বাংলাদেশের চাঁপাইনবাবগঞ্জে গতকাল, ১৪ সেপ্টেম্বর, ২৫ জন সনাতন ধর্মাবলম্বী ব্যক্তি আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীতে যোগদান করেছেন। এই যোগদানের ঘটনাটি শুধু একটি রাজনৈতিক দলপ্রবেশ নয়, বরং একটি পরিকল্পিত ধর্মান্তরিতকরণের অংশ—যা জামায়াতের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই তাদের মূল লক্ষ্য। জামায়াতের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য এবং সাবেক সংসদ সদস্য অধ্যাপক লতিফুর রহমান নিজেই স্বীকার করেছেন, এই যোগদান “দাওয়াতি কার্যক্রমের” ফল, যা ভবিষ্যতে আরও বিস্তৃত হবে। অর্থাৎ, এটা স্পষ্ট যে, জামায়াতের উদ্দেশ্য শুধু রাজনৈতিক সদস্য বৃদ্ধি নয়, বরং ধর্মান্তরিতকরণের মাধ্যমে বাংলাদেশের ধর্মীয় গড়ন বদলে দেওয়া।
জামায়াতের এই কার্যক্রম নতুন কিছু নয়। প্রতিষ্ঠাকাল থেকেই এই সংগঠনটি ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর চাপ সৃষ্টি করে আসছে, তাদেরকে ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত করার জন্য। জুলাই মাসের দাঙ্গার পর থেকে বাংলাদেশে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের অবস্থান আরও সংকটাপন্ন হয়ে পড়েছে। দাঙ্গার সময় সংখ্যালঘুদের বাড়িঘর, মন্দির, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান লক্ষ্য করে আক্রমণ করা হয়েছিল, তাদেরকে দেশ ছাড়ার হুমকি দেওয়া হয়েছিল। এই পরিস্থিতিতে জামায়াতের মতো সংগঠনের দাওয়াতি কার্যক্রম আসলে একটি পরোক্ষ হুমকি: হয় মুসলমান হও, নচেৎ মরো।
জামায়াতের এই কর্মকাণ্ডের পেছনে রয়েছে বিদেশি অর্থ, ইসলামিক জেহাদি সংগঠনের সহায়তা এবং সামরিক বাহিনীর সমর্থন। গত জুলাই মাসে দেশব্যাপী দাঙ্গা সংঘটিত করে নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করা হয়েছে। এই ক্ষমতা দখলের পেছনে রয়েছে সুদী মহাজন মুহাম্মদ ইউনুস এবং তার সহযোগী যুদ্ধাপরাধী দল জামায়াত। তারা দেশের ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে, তাদেরকে ধর্মান্তরিত করার জন্য চাপ প্রয়োগ করছে।
জামায়াতের এই ধর্মান্তরিতকরণের রাজনীতি শুধু একটি রাজনৈতিক কৌশল নয়, এটি একটি মানবতাবিরোধী অপরাধ। ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং সংখ্যালঘুদের অধিকারের প্রতি এটি একটি সরাসরি আক্রমণ। বাংলাদেশের সংবিধান ধর্মীয় স্বাধীনতার কথা বললেও, বাস্তবে সংখ্যালঘুরা আজ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। জামায়াতের মতো সংগঠনের দাওয়াতি কার্যক্রমের মাধ্যমে ধর্মান্তরিতকরণের চেষ্টা আসলে একটি পরিকল্পিত উদ্যোগ, যার লক্ষ্য বাংলাদেশকে মধ্যযুগীয় ইসলামিক রাষ্ট্রে পরিণত করা।
এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠেছে, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা কোথায় যাবে? তাদের ধর্মীয় স্বাধীনতা কোথায়? জামায়াতের মতো সংগঠনের এই ধর্মান্তরিতকরণের রাজনীতি কি শুধু চাঁপাইনবাবগঞ্জেই সীমাবদ্ধ থাকবে, নাকি এটি দেশব্যাপী ছড়িয়ে পড়বে? জুলাই দাঙ্গার পর থেকে সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচার, নির্যাতন এবং ধর্মান্তরিতকরণের চেষ্টা বাড়ছে। এই অবস্থায়, বাংলাদেশের সংখ্যালঘুরা আজ তাদের নিজস্ব অস্তিত্বের জন্য লড়াই করছে।