আমেরিকা ও রাশিয়া একে অপরের বিরুদ্ধে পরমাণু যুদ্ধ ঘোষণার মেজাজে। সম্প্রতি দু’টি মার্কিন পারমাণবিক সাবমেরিনকে রুশ জলসীমার কাছে মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্প। এবার পালটা আমেরিকার সঙ্গে স্বল্প ও মাঝারি পাল্লার পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েনের নিষেধাজ্ঞা মানবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে রাশিয়া।
রাশিয়ার বিদেশ মন্ত্রক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, সোভিয়েত যুগের চুক্তির প্রতি বাধ্যতামূলক শর্তগুলো বর্তমানে আর নেই। মস্কো আর পূর্ববর্তী বিধিনিষেধগুলো মানতে বাধ্য নয়। পাশ্চাত্যের দেশগুলোই ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তি অস্থিরতা তৈরি করছে। যা রাশিয়ার নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকির। এই অবস্থায় আমেরিকার সঙ্গে পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হল। একাধিক পথে ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধের জন্য মস্কোর ওপর চাপ সৃষ্টি করছেন ট্রাম্প। একদিকে যেমন ভারতসহ রাশিয়ার বাণিজ্যবন্ধু রাষ্ট্রগুলোকে বাড়তি শুল্ক চাপানোর হুমকি দিয়েছেন, তেমনই সাবেক প্রেসিডেন্ট দিমিত্র মেদভেদেভের যুদ্ধবিষয়ক মন্তব্যের পর দু’টি মার্কিন পারমাণবিক সাবমেরিনকে রুশ জলসীমার কাছে ‘উপযুক্ত অঞ্চলে’ মোতায়েনের নির্দেশ দেন। এরই পালটা এলো মস্কোর তরফ থেকে।
রাশিয়ার দাবি, পাশ্চাত্যের দেশগুলোই ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তি নিয়ে অস্থিরতা তৈরি করছে। যা রাশিয়ার নিরাপত্তার জন্য ঝুঁকির। এই অবস্থায় আমেরিকার সঙ্গে পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র চুক্তি (আইএনএফ) থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হল। রাশিয়া ও আমেরিকার মধ্যে ইন্টারমিডিয়েট-রেঞ্জ নিউক্লিয়ার ফোর্সেস (আইএনএফ) চুক্তি ১৯৮৭ সালে স্বাক্ষরিত হয়েছিল। তৎকালীন সোভিয়েত নেতা মিখাইল গর্বাচেভ ও মার্কিন প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগ্যান এই চুক্তির মাধ্যমে ৫০০ থেকে ৫ হাজার ৫০০ কিলোমিটার পাল্লার পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্র উৎপাদন করার বা পরীক্ষা করার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
চুক্তির অংশ হিসেবে উভয় পক্ষের ২,৬০০ টিরও বেশি ক্ষেপণাস্ত্র ধ্বংস করা হয়েছে, যা পারমাণবিক এবং প্রচলিত উভয় ধরনের ওয়ারহেডকেই অন্তর্ভুক্ত করে। এটি আকাশ থেকে নিক্ষেপিত বা সমুদ্র থেকে নিক্ষেপিত অস্ত্রের আওতায় পড়ে না। ‘কৌশলগত অস্ত্র হ্রাস চুক্তি’ নামে পরিচিত নতুন ‘স্ট্রাটেজিক আর্মস রিডাকশান ট্রিটি’ চুক্তিটি রাশিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে শেষ প্রধান অস্ত্র নিয়ন্ত্রণ চুক্তি। ২০১০ সালে স্বাক্ষরিত এই চুক্তিতে দুই দেশের মধ্যে কৌশলগত পারমাণবিক ওয়ারহেড মোতায়েনের সংখ্যা সীমিত করা হয়েছে। এটি ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারিতে কার্যকর হয়।