কাজী হালিমা আফরীন
বাংলাদেশের ইতিহাসে একটা নজিরবিহীন কাজ হচ্ছে অন্তত আমার জীবনে আমি কখনোই এমন কাজ হতে দেখিনি। হয়তো হলেও আমার জানা নেই। সেটা কী? পরে বলছি।
জাতিসংঘের ৮০ তম অধিবেশনে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তাঁর ২৩ তারিখে নিউইয়র্কে পৌঁছনোর কথা।
বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব তো তিনি গতবারও করেছিলেন বলে জানি।
২৩ তারিখ থেকে যারা ভাষণ দেবেন:
২৩ সেপ্টেম্বর বক্তব্য রাখবেন ব্রাজিলের প্রেসিডেন্ট লুইন ইনাফিউ লানা দ্যা সিলভা। এরপর বক্তব্য রাখবে স্বাগতিক দেশ যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
আগামী ২৬ সেপ্টেম্বর শুক্রবার বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূসের বক্তব্য রাখার কথা রয়েছে। একইদিন ভাষণ দেবেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ, চীনের প্রধানমন্ত্রী লি কিয়াং, ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
যারা যোগ দিচ্ছেন না:
১. রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন,
২.চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিং পিং
৩. ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী।
কারণ কী জানেন? এই তিনজন হলেন ট্রাম্পের চোখের শুল। শত্রুও বলা যায়। এই তিন নেতা চীনে একসঙ্গে হয়েছিলেন একজোট হয়ে আলাদা একটা শক্তি গঠনে। তাতে ট্রাম্প তো ক্ষেপেছেনই বরং তিনি বাড়ি বাড়ি গিয়ে সবাইকে কঠোর নিষেধাজ্ঞা দিয়ে আসতেছেন যে পুতিনের কাছ থেকে কেউ তেল কিনবা না।
মোদি পুতিনের কাছ থেকে তেল কিনেছিলেন বলে মোদিন ওপর 50% শুল্ক চাপাইয়া দিছিল।
এদিকে চীনের ওপর হুমকি দিয়ে রেখেছে যে তার ওপরে 50% থেকে বাড়াইয়া 100% শুল্ক বসিয়ে দিতে।
তো এই তিন নেতাকে ঐ মিটিংয়ে ট্রাম্প যেতে দেবেন না সেটা জলের মতো পরিস্কার ব্যাপার। তাতে এইসব নেতাদের কিছু যাবে-আসবে না।
উনি মানে ট্রাম্প কাকে নিয়ে মিটিং করতেছেন? সেই শয়তান। যে কিনা একটা দেশ ও দেশ সুদ্ধ মানুষকে মে*রে ফেলেছে। সেই শয়তানকে মিটিংয়ের মধ্যমণি করেছেন। সে আবার ভাষণও দেবানে।
আমি বলব এই জাতিসংঘের এক ফোঁটা দাম নেই। তাদের কোনো মতামতের গুরুত্ব নেই। না হলে আন্তর্জাতিক আদালতে যাকে ক্রি*মিনাল হিসেবে চিহ্নিত করেছে সেই শয়তানকে সাজিয়ে আগে এনেছে। আবার কতবার জাতিসংঘের মহাসচিব গা*জা জেনো*সাইড হচ্ছে বলে ঘোষণা দিল তাতে কী হয়েছে শয়তানের? নাথিং। কারণ, ইঁদুর বিড়াল খেলতেছে ট্রাম্প।
এদিকে বাংলাদেশের এক পত্রিকায় দেখলাম গা*জা দখল করতে না ট্রাম্প শয়তানের কাছে ৬৪০ কোটি ডলারের অ*স্ত্র বিক্রি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এটা হলো বড় শয়তান।
এদিকে ইউকের প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে সদ্য দেখা ও চুক্তি-টুক্তি করে ট্রাম্প বাড়ি ফিরেছেন। কিন্তু স্টারমার তো এক বালতি দুধে এক ফোঁটা ছাগলের চ্যানা মানে মূত্র ঢেলেছেন। তিনি আজকে ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছেন।
আবার কানাডার কার্নির সঙ্গে ট্রাম্পের শুল্ক যুদ্ধ অব্যাহত আছে। তবে কার্নি ভদ্র মার্জিত মানুষ। যা করেন মনে মনে করেন। তিনিও এক বালতি দুধে ছাগলের চ্যানা দিয়েছেন এক ফোঁটা। মানে তিনিও ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিয়েছেন। অস্ট্রেলিয়াও চ্যানা দিয়েছে।
কিন্তু বাস্তব অর্থে এক বালতি দুধে এক ফোঁটাও চ্যানা পড়লে সব দুধ চ্যানা হয়ে যায়। আর এখানে তার অপজিট। মানে ওসব স্বীকৃতি-ফিকৃতিতে কোনো কাজ হচ্ছে না। শুধু মানুষকে দেখানো হলো যে এই যে ধরো আমরা স্বীকৃতি দিয়ে মক্কার হুজুর হয়ে গেলাম।
তারপরেও একটু তো হলেও জুতার বাড়ি পড়ল ঐ দুই শয়তানের মুখে।
এদিকে বাংলাদেশের জন্য সেরা কাজ কোনটা হয়েছে?
সেটা হলো, “জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সফরসঙ্গী হচ্ছেন জামায়াতে ইসলামী এবং এনসিপির আরো দুই নেতা। তারা হলেন জামায়াত নেতা ড. নকিবুর রহমান তারেক এবং এনসিপির যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. তাসনিম জারা।
আজ রবিবার রাতে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন প্রধান উপদেষ্টা। তার সঙ্গে যাবেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা হুমায়ুন কবির, জামায়াতের নায়েবে আমির ডা. সৈয়দ আবদুল্লাহ মো. তাহের এবং এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেন”- কালের কণ্ঠ
এই যে বিভিন্ন দলের নেতাদের নিয়ে ড. ইউনূস বাহিনী করেছেন এটা একটা ভালো কাজ হয়েছে। রাজনৈতিক বিভাজনের চেয়ে একতা হোক। অতীতে এটা দেখা যায় নি কোনো সরকারের আমলেই।
যাই হোক, বিশ্ব এখন চরম বিকৃত রাজনৈতিক খেলায় মশগুল। এর থেকে ভালো মানুষের বেঁচে থাকার কোনো উপায় নেই। একমাত্র আল্লাহ সবকিছুর মালিক। তিনি একদিন সবকিছুর বিচার করবেন। কেউই বাঁচতে পারবে না নিকৃষ্ট কাজ করে।
লেখক: টরন্টো প্রবাসী, কানাডা।