।।ইমতিয়াজ মাহমুদ।।
“বিস্ময়কর মুগ্ধতায় আমি এই সংখ্যাটির দিকে তাকিয়ে থাকি- ৩২ বা বত্রিশ নম্বর। বুনো অশ্বের চামড়ায় তৈরি কলম রাখার ছোট বাক্সটি থেকে প্রিয় ওয়াটারম্যানটা বের করে সাদা কাগজে বত্রিশ লিখে দেখি, এটা কি কেবলই একটা সংখ্যা! একত্রিশ আর তেত্রিশের মাঝখানে বসে থাকা অর্থহীন অংক? না। ভীত সন্ত্রস্ত একদল তস্করের চেহারা দেখি আমি, হাসি আসে। নোংরা অন্তর আতঙ্কে নীল হয় বত্রিশ উচ্চারণে।
আমাদের দেশের নোংরা ময়লা মন্দ মানুষগুলি যুগ যুগ ধরে ভয় পেয়েছে বত্রিশকে। এর আগে এক জেনারেল ক্ষমতা দখল করেছিল- বত্রিশ দেখলেই ওর কলজে শুকিয়ে যেতো। ওরা গোটা ধানমন্দির সকল নাম্বার পাল্টে দিয়েছে। সেই থেকে সরকারী খাতায় এখন আর বত্রিশ নম্বর নেই। কি বিস্ময়, বত্রিশ নাম্বার ঠিকই আছে এখনো।
ওখানে যেসব দালান কাঠামো ছিল, একদল তস্কর সব পুড়িয়ে দিয়েছে, ভেঙে দিয়েছে, গুড়িয়ে মিশিয়ে দিয়েছে মাটির সাথে। বত্রিশ নম্বর গেছে! হা হা হা। বত্রিশ নিয়ে ওদের ভয় যেন আরও বেড়ে গেছে। সেই শূন্য মৃত্তিকা ভূমি- ছোট্ট একটি ঘরের ঠিকানা- এক বিঘা জমি- সেটি যেন মিশে গেল বাংলার দিগন্ত বিস্তৃত ভূমির সাথে।
ভয়ে ওরা এখনো ঘিরে রাখছে বত্রিশ নম্বর- বোকাগুলি ঠিকই টের পায়, বত্রিশ এখন আর কেবল ঐ এক একবিঘা টুকরো মাত্র নয়। সবুজ ঘাসে ঢাকা ঐটুকু জমি যেন হয়ে গেছে পুরো বাংলাদেশ।
ক্রুশে বিদ্ধ যীশু বলেছিলেন, পিতা, ওদের ক্ষমা করে দাও, ওরা জানেনা ওরা কি করছে- “Father, forgive them, for they know not what they do,”- মানুষকে ভালোবেসে তিনি মানুষের সকল পাপ নিজে ধারণ করেছিলেন, উৎসর্গ করেছিলেন নিজের প্রাণ আমাদের মুক্তির নিমিত্তে। এটা বত্রিশের গল্প।”