একাত্তরের যুদ্ধাপরাধী সংগঠন জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি এএইচএম হামিদুর রহমান আযাদ বলেছেন, জামায়াত বারবার দাবি করে আসছে অন্তর্বর্তী সরকারের ভেতরে এবং বাইরে আওয়ামী লীগের দোসররা ঘাপটি মেরে বসে আছে। গণঅধিকার পরিষদের নুরের ওপর হামলার মাধ্যমে জামায়াতের সেই দাবি প্রমাণিত হয়েছে। ফ্যাসিবাদ পুনবার্সনের ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে নুরকে টার্গেট করা হয়েছে।
নুরের ওপর হামলা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না উল্লেখ করে তিনি সিসিটিভি ফুটেজ এবং গণমাধ্যম কর্মীদের নেওয়া ভিডিও দেখে অনতিবিলম্বে হামলাকারীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনা এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানান অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে।
গণঅধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হকসহ দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে আজ ৩০শে আগস্ট, শনিবার দুপুরে যুদ্ধাপরাধী সংগঠন জামায়াতের ঢাকা মহানগরী দক্ষিণ শাখার উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিলের পর সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে হামিদুর রহমান এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি আওয়ামী লীগের শরিক ১৪ দলকেও নিষিদ্ধের দাবি জানান।
হামিদুর রহমান দাবি করেন, যে পদ্ধতির নির্বাচনে স্বাধীনতার ৫৪ বছরেও জনগণের সরকার গঠিত হয়নি, সেই পদ্ধতি জনগণ আর চায় না। আওয়ামী লীগের তৈরি আইনে নির্বাচন হলে আবারও ফ্যাসিবাদের উত্থান ঘটবে বলে দাবি করেন তিনি।
এসময় তিনি নিজেদের পছন্দের পিআর পদ্ধতিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবি করেন। এতে জনগণের সংসদ ও জনগণের সরকার গঠিত হবে বলে ধারণা তার।
যুদ্ধাপরাধী জামায়াতের এই নেতার দাবি, ৭১ শতাংশ জনগণ পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চায়।
কোনো একটি দলের আপত্তিকে অগ্রাধিকার দিয়ে পিআর পদ্ধতি মেনে না নিলে ইউনূস সরকারকে আর বিপ্লবী সরকার বলা যাবে না বলে মন্তব্য করেন তিনি।
তার মতে, ইউনূস সরকার যদি জনগণের ইচ্ছের বিরুদ্ধে যায় তবে রাজপথে এর ফয়সালা হবে।
সমাবেশে সভাপতির বক্তব্যে জামায়াত নেতা হেলাল উদ্দিন বলেন, যারা নুরের ওপর হামলা চালিয়েছে তারা ফ্যাসিবাদের দোসর। ঘটনাস্থলে ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগের অন্যতম সহযোগী জাপা চেয়ারম্যান জিএম কাদের থাকলেও তাকে কেন মারধর করা হলো না, কেন আটক না করে কেন পুলিশের প্রটোকলে নিরাপদে পালিয়ে যেতে সহযোগিতা করা হয়েছে তার জবাব দিতে হবে।
হেলাল উদ্দিন বলেন, আওয়ামী লীগের প্রতি যেসকল দল ও ব্যক্তি সহযোগিতা এবং সমথর্ন করেছে তারাও সমান অপরাধী।
আওয়ামী লীগের দোসর ১৪ দলীয় জোটকে নিষিদ্ধ করে ফ্যাসিবাদের আগ্রাসন চিরতরে বন্ধ করে তাদের প্রত্যেককে আইনের আওতায় আনতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
যুদ্ধাপরাধী সংগঠন জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী দক্ষিণের নায়েবে আমির অ্যাডভোকেট ড. হেলাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সহ-সেক্রেটারি আব্দুল হালিম বলেন, নুরের মত জুলাইযোদ্ধার ওপর হামলা হলে আমরা বসে থাকব না। তার ওপর রাষ্ট্রীয় বাহিনী হামলা চালানোর মধ্য দিয়ে ফ্যাসিস্ট আওয়ামী দোসরদের মুখোশ জনগণের সামনে উন্মোচন হয়ে গেছে। যারা এই ঘৃণ্য বর্বরোচিত হামলা চালিয়েছে তাদের অনতিবিলম্বে আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
আব্দুল হালিম আরও বলেন, ফ্যাসিবাদ বিভিন্নভাবে উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে। একাত্তরকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে ফ্যাসিবাদের পুনবার্সনের চেষ্টা করলে তা প্রতিহত করা হবে। মুক্তিযোদ্ধা পরিচয়ে আওয়ামী লীগের পুনর্বাসনের জন্য জুলাইযোদ্ধাদের পাশাপাশি পুরো জাতিকে গালাগালি করবেন, এটা মেনে নেবো না আমরা।
যুদ্ধাপরাধী জামায়াতের কেন্দ্রীয় মজলিসে শুরা সদস্য ও ঢাকা দক্ষিণের সহ-সেক্রেটারি দেলোয়ার হোসেনের পরিচালনায় বায়তুল মোকাররম মসজিদের উত্তর গেটে এই সমাবেশে বক্তব্য দেন সংগঠনটির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা।