৯ জুন লন্ডন সফরে আসছেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তাঁর সফরকে সরকারি সফর হিসেবে ঘোষণা করেছে যুক্তরাজ্য। সফরে তিনি রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মর্যাদাপূর্ণ ‘কিংস চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড’ গ্রহণ করবেন। এছাড়াও দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করবেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে। বৈঠকে পাচার হওয়া অর্থ ফেরতে লন্ডনের সহায়তা চাইবে ঢাকা। তবে তার এ সফরকে ঘিরে লন্ডনে আওয়ামীলীগ ঘরানায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। তারা ইউনুসকে প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়েছেন। গত ২ জুন লন্ডনের একটি হলে কর্মী সমর্থক সমন্বয়ে বিশাল সভা করে এ ঘোষণা দেন তারা।এ নিয়ে প্রতিবাদী ব্যানার ফেস্টুন প্রস্তুত করা হচ্ছে। বিলেতের প্রবাসী বাঙালিদের প্রতিও জোরেসোরে ইউনুসকে প্রতিহত করার প্রতিবাদী কর্মসূচীতে অংশ নিতে সোস্যাল মিডিয়ায় ভিডিও, বিভিন্ন বার্তা ছড়িয়ে প্রচার করা হচ্ছে।
চার দিনের সফর শেষ করে ১৩ জুন ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবেন প্রধান উপদেষ্টা। ১৪ জুন সকালে তাঁর ঢাকা থাকার কথা রয়েছে। ১১ জুন লন্ডনের ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে ড. ইউনূসের শীর্ষ পর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে। বৈঠকে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, উন্নয়ন অংশীদারত্বসহ দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।
আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থের অন্যতম প্রধান গন্তব্য ছিল যুক্তরাজ্য। বৈঠকে পাচার হওয়া অর্থ ফেরতের বিষয়টিও আলোচনায় আসতে পারে। এ ছাড়া বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণসহ সংস্কার কার্যক্রমে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি যুক্তরাজ্যের রাজনৈতিক সমর্থনের বিষয়টি গুরুত্ব পাবে।
১২ জুন বাকিংহাম প্রাসাদে রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে দেখা করবেন ড. ইউনূস। ওইদিন বিকেলে সেন্ট জেমস প্রাসাদে রাজা তৃতীয় চার্লসের হাত থেকে কিংস চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড নেবেন তিনি। প্রধান উপদেষ্টা লন্ডন সফরের সময় ১১ জুন যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান চ্যাথাম হাউজ আয়োজিত এক সংলাপে অংশ নেবেন। ওই সংলাপের প্রতিপাদ্য ‘বাংলাদেশের ভবিষ্যতের পথে চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’।
যুক্তরাজ্যের দাতব্য প্রতিষ্ঠান কিংস ফাউন্ডেশন গত বছর কিংস চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড চালু করেছে। ২০২৪ সালে এই পুরস্কার পেয়েছিলেন জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন।
সফরের সঙ্গে জড়িত সরকারি একাধিক কর্মকর্তা বলেন, ড. ইউনূসের লন্ডন সফর ঘিরে বেশ আলোচনা শুরু হয়েছে। কারণ বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বর্তমানে সেখানে অবস্থান করছেন। সেখানে ড. ইউনূস ও তারেক রহমানের বৈঠকের সম্ভাবনা নিয়েও গুঞ্জন রয়েছে।
জানা গেছে, প্রধান উপদেষ্টার সফরে একটা ‘উইন্ডো’ রাখা হতে পারে, যদি তারেক রহমান চান তাহলে যাতে বৈঠক হয়।এদিকে ব্রিটিশ এমপি টিউলিফ সিদ্দিক ড. ইউনুসের সাথে সাক্ষাত চেয়ে একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। ইউনুস দেখা করবেন কিনা এ নিয়ে আলোচনা চলছে ব্রিটেনের বাঙালি পাড়ায়। টিউলিপ সিদ্দিক বাংলাদেশের দুদকের মিথ্যা মামলা বিষয়ে কথা বলতে চান প্রধান উপদেষ্টার সাথে। ইত্তেফাক/এমএএম