কানাডাভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল সেন্টার ফর ডেমোক্রেটিক গভর্নেন্স (জিসিডিজি) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের দেওয়া মৃত্যুদণ্ডের রায়ের তীব্র নিন্দা জানিয়েছে।
সংস্থাটি এটিকে বিচারের নামে প্রহসন, গুরুতর বিচার বিভ্রান্তি এবং ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত সিদ্ধান্ত বলে আখ্যা দিয়েছে।
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যা চালানো পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর সহযোগী ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে ১৯৭৩ সালে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) গঠিত হয়।
সংস্থাটি বলেছে, এই ট্রাইব্যুনাল কখনোই কোনো নির্বাচিত সরকারপ্রধানকে বিচার করার জন্য গঠিত হয়নি। আইনি বিশেষজ্ঞ ও মানবাধিকার কর্মীরাও অভিযোগ তুলেছেন—বিচারপ্রক্রিয়ায় গুরুতর অনিয়ম হয়েছে এবং অভিযুক্তের সম্মতি ছাড়া তার পক্ষে আইনজীবী নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
বিবৃতিতে জিসিডিজি বলেছে, “ট্রাইব্যুনালের এসব পদক্ষেপ অভিযুক্তের সঠিক আইনি সহায়তা পাওয়ার অধিকারকে ক্ষুণ্ন করেছে। এতে ন্যায়বিচার ও নিরপেক্ষতা নিয়ে বড় ধরনের প্রশ্ন তৈরি হয়েছে।”
পাশাপাশি প্রধান প্রসিকিউটরের ডানপন্থী ইসলামপন্থি গোষ্ঠীর সঙ্গে সম্পৃক্ততা এবং অতীতে দণ্ডিত যুদ্ধাপরাধীদের পক্ষে কাজ করার ইতিহাস নিয়েও প্রশ্ন উঠেছে। এগুলো ট্রাইব্যুনালের নিরপেক্ষতা নিয়ে আরও সন্দেহ বাড়াচ্ছে।
এদিকে দেশে রাজনৈতিক দমন-পীড়ন, গণগ্রেপ্তার, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত মামলা এবং বিচার বিভাগের স্বাধীনতা সংকুচিত হওয়ার বিষয়েও নানান প্রতিবেদন পাওয়া যাচ্ছে।
মানবাধিকার পর্যবেক্ষকেরা সতর্ক করে বলেছেন, এমন রাজনৈতিক উত্তেজনার সময়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সিদ্ধান্ত দেশের গণতান্ত্রিক স্থিতি আরও দুর্বল করতে পারে।
শেখ হাসিনার মৃত্যুদণ্ডের রায় অবিলম্বে বাতিল করা, আইসিটির বিচারপ্রক্রিয়া আন্তর্জাতিকভাবে পুনর্বিবেচনা করা এবং সম্ভাব্য অপূরণীয় ক্ষতি ঠেকাতে বিশ্ব মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দ্রুত হস্তক্ষেপ নিশ্চিত করার আহ্বান জানিয়েছে জিসিডিজি।
জিসিডিজির নির্বাহী পরিচালক মো. গোলাম কিবরিয়া তালুকদার বলেন, “একজন নির্বাচিত সরকারপ্রধানকে লক্ষ্য করে ট্রাইব্যুনাল ব্যবহার করা আইনি দৃষ্টিতে অগ্রহণযোগ্য এবং স্পষ্টভাবে রাজনৈতিক। বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে রক্ষা করতে এখনই আন্তর্জাতিক নজরদারি জরুরি।”
