হিমাচল প্রদেশের মান্দি জেলার দুর্গম পাহাড়ি গ্রামে সৃষ্টি হলো এক অভাবনীয় দৃষ্টান্ত। প্রবল বৃষ্টিপাত আর মেঘভাঙা দুর্যোগের মধ্যে আটকে পড়েছিলেন গর্ভবতী শিক্ষিকা ডঃ নেহা ঠাকুর। চারদিক থমকে যাওয়া সেই বিপর্যয়ের মাঝে শিক্ষিকার পাশে দাঁড়ালেন তাঁর ছাত্ররাই। নিজেদের জীবন বিপন্ন করে তাঁরা শিক্ষিকাকে ১১ কিলোমিটার কাঁধে তুলে পাহাড়ি পথ পেরিয়ে পৌঁছে দিলেন নিরাপদ আশ্রয়ে।
ঘটনাটি ঘটেছে হিমাচলের হর্টিকালচার অ্যান্ড ফরেস্ট্রি কলেজে। খবর অনুযায়ী, প্রবল বৃষ্টিতে রাস্তাঘাট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জরুরি চিকিৎসা পরিষেবা পৌঁছানো অসম্ভব হয়ে পড়ে। তখন ডঃ নেহা ও অপর গর্ভবতী শিক্ষিকা ডঃ সারিতার শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। আর তখনই তাঁদের ছাত্ররা সিদ্ধান্ত নেন, পরিস্থিতি যাই হোক শিক্ষিকাদের নিরাপদ স্থানে নিয়ে যেতে হবে।
কাঠ, কাপড় আর দড়ি দিয়ে তৈরি হয় অস্থায়ী বাহন। সেই বাহনে শিক্ষিকাদের বসিয়ে ছাত্ররা শুরু করেন ১১ কিলোমিটারের দুর্গম যাত্রা। পাথুরে পথ, জলপথ, ঝোপঝাড়, এমনকী পাহাড়ি ঢালও তাঁদের থামাতে পারেনি।
শেষ পর্যন্ত শিক্ষিকাদের পৌঁছে দেওয়া হয় কাছাকাছি হাসপাতাল-এ। ডঃ নেহা পরে এক সুস্থ পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। অন্যদিকে ডঃ সারিতাও নিরাপদে সন্তান প্রসব করেন। তাদের এই মানবিক উদ্যোগ আজ প্রশংসা কুড়িয়েছে সারা দেশজুড়ে।
শিক্ষিকাদের প্রতি ছাত্রদের এমন ভালোবাসা ও দায়িত্ববোধ সত্যিই বিরল। শিক্ষক-ছাত্র সম্পর্কের এক অনন্য নজির হিসেবে ইতিহাসে থেকে যাবে এই ঘটনা। আজ গোটা দেশ তাঁদের কুর্নিশ জানাচ্ছে।
[সংগৃহিত]