বাংলাদেশের অর্থনীতি আজ ভয়ংকর এক সঙ্কটে নিমজ্জিত। এক বছরেরও কম সময়ে অবৈধ ড. ইউনুস সরকারের শাসন জাতীয় অর্থনীতিকে এমন এক গভীর অচলাবস্থায় ঠেলে দিয়েছে, যা থেকে উত্তরণের জন্য প্রয়োজন হবে দীর্ঘ সময় ও সুপরিকল্পিত সংস্কার। শাসকগোষ্ঠী আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগের পাহাড় গড়ছে, অথচ নিজেরা কোনো প্রমাণ উপস্থাপন করতে পারছে না। বাস্তবে অর্থনীতির চিত্রই প্রমাণ করছে তাদের অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি ও ধ্বংসযজ্ঞের নির্মম সত্য।
ইউনুস সরকারের উপদেষ্টারা আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ২৩৪ বিলিয়ন ডলার পাচারের অভিযোগ তুলেছে। অথচ এই অভিযোগের পক্ষে কোনো সুস্পষ্ট প্রমাণ হাজির করা যায়নি। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, এটি কেবল জনগণের দৃষ্টি ভিন্ন দিকে ঘোরানোর কৌশল। বাস্তবে, ইউনুস সরকারের আমলে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ রেকর্ড পরিমাণে কমেছে এবং বিদেশি ব্যাংকে অর্থ পাচারের অভিযোগ আরও স্পষ্টভাবে সামনে এসেছে।
কয়েকশ’ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি
অবৈধ সরকারের অব্যবস্থাপনা ও নীতিহীনতার কারণে দেশের অর্থনীতিতে কয়েকশ’ বিলিয়ন ডলারের ক্ষতি হয়েছে। এ ক্ষতি বিগত দুই দশকের অর্জনকে মুছে দিয়েছে। দুর্নীতি ও অদূরদর্শিতার কারণে আজ বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক সূচকে দুর্নীতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় শীর্ষ পাঁচে অবস্থান করছে।
সাধারণ মানুষের অর্থনীতি শুন্যতায়
অর্থনৈতিক বিপর্যয়ে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত সাধারণ মানুষ। দেশের প্রায় ৬০ ভাগ মানুষের অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে শুন্যতায় নেমেছে। দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন বৃদ্ধি, বেকারত্ব, বিনিয়োগ হ্রাস— সব মিলিয়ে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারগুলো চরম অনিশ্চয়তার মুখে পড়েছে।
২০২৫ সালে প্রায় ১৫ বিলিয়ন ডলার বিদেশি বিনিয়োগের সম্ভাবনা ছিল। কিন্তু অস্থিতিশীল পরিবেশ, অবৈধ শাসন ও জঙ্গীবাদের উত্থানের কারণে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা পিছু হটেছে। বিনিয়োগ হ্রাসের কারণে শিল্পখাতের প্রবৃদ্ধি থেমে গেছে, হাজার হাজার শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছে।
জঙ্গীবাদের উত্থান আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষয়
ড. ইউনুস সরকারের আমলে জঙ্গী সংগঠনগুলো নতুন করে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এ কারণে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই ক্ষতি শুধু অর্থের অঙ্কে পরিমাপ করা সম্ভব নয়, বরং দেশের দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়ন ও নিরাপত্তার জন্যও বিপজ্জনক।
দেশীয় শিল্পে ২০০ বিলিয়নের ক্ষতি
অভ্যন্তরীণ শিল্প খাতও ভয়াবহ সংকটে। অনুমান করা হচ্ছে, ক্ষতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে প্রায় ২০০ বিলিয়ন ডলার। উৎপাদন ব্যাহত, রপ্তানি হ্রাস এবং অগণিত শিল্প প্রতিষ্ঠান টিকে থাকার সংগ্রামে জর্জরিত।
অবৈধ শাসনের জবাবদিহিতা চাই
ড. ইউনুস সরকারের এক বছরের শাসন প্রমাণ করেছে, অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসে জনগণের কাছে কোনো জবাবদিহিতা ছাড়া শাসন করার পরিণতি কতটা ভয়াবহ হতে পারে। অর্থনীতির পতন, বিনিয়োগের ভাটা, জঙ্গীবাদের উত্থান এবং দুর্নীতির পাহাড়— সব মিলিয়ে বাংলাদেশ এক অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ধাবিত হচ্ছে।
বাংলাদেশের মানুষ যারা বারবার রক্ত দিয়ে গণতন্ত্র রক্ষা করেছে, তাদের দায়িত্ব আজ আবারও— অবৈধ শাসনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো। কেবল গণতন্ত্র, সুশাসন ও জবাবদিহিতার পথেই দেশকে এই ধ্বংসযজ্ঞ থেকে মুক্ত করা সম্ভব।