হারুন আল রশিদ
মৌলবাদ জঙ্গিবাদের যা কিছু আপনার কাছে ভাল মনে হয় তা হল চাতুর্য এবং কৌশল। যেমন শিবিরের এম্বুলেন্স সার্ভিস একটা কৌশল। অবশ্য আপনি নিজেই যদি মৌলবাদী হয়ে যান হা হলে তো আমার সাথে আপনার পার্থক্য হয়েই গেল।
তবু কিছু মানুষতো যুক্তি বোঝে। তাদের জন্য কথাগুলি বলা।
মুসলমান হয়ে জন্মগ্রহণ করে যুক্তিবাদী হওয়া প্রাণিজগতের সবচেয়ে কঠিন কাজগুলির একটি। তসলিমা নাসরিন যে ২৪ এর জঙ্গি আন্দোলন বোঝেনি এটাও হল তার মুসলমান হিসাবে জন্মগ্রহণের কুফল। অবশ্য তসলিমা নাসরিনের প্রতি আমার সহানুভূতির শেষ নাই। কারণ রাষ্ট্র তার অধিকার নিশ্চিত করেনি।
মনে কষ্ট পান। তবু একটু চিন্তা করুন।
ইরানের শাসকগোষ্ঠির কথা ধরুন। আমার বন্ধুরা তাদের ভালবাসে। কারণ ইরান মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করে। কিন্তু তাঁরা এটা বোঝেন না যে ইরানের এই লড়াইটা নৈতিক নয়, চাতুর্য, বাধ্য হয়ে করা। আমি সাম্রাজ্যবাদকে ঘৃণা করি কারণ সে অন্য জাতির অনুভূতিকে গুরুত্ব দেয় না। তাই তারা বাংলাদেশের মৌলবাদিদের রক্ষাকর্তা। ধরুন আপনার দৃষ্টিতে ইরানের ইহুদিদের ভাল রাখা খুব ভাল কাজ। কিন্তু কাজটা চাতুর্যের, নৈতিক নয়।
এখানে একটা জিনিস বোঝা দরকার। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ আর ইরানের মৌলবাদ দুই খারাপের মধ্যে অপেক্ষাকৃত ভাল কোনটা? এই সিদ্ধান্ত আপনি নিন। আমি শুধু পরিস্থিতিটা দেখিয়ে দিচ্ছি। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ তার সকল নাগরিকের মর্যাদা রক্ষা করে, মর্যাদা ক্ষূন্ন হলে আপনি প্রতিকার পাবেন এমন আইন আছে সেখানে। ইরানের মৌলবাদ তার সকল নাগরিকের মর্যাদা ও অধিকার রক্ষা করে না।
ইরানের শাসকরা ইহুদিদের ভাল রাখে, কিন্তু নাস্তিকের কল্লা কাটে। তার অবস্থানটা যদি নৈতিক হয় সে ইহুদিকেও ভাল রাখবে, নাস্তিককেও ভাল রাখবে।
মুসলমান হয়ে জন্মগ্রহণ করে আপনি নিজে নাস্তিক হয়ে গেলেও মানুষের মনের এইসব গভীর ও জটিল অনুভূতি বুঝতে পারবেন তার নিশ্চয়তা নাই। বুঝতে যদি পারেন তা হলে মানুষ হিসাবে আপনি অনেক বড় একটা অর্জন করলেন।