আরিফ মাহফুজ
বৃটেনে আগামী জাতীয় নির্বাচনের ইশতেহারে অভিবাসন সংক্রান্ত নতুন এক পদক্ষেপের ঘোষণা দিয়েছে রিফর্ম ইউকে পার্টি। দলটির নেতা নাইজেল ফারাজ জানিয়েছেন, ক্ষমতায় এলে পাঁচ বছরের মধ্যে অভিবাসীদের জন্য স্থায়ী বসবাসের অধিকার বিলুপ্ত করার বিল পাস করবে তার দল। এতে ভবিষ্যতে অভিবাসীদের নতুন কঠোর শর্তাবলীর অধীনে পুনরায় ভিসা আবেদন করতে হবে। যদিও এই প্রস্তাবের কঠোর বিরোধীতা করেছে দেশটির সরকার। এমন প্রস্তাব বাস্তবায়ন করা অসম্ভব বলে মনে করে ক্ষমতাসীন লেবার পার্টি।
অবৈধ অভিবাসীদের বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর নীতির পর বৈধ এবং স্থায়ী বসবাসকারি অভিবাসীদের জন্য রিফর্ম ইউকে পার্টির এমন কঠোর বার্তা দেশটির রাজনীতিতে নতুন চাঞ্চল্য তৈরি করেছে।
নাইজেল ফারাজের দলের ঘোষণায় বলা হয়েছে, তারা ক্ষমতায় এলে অভিবাসীদের স্থায়ী বসবাসের অধিকার বিলুপ্ত করবে। এর অর্থ হলো- যেসকল অভিবাসী বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে আজীবন স্থায়ী বসবাসের অনুমতি পেয়েছেন তাদের সেই অধিকার আর থাকবে না। ২২ সেপ্টেম্বর পরবর্তী জাতীয় নির্বাচনের ইশতেহার প্রকাশ করে দলটি। সেখানে অভিবাসন নীতিতে এমন কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানানো হয়। দলের নেতা নাইজেল ফারাজ জানিয়েছেন, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে তারা অভিবাসীদের জন্য স্থায়ী বসবাসের অধিকার বিলুপ্ত করবেন। ফলে ভবিষ্যতে অভিবাসীদের পুনরায় ভিসা আবেদন করতে হবে এবং তাদের আবেদন নতুন কঠোর শর্তাবলীর অধীনে গ্রহণ করা হবে।
রিফর্ম ইউকে’র মতে, এই পদক্ষেপটি বৃটেনের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ। দলটির যুক্তি এর মাধ্যমে দেশের রাষ্ট্রীয় ব্যয় কমানো সম্ভব হবে এবং কয়েক দশকে প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন পাউন্ড সাশ্রয় হবে। এছাড়া শুধুমাত্র বৃটিশ নাগরিকরাই সরকারি সুবিধা এবং কল্যাণ ভাতা পাবে বলে একটি পরিকল্পনা ঘোষণা করা হয়েছে। দলটির বিশ্বাস, এই পদক্ষেপ অভিবাসীদের প্রতি দায়িত্বশীলতা বাড়াবে এবং সাধারণ জনগণের জন্য একটি ন্যায্য ব্যবস্থা তৈরি করবে।
তবে সরকারের পক্ষ থেকে এই প্রস্তাবের তীব্র বিরোধিতা করা হয়েছে। অর্থমন্ত্রী রেচেল রিভস বলেছেন, রিফর্ম ইউকে’র প্রস্তাবিত পরিকল্পনাগুলোর কোনো বাস্তব ভিত্তি নেই এবং এটি বাস্তবায়ন সম্ভব নয়। এছাড়া মানবাধিকার সংস্থা ও অভিবাসন বিষয়ক অধিকার গোষ্ঠীও এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে। তারা এই প্রস্তাবকে অমানবিক হিসেবে চিহ্নিত করেছে। এদিকে এই নতুন ইশতেহারে অভিবাসন সংক্রান্ত ঘোষণাগুলো বৃটিশ জনগণের মধ্যে ব্যাপক আলোচনা ও বিতর্ক সৃষ্টি করেছে এবং বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আসন্ন নির্বাচনে এই বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে।