ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের অধ্যাপক শেখ হাফিজুর রহমান কার্জন আদালতে দাঁড়িয়ে সংবিধান হাতে নিয়ে অভিযোগ করেছেন, তাদের সঙ্গে মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হয়েছে। এ সময় তিনি বিচারকের উদ্দেশ্যে সংবিধানের ধারা উল্লেখ করে নিজের বক্তব্য উপস্থাপন করেন।
২৯শে আগস্ট, শুক্রবার দুপুরে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সারাহ ফারজানা হকের আদালতে এ ঘটনা ঘটে। শাহবাগ থানার সন্ত্রাস বিরোধী আইনের মামলায় সাবেক মন্ত্রী আব্দুল লতিফ সিদ্দিকী ও অধ্যাপক কার্জনসহ ১৬ জনকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন আদালত।
সকালে সাড়ে ১০টার দিকে তাদের আদালতে হাজির করে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও শাহবাগ থানার উপপরিদর্শক তৌফিক হাসান আসামিদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন জানান। শুনানিতে রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর মো. শামসুদ্দোহা সুমনও একই আবেদন করেন।
শুনানির সময় কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে অধ্যাপক কার্জন বিচারকের উদ্দেশ্যে বলেন, “মাননীয় আদালত, আমাদের সঙ্গে মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন করা হয়েছে। সংবিধানের ৩৩ অনুচ্ছেদে যে অধিকার নিশ্চিত করার কথা, তা দেওয়া হয়নি। আমাদের আইনজীবী বেছে নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়নি। থানায় কোনো ফ্যান ছিল না, সাবানও পাইনি। সারারাত ঘুমাতে পারিনি। আমরা ভুক্তভোগী, অথচ আমাদের অপরাধী বানানো হয়েছে। এজন্য প্রতিকার চাই এবং ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করছি। পাশাপাশি এখনই জামিন প্রার্থনা করছি।”
তিনি আরও বলেন, “গতকাল সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবের ডিআরইউতে মুক্তিযুদ্ধ ও সংবিধান বিষয়ে একটি অনুষ্ঠানে আমি আলোচক হিসেবে অংশ নিই। সেখানে আহ্বায়ক ছিলেন জহিরুল হক পান্না, প্রধান অতিথি হওয়ার কথা ছিল ড. কামাল হোসেনের। অনুষ্ঠান চলাকালে সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে আমাদের তুলে দেয়। প্রকৃত অপরাধীরা ধরা না পড়ে আমরা উল্টো গ্রেপ্তার হয়েছি।”
শুনানি শেষে কারাগারে নেওয়ার সময়ও অধ্যাপক কার্জন আদালত প্রাঙ্গণে সংবিধান উঁচু করে ধরে বলেন, “এই সংবিধান ৩০ লাখ শহিদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত। এটাকে অবশ্যই রক্ষা করতে হবে।”
শুনানি শেষে আসামিপক্ষের আইনজীবী ফারজানা ইয়াসমিন রাখী সাংবাদিকদের জানান, “গ্রেপ্তারের পর লতিফ সিদ্দিকীসহ অন্যদের যেখানে রাখা হয়েছে, সেখানে ফ্যান পর্যন্ত ছিল না। ধুলোবালিতে তাদের রাখা হয়েছে, সঙ্গে অমানবিক আচরণ করা হয়েছে। সংবিধানের ৩৩ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী তাদের অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে। আদালতে অধ্যাপক কার্জন সেটিই তুলে ধরেছেন।”