আরাকান আর্মি টানা তিন দিনে ৩৩ জন বাংলাদেশি জেলেকে ধরে নিয়ে গেছে। বন্দুকের মুখে অসহায় মানুষদের অপহরণ করা যেন এখন রুটিনে পরিণত হয়েছে। বঙ্গোপসাগর বা নাফ নদীতে মাছ ধরতে যাওয়া জেলেদের জীবন প্রতিদিন ঝুঁকির মুখে পড়ছে, অথচ জুলাই দাঙ্গায় ঝুলে যাওয়া রাষ্ট্র তাদের সুরক্ষা দিতে পারছে না। এই ভয়াবহ পরিস্থিতি শুধু সীমান্ত নিরাপত্তার ব্যর্থতা নয়, বরং বাংলাদেশের সার্বভৌমত্বকে প্রকাশ্যে চ্যালেঞ্জ জানানো। কিন্তু এই চ্যালেঞ্জের মুখে সরকার নামে যেটুকু আছে, সেটির অবস্থান একেবারেই লজ্জাজনক।
ইউনুসের অবৈধ দখলদার প্রশাসন আজকে রাষ্ট্রীয় দায়িত্বের জায়গায় দাঁড়িয়ে নতজানু পররাষ্ট্রনীতির নমুনা দেখাচ্ছে। আরাকান আর্মি যখন বাংলাদেশের সাগরে ঢুকে ট্রলার দখল করছে, জেলেদের ধরে নিয়ে যাচ্ছে, তখন এই অ-সরকার কেবল ঢাকায় বসে মুখে মুখে ‘আলোচনা’ আর ‘কূটনৈতিক প্রয়াসের’ বুলি আওড়াচ্ছে। বাস্তবে কোনো পদক্ষেপ নেই। কোনো শক্ত অবস্থান নেই। যেন দেশের নাগরিকদের জীবন নিয়ে তাদের কোনো দায়ই নেই। প্রকৃতপক্ষে এই নীরবতা হলো রাষ্ট্র পরিচালনায় তাদের নপুংসকতার নগ্ন প্রকাশ।
সবচেয়ে ভয়াবহ হলো, এনজিও সম্রাট ইউনুসের ক্ষমতায় আসার ইতিহাস। বিদেশি রাষ্ট্রের টাকায়, ইসলামিক জঙ্গি গোষ্ঠীর সহায়তায় আর সেনাবাহিনীর সমর্থনে গত জুলাইয়ের দাঙ্গা উসকে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করে সে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করেছে। ফলাফল হয়েছে ভয়ানক। আজ বিশ্বে বাংলাদেশকে আর সমকক্ষ রাষ্ট্র হিসেবে দেখা হয় না। আন্তর্জাতিক মহলে বাংলাদেশের কণ্ঠস্বর নেই, মর্যাদা নেই। বরং সবাই এখন এটিকে দেউলিয়া, অচল, ভৃত্যসুলভ একটি দেশ হিসেবেই ভাবে। এর সম্পূর্ণ দায় সুদি মহাজন ইউনুসের কাঁধে।
এই অবস্থার কারণে মিয়ানমারকে কিছু বলার মুরোদ নেই তার। নিজ দেশের সীমান্তে দস্যুতা চালানো আরাকান আর্মির বিরুদ্ধেও সে কিছু করতে পারে না। কারণ পুরো দক্ষিণাঞ্চল আসলে সে দিয়ে দিয়েছে আমেরিকার কাছে, যাতে তারা সামরিক ঘাঁটি বানাতে পারে। বিনিময়ে ইউনুস নিশ্চিত করেছে নিজের ক্ষমতার চেয়ার। দেশের সার্বভৌমত্ব বিক্রি করে, জনগণের জীবনকে অবহেলায় ফেলে, এই গরীবের রক্তচোষা সুদখোর তার ব্যক্তিগত ক্ষমতার স্বার্থই রক্ষা করছে।
আজ জেলেরা শুধু সাগরে নয়, রাষ্ট্র নামক কাঠামোর ভেতরেও বন্দি হয়ে গেছে। তারা জানে না, মাছ ধরতে গিয়ে ফিরতে পারবে কি না। অথচ যারা অবৈধভাবে ক্ষমতায় বসে আছে, তাদের কাছে এটা কোনো বিষয় নয়। দেশের মানুষ প্রতিদিন লাঞ্চিত হচ্ছে, অপহৃত হচ্ছে, মরছে – কিন্তু ইউনুস আর তার অ-সরকার বোবা বনে গেছে অনেক আগেই, যেদিন তারা বাংলাদেশের স্বাধীন সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাকে বিক্রি করে দিয়েছিল বিদেশি প্রভুদের হাতে।
বাংলাদেশ আজ এক ভয়াবহ পরাবাস্তবতার মধ্যে আছে। সাগরে জেলেরা নিরাপদ নয়, সীমান্তে নাগরিক নিরাপদ নয়, আর রাষ্ট্রের শীর্ষে যে ব্যক্তি বসে আছে সে কেবল নিজের টিকে থাকার দেনদরবার করছে। অসহায় মানুষদের ফিনকি দিয়ে ছোটা রক্ত, নাকখত দেয়া অপমান, নির্বিকার হত্যা আর অপহরণ – এটাই ইউনুসদের মোট অর্জন এই এক বছরে।