।।কবির য়াহমদ।।
মিটফোর্ডে উ-ন্মত্তাকে রাজনৈতিক রঙ দেওয়ার দরকার নাই। মানুষ হ-ত্যা জায়েজ করা হয়েছে গত ১১ মাসে। তোফাজ্জলের মৃ-ত্যু এরচেয়েও হৃদয়স্পর্শী ছিল। একটা ছেলেকে ভাত খাইয়ে মার, এরপর আবার খাইয়ে আবার মার, এবং শেষ পর্যন্ত মৃ-ত্যু নিশ্চিত করে তবেই ছাড়। বীভৎসতার মাত্রা কোথায়; ভাবা যায়! তবে মবের দোর্দণ্ড প্রতাপের সময়ে অপরাপর মবে ভেসে গেছে সেই তোফাজ্জল।
রাজনীতির নামে মানুষ হ-ত্যা ডালভাত এবং এটা সমর্থন করাও যায়, এমনটা আমরা দেখে আসছি প্রায় এক বছর ধরে। আশার কথা মিটফোর্ড তাদের বিবেকের দুয়ারে কড়া নেড়ে সভ্য হওয়ার বার্তা দিচ্ছে। তবু অসভ্যরা সভ্য হবে না; যাদের শিকার হিসেবে নির্ধারণ করেছে তারা, তাদের বধ করে ফের উন্মত্ত আর বীভৎস উল্লাসে মাতবে।
মিটফোর্ডের মৃ-ত্যুর দায় বিএনপির দিকে ঠেলে দেওয়া হয়েছে। অথচ বিএনপির দলীয় সিদ্ধান্ত এটা ছিল না। এটা তাদের রাজনৈতিক কর্মসূচিও নয়। এধরনের বেশিরভাগ ঘটনা, যেখানে বিএনপির দূরতম সংযোগ আছে, সেখানে দলটিকে একেবারে নাস্তানাবুদ করে দেওয়া হচ্ছে। আওয়ামী লীগের আমলে এভাবে আমরা দেখতাম ছাত্রলীগের দূরতম সংযোগ থাকলে যেভাবে দেখা হতো, এখন সেভাবে বিএনপিকে দেখা হচ্ছে।
লাল চাঁদ মিয়া ওরফে সোহাগ হ-ত্যায় বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে সম্পর্কিত কেউ জড়িত থাকতে পারে। যেখানে দেশের অন্তত পঁচাত্তর থেকে আশি ভাগ লোক কোনো না কোনোভাবে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত, সেখানে এইধরনের যোগকে দলীয় দায় দেওয়া হচ্ছে সাধারণীকরণ। এই সাধারণীকরণে আগে শিকার হয়েছে আওয়ামী লীগ, এখন হচ্ছে বিএনপি।
তবে নিশ্চিত ওসবে দল জড়িত নয়।
লাল চাঁদ মিয়া ওরফে সোহাগ হ-ত্যার সঙ্গে অনেকে বিশ্বজিৎকে মেলাচ্ছেন, আবরার ফাহাদকে মেলাচ্ছেন। এত দূরে যাচ্ছেন কেন, যেখানে নিকট অতীত এবং ঘটমান বর্তমান জ্বলজ্বলে আমাদের। মবকে প্রশ্রয় দিয়ে মানুষের জীবনকে তুচ্ছ করেছেন আপনারা যারা, এই দায় তাদের।
মব দিয়ে ভাঙচুর, লুটপাট, অশ্রদ্ধা, সামাজিক রীতিনীতি, শিষ্টাচার, শৃঙ্খলার সব নাস্তানাবুদ করে, বাংলাদেশকে খাঁদের কিনারে ঠেলে দিয়ে, এখন লাল চাঁদ মিয়া ওরফে সোহাগকে নিয়ে মায়াকান্না মানায় না আপনাদের কারো। এখানে লাল চাঁদ মিয়া বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, এটা ধারাবাহিকতা কেবল।
দেশকে এই অবস্থায় নিয়ে যাওয়ার কারণ খুঁজুন। ‘সুপিরিয়র রেসপনসেবলিটি’ কার এখানে?
লাল চাঁদ মিয়া ওরফে সোহাগকে রাষ্ট্রীয় পদক আবার দিতে যাইয়েন না! তার পরিবারকে ক্ষতিপূরণে আর্থিক সহায়তা দিন। বিচারের নৈতিক অবস্থান নাই আপনাদের ইন্তেরিম; নির্বাচিত সরকার এলে শৃঙ্খলায় ফেরা বিচারিক ব্যবস্থায় তবেই হবে এর বিচার।