বাংলাদেশে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের ঘটনায় মৌলিক মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে জাতিসংঘে জরুরি আবেদন জানানো হয়েছে।
যুক্তরাজ্যের ডাউটি স্ট্রিট চেম্বার্সের আইনজীবী স্টিভেন পাউলস কিউসি ও অ্যালেক্স টিন্সলি আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনার পক্ষে এ আবেদন দাখিল করেছেন। তারা জাতিসংঘের গণতান্ত্রিক আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলা প্রসারে নিযুক্ত স্বাধীন বিশেষজ্ঞসহ একাধিক বিশেষ প্রতিবেদকের কাছে এ বিষয়ে হস্তক্ষেপের অনুরোধ জানিয়েছেন গতকাল ৮ই আগস্ট।
গত বছরের ৮ই আগস্ট ড. ইউনূস বাংলাদেশে ক্ষমতা গ্রহণ করে অন্তর্বর্তী সরকার গঠন করেন। ক্ষমতায় আসার পর থেকে আওয়ামী লীগ সমর্থক, দলীয় নেতাকর্মী এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর দেশব্যাপী হামলার ঘটনা ঘটছে। এসব হামলার কোনো বিচার তো হয়নি বরং ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার হামলাকারীদের রাষ্ট্রীয়ভাবে দায়মুক্তি দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করেছে।
অন্তর্বর্তী সরকার ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় নির্বাচন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে সেই প্রতিশ্রুতি আদৌ বাস্তবায়িত হবে কি না, তা অনিশ্চিত। এদিকে আওয়ামী লীগকে নির্বাচনে অযোগ্য ঘোষণা করে সব ধরনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। দলের শীর্ষ নেতাদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ তথাকথিত আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে চলমান মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত এই নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকবে বলে জানিয়েছে ইউনূসের অসাংবিধানিক সরকার।
জাতিসংঘে পাঠানো জরুরি আবেদনে বলা হয়েছে, আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ করা বাংলাদেশের আইনের শাসন ও গণতন্ত্রকে দুর্বল করেছে এবং এটি মৌলিক মানবাধিকার লঙ্ঘন।
আবেদনকারীরা জাতিসংঘের সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন—দ্রুত অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজন, আওয়ামী লীগের ওপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার এবং আসন্ন নির্বাচনে দলটির পূর্ণ অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রতি চাপ সৃষ্টির জন্য।
বিস্তারিত তথ্য এখানে
ডাউটি স্ট্রিট চেম্বার্স যুক্তরাজ্যের একটি প্রখ্যাত আইনি প্রতিষ্ঠান, যা মানবাধিকার, ফৌজদারি আইন, এবং আন্তর্জাতিক আইনের ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ। লন্ডনভিত্তিক এই চেম্বার্সটি বিশ্বব্যাপী মানবাধিকার লঙ্ঘন, গণতান্ত্রিক অধিকার, এবং ন্যায়বিচারের পক্ষে কাজ করে। স্টিভেন পাওলস কেসি এবং অ্যালেক্স টিনস্লির মতো বিশিষ্ট আইনজীবীদের মাধ্যমে এই প্রতিষ্ঠান আন্তর্জাতিক মঞ্চে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এই নিষেধাজ্ঞা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও গণতান্ত্রিক ভবিষ্যতের উপর কী প্রভাব ফেলবে, তা নিয়ে দেশি-বিদেশি মহলে আলোচনা চলছে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃষ্টি এখন জাতিসংঘের প্রতিক্রিয়া এবং অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের পরবর্তী পদক্ষেপের দিকে।