বাংলাদেশ আজ এক চরম রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক সংকটের মুখোমুখি। যেখানে রাষ্ট্রীয় কাঠামো, সংবিধান ও জাতির অস্তিত্ব হুমকির সম্মুখীন, সেখানে একটি চিহ্নিত গোষ্ঠী ড. ইউনুসের নেতৃত্বে কিছু তথাকথিত উপদেষ্টার ছত্রছায়ায় “জুলাই সনদ” নামক একটি চক্রান্তের ছলে দেশের সার্বভৌম সংবিধান বাতিল করে নতুন একটি সরকারব্যবস্থা চাপিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টায় মেতে উঠেছে। লক্ষ্য একটাই গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রকে ভেঙে, জনগণের অধিকার কেড়ে নিয়ে এক দমনমূলক, জঙ্গিবাদনির্ভর শাসন কায়েম করা।
২০০ জন এনসিপি নেতা, ছাত্র অধিকার পরিষদ, জামাতপন্থী ও তাদের আন্তর্জাতিক মদদপুষ্ট গোষ্ঠী এই মহল আজ বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে ছিনিমিনি খেলছে।
নিজেদের অপরাধ, দুর্নীতি ও ক্ষমতালিপ্সা আড়াল করতে তারা একটি বিপ্লবী সরকারের ছদ্মনামে রাষ্ট্রের মূল ভিত্তিই ধ্বংস করতে চায়।
সবচেয়ে ভয়ংকর চিত্র হলো, তারা দেশের সংবিধান স্থগিত করে নতুন সংবিধান প্রণয়নের কাজ শুরু করেছে। বাংলাদেশের সংবিধান শুধু একটি দলিল নয়, এটি মুক্তিযুদ্ধের আত্মত্যাগ, গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের প্রতীক। এই সংবিধানই বারবার আমাদের রক্ষা করেছে সামরিক শাসন, ষড়যন্ত্র ও সংকটের মুহূর্তে। অথচ আজ, এক যুগান্তকারী বিশ্বাসঘাতকতায় তাকে বাতিল করার পাঁয়তারা চলছে।
এই বিপ্লবী চক্রের পরবর্তী টার্গেট দেশের নিরাপত্তা বাহিনী। পরিকল্পনা হচ্ছে সেনাবাহিনী ও পুলিশ বাহিনী ভেঙে, জঙ্গি প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত নিজস্ব অনুগত বাহিনী গঠন করা। আজ যদি আমাদের আইনশৃঙ্খলা বাহিনী নির্লিপ্ত থাকে, মাথানত করে, তাহলে আফগানিস্তানের মতো ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে, যেখানে তালেবানদের মতো জঙ্গিরাই হবে রাষ্ট্রের নিরাপত্তার নিয়ন্ত্রক। তখন আর “দেশপ্রেমিক বাহিনী” বলার সুযোগ থাকবে না ভবিষ্যৎ প্রজন্ম তাদের বিচার করবে চুপ থাকার অপরাধে।
আমাদের সশস্ত্র বাহিনী জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে আন্তর্জাতিক মর্যাদায় সমুজ্জ্বল। কিন্তু যদি রাষ্ট্রের শৃঙ্খলা ভেঙে পড়ে, সংবিধান বিলুপ্ত হয়, তাহলে সেই মর্যাদাও থাকবে না। বিদেশের চোখে এই বাহিনীর বিশ্বাসযোগ্যতা হারাবে।
এই মুহূর্তে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের প্রস্তুত হতে হবে। যাঁরা দেশ গড়েছেন, তাঁদের হাতেই এখন দায়িত্ব রাষ্ট্রকে রক্ষা করার। যদি তারা এখনো চুপ থাকে, চোখের সামনে রাষ্ট্র ধ্বংস হয়ে যায়, তবে তারাও ইতিহাসে বিশ্বাসঘাতক হিসেবে চিহ্নিত হবেন।
এখনই সময় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার, প্রতিরোধ গড়ার, আওয়াজ তোলার।
জুলাই সনদ নয় জনগণের রক্তে লেখা সংবিধানই আমাদের গর্ব।
বিপ্লবের নামে রাষ্ট্র ধ্বংস, বাহিনী ভাঙা, সংবিধান বাতিল, গণতন্ত্র হত্যার এই ষড়যন্ত্র রুখে দিতে হবে জনগণ ও দেশপ্রেমিক শক্তিকে সঙ্গে নিয়ে।
এই রাষ্ট্র আমাদের, এই স্বাধীনতা আমাদের কিছু আত্মমোহে বিভ্রান্ত ষড়যন্ত্রকারীর হাতে তা ছিনিয়ে যেতে দেওয়া যাবে না।
সংবিধান বাঁচাও, দেশ বাঁচাও।( আওয়ামী লীগ থেকে)