগ পেইজ থেকে)