২০২৪ সালের জুলাই আন্দোলন আজ ইতিহাসের এক রক্তাক্ত অধ্যায়। গণআন্দোলনের নামে যে বিভীষিকাময় সহিংসতা সংঘটিত হয়েছিল, তার চেহারা আজ আর অস্পষ্ট নয় এটি ছিল একটি পরিকল্পিত, সহিংস ও রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্র। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে শত শত মানুষ আহত হয়েছিল এবং বেশিরভাগই আহত হয়েছিল গুলতির মার্বেল ও সিসা-বল ছোড়ার মাধ্যমে। রাস্তায় চলা সাধারণ মানুষ, সাংবাদিক, পথচারী কেউ রেহাই পায়নি এই পৈশাচিক সহিংসতা থেকে।
এই সহিংসতা কোনো স্বতঃস্ফূর্ত জনরোষ ছিল না। বরং ছিল সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার বাস্তবায়ন। আন্দোলন যাতে আন্তর্জাতিক মিডিয়া ও মানবাধিকার মহলের দৃষ্টি কাড়ে, সেই উদ্দেশ্যে আহতের সংখ্যা বাড়াতে বাসের ছাদে, ভবনের ওপর, এমনকি গলির মুখে বসানো হয়েছিল গুলতি-যন্ত্র। হাজার হাজার মার্বেল, সিসা-বল এবং বাশেঁর তৈরি গুলতি ব্যবহৃত হয়েছিল, যা শিশুদের খেলনা নয়, ছিল সাধারণ মানুষ হত্যার অস্ত্র।
একজন বিএনপি-ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী গর্ব করে স্বীকার করেছিলেন, তিনি এই আন্দোলনের জন্য হাজার হাজার মার্বেল সরবরাহ করেছিলেন। উদ্দেশ্য ছিল, জনগণকে আহত করে আন্দোলনে নাটকীয়তা আনা, পুলিশকে উত্তেজিত করে পরিস্থিতি বিশৃঙ্খল করা এবং সুযোগ নিয়ে রাষ্ট্রযন্ত্র দখলের পথ প্রশস্ত করা।
প্রশ্ন জাগে এটি কি আদৌ গণআন্দোলন ছিল, না কি একটি সশস্ত্র অভ্যুত্থানের সূচনা? যারা পুলিশের ওপর গুলি চালিয়েছে, রাস্তার পাশে বোমা রেখে নিরীহ মানুষ হত্যা করেছে, তারা গণতন্ত্রের জন্য নয় তারা ক্ষমতার জন্য খুনে খেলায় নেমেছিল।
৫ আগস্টের ভয়াবহ হত্যাকাণ্ড, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ওপর হামলা, প্রশাসনিক ভবনে অগ্নিসংযোগ এবং গুরুত্বপূর্ণ সড়ক দখল করার পেছনে ছিল রাষ্ট্র পতনের সুস্পষ্ট চক্রান্ত। অথচ সেই অপরাধের বিচার হয়নি। বরং সেই অপরাধীরাই আজ গলা উঁচু করে রাষ্ট্র চালাচ্ছে। এটা কি বিচারহীনতার সবচেয়ে বড় প্রমাণ নয়?
রাষ্ট্র যখন অপরাধীদের হাতে নিজেকে তুলে দেয়, তখন বুঝতে হয় গণতন্ত্র মুখে আছে, বাস্তবে নেই। ষড়যন্ত্রকারীরা যখন সংসদের আসনে বসে রাষ্ট্র পরিচালনা করে, তখন স্পষ্ট হয়ে যায় গণতন্ত্র নয়, পেছনের দরজার ষড়যন্ত্রই বাস্তবতা।
এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে আর কোনো ভোট, নির্বাচন বা আন্দোলনের প্রয়োজন হবে না। দরকার হবে কেবল মার্বেল, গুলতি, আর কিছু অবৈধ অস্ত্র আর সেই সহিংসতাকে আড়াল করার মতো কিছু নীরব মদতদাতা।(আওয়ামীলীগ পেইজ থেকে)