গত সপ্তাহে ইরানের পারমাণবিক অবকাঠামো ও সামরিক লক্ষ্যবস্তুতে ইসরায়েলি হামলা শুরুর পর থেকে একের পর এক বক্তব্য দিয়ে আসছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটির অধিপতি প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মনের মতো মার্কিন প্রশাসনের স্পষ্ট অবস্থান বুঝতে পারাও যেন অনেকটা রহস্য উন্মোচনের খেলা হয়ে উঠেছে। সংঘাতের পরই প্রকাশিত এক বিবৃতিতে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইরানের বিরুদ্ধে হামলায় তাদের কোনও সংশ্লিষ্টতা নেই। মধ্যপ্রাচ্যে মার্কিন বাহিনীর সুরক্ষাই তাদের প্রধান লক্ষ্য।
এ বক্তব্যের মধ্য দিয়ে তাদের অন্যতম মিত্র ইসরায়েলের সঙ্গে ট্রাম্প প্রশাসনের কিছুটা দূরত্ব দেখানোর চেষ্টা করেন তিনি। বিবৃতিতে রুবিও স্পষ্ট বলেন, একতরফাভাবে ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল।
পরদিনই ইরানের পারমাণবিক চুক্তি নিয়ে হতাশা প্রকাশ করে নিজ মালিকানাধীন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে একটি স্ট্যাটাস দেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্প লিখেছেন, তেহরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে চুক্তি করতে তাদেরকে একের পর এক সুযোগ দেওয়া হয়েছে। তবে যুক্তরাষ্ট্র যত চেষ্টা চালাক না কেন, কোনও ভাবেই সেটা আর সম্ভব হয়ে ওঠেনি।
মাঝে কয়েকদিন শোনা যাচ্ছিল, ইরানে হামলার বিষয়ে এক পরিকল্পনায় অনুমোদন দিয়েছেন ট্রাম্প। এরমধ্যে একদিন ইরানের সর্বোচ্চ নেতাকে চাইলেই হত্যা করতে পারেন বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বুধবার (১৮ জুন) ইরানে হামলার বিষয়ে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি মন্তব্য করেন, চাইলে আমি হামলা করতেও পারি, আবার নাও পারি। যুদ্ধের মতো বিষয়ে যে কোনও মুহূর্তে পরিস্থিতি বদলে যেতে পারে। তাই, শেষ মুহূর্তের আগে আমি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব না। কেউ বলতে পারে না, আমি কী করব।
সর্বশেষ ১৯ জুন রাতে (যুক্তরাষ্ট্র সময়) ট্রাম্পের তরফ থেকে একটি ঘোষণা পাঠ করেন হোয়াইট হাউজের প্রেস সেক্রেটারি ক্যারোলিন লিয়াভিট। ট্রাম্প বলেছেন, শিগগিরই ইরানের সঙ্গে একটি সমঝোতা বৈঠকের সম্ভাবনা রয়েছে। ওই আলোচনার প্রেক্ষাপটে আগামী দু সপ্তাহের মধ্যে হামলা করার বিষয়ে আমি চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেব। শুক্রবার ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করতে যাচ্ছেন ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং জার্মানির পররাষ্ট্র বিষয়ক শীর্ষ কর্মকর্তারা।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যের এই ভয়াবহ সংকট যা অনিয়ন্ত্রিত আঞ্চলিক উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে, সেটা থামানোর সময় হয়েছে। তথ্যসূত্র: বিবিসি ও রয়টার্স
