মোহাম্মদ ইউনূস ও তার দলবল বাংলাদেশের রাজনীতিতে যে অস্থায়ী সরকার নামের নাটক মঞ্চস্থ করছে, তা কোনো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া নয়, বরং একটি সুপরিকল্পিত ক্ষমতা দখলে রাখার ষড়যন্ত্র। এই সরকারের কোনো সাংবিধানিক ভিত্তি নেই, নেই জনগণের সমর্থন। সংবিধান লঙ্ঘন করে, সংসদ ভেঙে, তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন না দিয়ে তারা যে অবৈধ শাসন ব্যবস্থা চালু করেছে, তা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। প্রধান উপদেষ্টা ও তার সহযোগীরা মন্ত্রীদের মতো ক্ষমতা প্রয়োগ করছেন, কিন্তু তাদের এই ক্ষমতার উৎস কী? কোন আইনে তারা এই অধিকার পেয়েছেন? এই প্রশ্নগুলোর কোনো জবাব তাদের কাছে নেই।
ইউনূস সরকারের সবচেয়ে বড় কৌশল হলো সময়ক্ষেপণ করা। তারা বিএনপি ও অন্যান্য দলকে ফেব্রুয়ারিতে নির্বাচনের কথা বলে শান্ত রাখার চেষ্টা করছে, কিন্তু বাস্তবে নির্বাচনের কোনো প্রস্তুতি নেই। নির্বাচন কমিশনকে প্রস্তুতির নির্দেশ দেওয়া হলেও, কোনো সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করা হয়নি। ইউনূস ইতিমধ্যেই শর্ত জুড়ে দিয়েছেন যে সংস্কার শেষ হলে নির্বাচন হবে। কিন্তু এই সংস্কার কে নির্ধারণ করবে? ইউনূস নিজেই। অর্থাৎ, তিনি চাইলে যেকোনো সময় বলতে পারেন যে সংস্কার শেষ হয়নি, তাই নির্বাচন হবে না। এটি স্পষ্টতই একটি প্রতারণা।
বিএনপিকে নিয়ে ইউনূস সরকার যে খেলা খেলছে, তা খুবই স্পষ্ট। তারা বিএনপিকে এক ধরনের “বিস্কুট দৌড়ে” ব্যস্ত রেখেছে। একদিন নির্বাচনের আশ্বাস দিয়ে পরদিন চুপ থাকে। বিএনপি যদি রাস্তায় নামে, তাহলে তাদের দমন করা হবে। আর যদি শান্ত থাকে, তাহলে সময়ক্ষেপণ চলতে থাকবে। এই কৌশলের উদ্দেশ্য একটাই—বিএনপিকে দুর্বল করে ফেলা এবং একটি নিয়ন্ত্রিত নির্বাচনের মঞ্চ তৈরি করা। বিএনপির নেতৃত্ব যদি এই খেলা বুঝতে না পারে, তাহলে তারা শুধু নিজেরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না, পুরো দেশকে একটি অন্ধকারের দিকে ঠেলে দেবে।
জামায়াত ও এনসিপির মতো দলগুলো ইউনূস সরকারের লুঙির নিচে আশ্রয় নিয়ে নিজেদের স্বার্থ হাসিল করার চেষ্টা করছে। তারা মৌলিক সংস্কার, জুলাই সনদ, পিআর পদ্ধতির নির্বাচনের নামে সময় নষ্ট করছে, কিন্তু তাদের আসল উদ্দেশ্য হলো বিএনপিকে কোণঠাসা করা। জামায়াতের সমাবেশে বিএনপিকে আমন্ত্রণ না জানানোই প্রমাণ করে যে তারা ইউনূসের এজেন্ডাকে এগিয়ে নিতে চায়।
ইউনূস সরকার যদি সত্যিই নির্বাচন দিতে চায়, তাহলে তাদের এখনই একটি স্পষ্ট এক্সিট প্ল্যান ঘোষণা করা উচিত। কিন্তু তাদের লক্ষ্য সম্পূর্ণ ভিন্ন। তারা চায় দায়মুক্তি আইন পাস করে নিজেদের সব অবৈধ কাজকে বৈধতা দেওয়া, বিএনপিকে দুর্বল করে একটি নিয়ন্ত্রিত নির্বাচনের মঞ্চ তৈরি করা এবং ইউনূস-পন্থী রাজনৈতিক শক্তিকে প্রতিষ্ঠা করে দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব রাখা।
এই সরকারের পতন অনিবার্য। এটি একটি অস্থায়ী, অগণতান্ত্রিক, বৈধতাহীন ব্যবস্থা। কিন্তু সমস্যা হলো, এই সরকারের পতন যত দেরি হবে, দেশের ক্ষতি তত বাড়বে। বিএনপি ও অন্যান্য দল যদি এখনই সচেতন না হয়, তাহলে তারা শুধু নিজেদেরই নয়, পুরো জাতিকে একটি ভয়াবহ সংকটে ফেলবে।(আওয়ামীলীগ পেইজ থেকে সংগৃহীত)