জঙ্গিবাদে জড়িত থাকার অভিযোগে সম্প্রতি রয়্যাল মালয়েশিয়া পুলিশ একদল বাংলদেশিকে আটক করে। তারা সিরিয়া ও বাংলাদেশে ইসলামিক স্টেট (আইএস)-এর জন্য অর্থ সংগ্রহ ও সদস্য নিয়োগে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিল।
শুক্রবার এক ঘোষণায় এ তথ্য জানিয়েছেন দেশটির পুলিশের মহাপরিদর্শক তান স্রি মোহদ খালিদ ইসমাইল।
সংবাদ সম্মেলনে পুলিশের মহাপরিদর্শক জানান, চলতি বছরের এপ্রিল থেকে পরিচালিত বিভিন্ন অভিযানে কর্তৃপক্ষ মোট ৩৬ জন বাংলাদেশি নাগরিককে আটক করা হয়েছে।
মালয়েশিয়ার সংবাদ মাধ্যম দ্য সান জানায়, আটক দলটি প্রতি সদস্যের কাছ থেকে বছরে ৫০০ মালয়েশিয়ান রিঙ্গিত সদস্য ফি আদায় করত। পাশাপাশি সদস্যদের থেকে সামর্থ্য অনুযায়ী অনুদানও নিত।
প্রাথমিক তদন্তে জানা গেছে, এই দলের সদস্য সংখ্যা ছিল ১০০ থেকে ১৫০ জনের মতো। তারা সবাই মালয়েশিয়ার বিভিন্ন শ্রমনির্ভর খাতে—যেমন কারখানা, নির্মাণ এলাকা এবং পেট্রোল পাম্পে—কর্মরত বাংলাদেশি নাগরিক।
পুলিশ প্রধান খালিদ এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘সংগ্রহ করা অর্থ ই-ওয়ালেট অ্যাপস ও আন্তর্জাতিক মানি ট্রান্সফার সেবার মাধ্যমে বিদেশে পাঠানো হতো।’
জানা গেছে, এই দলটি হোয়াটসঅ্যাপ ও টেলিগ্রামের মতো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও মেসেজিং অ্যাপ ব্যবহার করে নতুন সদস্য নিয়োগ করত।
মালয়েশিয়া কর্তৃপক্ষ আর্থিক লেনদেনের মাধ্যম শনাক্ত করতে এবং এই জঙ্গি গোষ্ঠীর বাকি নেটওয়ার্কগুলো ভেঙে দেওয়ার জোরালো প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মুসলিম-সংখ্যাগরিষ্ঠ মালয়েশিয়া ২০১৬ সালে রাজধানী কুয়ালালামপুরে ইসলামিক স্টেট সংশ্লিষ্ট একটি হামলার পর সন্ত্রাসবাদী কর্মকাণ্ডে সন্দেহভাজন শত শত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করেছিল। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আঞ্চলিক অভিযানের ফলে এসব গ্রেপ্তারের সংখ্যা কমে এসেছে।
কারখানা, খামার ও নির্মাণখাতে বিদেশি শ্রমিকের ওপর নির্ভরশীল মালয়েশিয়ায় প্রতিবছর হাজার হাজার বাংলাদেশি শ্রমিক কর্মসংস্থানের জন্য পাড়ি জমান।
আটকদের মধ্যে পাঁচজনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী সংগঠনের সদস্য হওয়ার অভিযোগে মামলা করা হয়েছে। ১৫ জনকে নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে। বাকি ১৬ জন পুলিশের হেফাজতে রয়েছে এবং তাদের বিষয়ে আরও তদন্ত চলছে। পাশাপাশি আরও গ্রেপ্তারের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান এই পুলিশ কর্মকর্তা।
তিনি আরও বলেন, যাদের সম্পৃক্ততা কম, তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠানো হবে। আর যাদের সম্পৃক্ততা বেশি, তাদের মালয়েশিয়ার আইন অনুযায়ী শাস্তি দেওয়া হবে।