অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া পাহাড়ি কিশোরীকে বাঙালি সেটেলার কর্তৃক গণধর্ষণের ঘটনা ও তার পরবর্তী প্রতিক্রিয়ায় খাগড়াছড়িতে চলছে সাম্প্রদায়িক সহিংসতা। ধর্ষণের প্রতিবাদে ডাকা সড়ক অবরোধকে কেন্দ্র করে খাগড়াছড়িজুড়ে জ্বলছে আগুন।
শনিবার দুপুর থেকে জেলা সদরের বিভিন্ন এলাকায় অবরোধ সমর্থক ও সেটেলারদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশ লাঠিচার্জ ও টিয়ার শেল নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে খাগড়াছড়ি পৌরসভা, সদর উপজেলা ও গুইমারা উপজেলায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন।
আজ ২৮শে সেপ্টেম্বর, রোববার সকাল থেকে খাগড়াছড়ি পৌর শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পয়েন্টে মোতায়েন রয়েছে সেনাবাহিনী ও পুলিশ। এছাড়া জেলা সদরে মোতায়েন করা হয়েছে ৭ প্লাটুন বিজিবি। সকাল থেকে বিভিন্ন পয়েন্টে চলাচলকারীদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা। এদিকে বন্ধ রয়েছে শহরের দোকানপাট। বিভিন্ন এলাকায় সহিংসতার অনেক ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনার খবর গণমাধ্যমগুলো এড়িয়ে গেলেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উঠে এসেছে ছবি এবং ভিডিওর মাধ্যমে।

গুইমারায় বাঙালি সেটেলাররা সেনাবাহিনীর উপস্থিতিতে পাহাড়িদের ওপর হামলা, বাড়িঘর-দোকানপাটে লুটতরাজ চালিয়েছে, কুপিয়ে অনেককে আহত করেছে, বাড়িঘরে অগ্নিসংযোগও করেছে, এমন বেশ কিছু ঘটনার ছবিও ভিডিও ছড়িয়ে পড়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। সেনাবাহিনীর গুলিতে পাহাড়ি আদিবাসী নিহতের কিছু ঘটনার কথাও শোনা যাচ্ছে।
জানা যায়, গতকাল ও আজ সড়ক অবরোধ, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ, সড়কে সড়কে জ্বালাও-পোড়াও ও সহিংসতার ঘটনা ঘটে। পরে শনিবার দুপুরে খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক ও জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এবিএম ইফতেখারুল ইসলাম খন্দকার সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানান, দুপুর ২টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ১৪৪ ধারা কার্যকর থাকবে।
সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধ ও সহিংস পরিস্থিতির কারণে সাজেকে আটকে পড়া প্রায় দুই হাজারের বেশি পর্যটক সেনাবাহিনীর নিরাপত্তায় গতকাল রাত সাড়ে ১০টার পর খাগড়াছড়ি শহরে পৌঁছেছেন। পরে রাত ১২টার মধ্যে তারা নিজ নিজ গন্তব্যের উদ্দেশে খাগড়াছড়ি ছেড়েছেন।
শনিবার জুম্ম ছাত্র-জনতার ডাকা সকাল-সন্ধ্যা সড়ক অবরোধ চলাকালে খাগড়াছড়ির মহাজন পাড়া ও সদর উপজেলা পরিষদ সংলগ্ন এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এসময় দুপক্ষের মুখোমুখি অবস্থান তৈরি হয়। সংঘর্ষে আহত হন অন্তত ২৩ জন। পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণসহ জানমাল রক্ষায় অনির্দিষ্টকালের জন্য ১৪৪ ধারা জারি করেছে জেলা প্রশাসন।
খাগড়াছড়ির সিভিল সার্জন মো. ছাবের বলেন, দুপক্ষের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনায় অন্তত ২৩ জন আহত হন। তাদের মধ্যে ২১ জন প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বাড়ি ফিরে গেছে। দুজন খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। নিহতের সংখ্যা বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি।
খাগড়াছড়ির পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল বলেন, শনিবার দুপুরের পর উপজেলা অফিস সংলগ্ন এলাকায় দুপক্ষের মধ্যে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পরে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশ নিরাপত্তায় যৌথভাবে কাজ করছে। পরে সাউন্ড গ্রেনেড দিয়ে উত্তেজিত দুপক্ষকে সরিয়ে দেওয়া হয়। নতুন করে যাতে সহিংসতার ঘটনা না ঘটে সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।
খাগড়াছড়িতে চলছে অবরোধ, গুইমারায় বাজারে আগুন
অবরোধ চলাকালে গুইমারায় একটি বাজারে আগুন দিয়েছে বাঙালি সেটেলাররা। আগুনে বাজারের বেশ কয়েকটি দোকান পুড়ে গেছে। এ সময় বাজারের পাশে থাকা কয়েকটি বসতঘরও আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
সহিংসতার খণ্ডচিত্র
আজ রোববার দুপুর ১টার দিকে গুইমারা উপজেলার রামেসু বাজারে এ ঘটনা ঘটে। বাজারটি চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি সড়ক থেকে প্রায় ১০০ গজ দূরে। এরই মধ্যে আগুন দেওয়ার ভিডিও ও ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিওতে আগুনে বাজারের দোকানপাট জ্বলতে দেখা যায়। বাজারের দোকানমালিকদের অধিকাংশ পাহাড়ি বলে জানিয়েছেন স্থানীয় লোকজন।
এ ঘটনার পর গুইমারা উপজেলায় থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। অবরোধের সমর্থনকারীরা এখন সড়কে অবস্থান না করলেও এলাকায় আছেন। এলাকাজুড়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর টহল আছে। এর আগে দুপুরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে অবরোধের সমর্থনকারীদের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় গুলির শব্দ শোনা যায়। এ ঘটনায় অন্তত ৬ জন আহত হন।
স্থানীয় বাসিন্দা মংসাজাই মারমা ও কংজরী মারমা জানান, অবরোধের সমর্থনে তারা খাদ্যগুদামের সামনের সড়কের ওপর দাঁড়িয়ে শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করছিলেন। এ সময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা এলে তাদের সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদের ওপর গুলি করেন। গুলির পরপরই লোকজন ভয়ে দিগবিদিক পালিয়ে যান। এরপর ২০-২৫ জন লোক এসে রামেসু বাজার ও বসতবাড়ি লুটপাট করে এবং যাওয়ার সময় আগুন ধরিয়ে দেন। এসব লোকের সঙ্গে মুখোশ পরা লোকও ছিল। দোকানপাট ও বসতবাড়ির সঙ্গে অনেকগুলো মোটরসাইকেলেও আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়।
গুইমারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এনামুল হক চৌধুরী বলেন, ‘অবরোধ নিয়ে পাহাড়ি-বাঙালিদের মধ্যে ঝামেলা চলছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গেও ঝামেলা হয়েছে। এখন পরিস্থিতি উত্তপ্ত। পরে বিস্তারিত জানানো হবে। আমরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছি।’
অবরোধ কর্মসূচির কারণে চট্টগ্রাম-খাগড়াছড়ি, খাগড়াছড়ি-রাঙামাটি ও খাগড়াছড়ি-সাজেক সড়কে যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। সকালে জেলার বিভিন্ন স্থানে সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে ও গাছের গুঁড়ি ফেলে বিক্ষোভ করেন অবরোধকারীরা। আজ সকাল থেকে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। শহরের মোড়ে মোড়ে নিরাপত্তা বাহিনীর অবস্থান দেখা গেছে। বাজার এবং বাজারের আশপাশে কোনও দোকানপাট খোলেনি। প্রয়োজনীয় কাজে যারা বের হচ্ছেন তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে নিরাপত্তা বাহিনী।
পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি উদ্বেগ
এই সাম্প্রদায়িক সহিংস ঘটনায় পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি উদ্বেগ প্রকাশ করে সকলকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, গত ২৩শে সেপ্টেম্বর খাগড়াছড়ির সিঙ্গিনালা এলাকার অষ্টম শ্রেণী পড়ুয়া এক জুম্ম কিশোরীকে গণধর্ষণের ঘটনায় জড়িত ধর্ষকদের গ্রেপ্তারপূর্বক সর্বোচ্চ শাস্তির দাবীতে জুম্ম ছাত্র জনতার সমাবেশ থেকে ২৭শে সেপ্টেম্বর সকাল-সন্ধ্যা অবরোধ কর্মসূচি ডাকা হয়েছিল। কর্মসূচি চলাকালে পিকেটারদের সাথে একদল বাঙালির পাল্টাপাল্টি হামলা হয়। এক পর্যায়ে খাগড়াছড়ি পৌর শহরে ছড়িয়ে পড়লে জুম্ম ও বাঙালিদের মধ্যকার ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।
ঘটনা এক পর্যায়ে সাম্প্রদায়িক সহিংসতায় রূপ নেয়। এতে উত্তেজিত বাঙালিরা মহাজনপাড়া ও খেজুরবাগানে জুম্মদের দোকানপাট ভাঙচুর করার চেষ্টা চালায় এবং উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন যুবক গুরুতর আহত হয়। পরে পরিস্থিতি অবনতির লক্ষণ দেখা দিলে খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসন ১৪৪ ধারা জারি করে। এর পরপর পুলিশ, বিজিবি ও সেনাবাহিনী মাঠে নেমে উত্তেজিত পাহাড়ি ও বাঙালিকে রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয়। পরিস্থিতি কিছু সময়ের জন্য শান্ত হলেও সন্ধ্যা ৭টার সময়ে আবারও য়ংড বৌদ্ধ বিহারের পাশে জুম্ম ও বাঙালিদের মধ্যকার ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে এবং এক পর্যায়ে বাঙালিদের ধারালো দায়ের কোপে দুই জুম্ম যুবক গুরুতর জখম হয়। তাদেরকে রক্তাক্ত অবস্থায় খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়।
পার্বত্য চট্টগ্রামে গণধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্ত ধর্ষকদের গ্রেপ্তারপূর্বক দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়ায় বারবার ধর্ষণের ঘটনা ঘটছে এবং অপরাধীরা ঘটনা ঘটিয়ে নিরাপদে পার পেয়ে যাচ্ছে বলে বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি। পাহাড়ে এযাবৎ যতগুলো ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে সেসব ঘটনায় অভিযুক্ত ধর্ষকদেরসহ সম্প্রতি সিঙ্গিনালায় সংঘটিত ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত ধর্ষকদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংগঠনটি জোর দাবি জানিয়েছে।
একই সাথে সাম্প্রদায়িক সহিংস ঘটনার তীব্র নিন্দা জ্ঞাপনসহ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে। সেই সাথে অনুরুপ সহিংস সাম্প্রদায়িক ঘটনা যাহাতে পুনরাবৃত্তি না ঘটে তজ্জন্য প্রশাসনের যথাযথ সুদৃষ্টি কামনা করছে।
দেশের চলমান রাজনৈতিক বাস্তবতা এবং পবিত্র শারদীয় দুর্গাপূজাকে সামনে রেখে জুম্ম ও বাঙালিদের মধ্যেকার সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে উভয় পক্ষকে শান্ত, সর্বোচ্চ ধৈর্য এবং সংযম প্রদর্শন করার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছে।
খাগড়াছড়ির পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সরকার কাজ করছে: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
দেশের পার্বত্য অঞ্চল খাগড়াছড়ির আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। আজ রোববার কোর কমিটির বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ তথ্য জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
এ সময় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, স্কুলশিক্ষার্থীকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনার পর খাগড়াছড়ির আইনি পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। তবে আজ সকাল ১০টায় পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক উপদেষ্টা সেখানকার পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন।
খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসনের সম্মেলন কক্ষে বিভিন্ন শ্রেণির লোকজনকে নিয়ে দুপুরে মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। জেলা প্রশাসক এ বি এম ইফতেখার উদ্দিন খন্দকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠান প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা। তিনি বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামকে অশান্ত করে একটা পক্ষ ফায়দা নেওয়ার চেষ্টা করছে। সব জাতিগোষ্ঠীকে মিলেমিশে থাকার আহ্বান জানাই।
পেছনের ঘটনা
গত মঙ্গলবার রাতে খাগড়াছড়ি সদরে এক আদিবাসী কিশোরীকে ধর্ষণ করা হয়। রাত ৯টার দিকে শিক্ষকের কাছ থেকে পড়ে ফেরার পথে ও্ই কিশোরী সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয় বলে জানান তার বাবা। রাত ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় একটি খেত থেকে কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়।
কিশোরীর বাবা বুধবার ভোরে সদর থানায় মামলা করেন। মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, মঙ্গলবার রাত ৯টার দিকে প্রাইভেট থেকে ফেরার পথে ওই কিশোরী সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়।
কিশোরীর বাবা বলেন, অচেতন অবস্থায় পাওয়ার পর মেয়েকে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সে এখনো ওই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। আমার মেয়ে ধর্ষণে তিনজন জড়িত থাকার কথা জানিয়েছে।
এ ঘটনায় খাগড়াছড়ি সদরের সিঙ্গিনালা এলাকায় বুধবার থেকে জড়িতদের শাস্তির দাবিতে বিক্ষোভ শুরু করে জুম্ম ছাত্র-জনতা। তাদের ডাকে বৃহস্পতিবার আধাবেলা সড়ক অবরোধ পালিত হয়। সমাবেশ থেকে এই অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা হয়। জুম্ম ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করেছে ইউপিডিএফ সমর্থিত পাহাড়ী ছাত্রপরিষদ, হিল উইমেন্স ফেডারেশন ও গণতান্ত্রিক যুবফোরাম।
শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলনরত শিক্ষার্থী কো উক্যনু মারমাকে সেনাবাহিনী অন্যায়ভাবে আটকের ঘটনাও ঘটেছে। আটক উক্যনু মারমা বাংলাদেশ মারমা স্টুডেন্টস্ কাউন্সিল (বিএমএসসি), খাগড়াছড়ি জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক। পরে জনগণের প্রতিক্রিয়ার মুখে তাকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদের পর মুক্তি দেওয়া হয়েছে।