বাংলার নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া সাখাওয়াত হোসেনের জন্মদিন উপলক্ষে আজ পালিত হচ্ছে বেগম রোকেয়া দিবস। এদিন নারীশিক্ষা, নারী অধিকার, মানবাধিকার ও নারী জাগরণে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ চার বিশিষ্ট নারীকে বেগম রোকেয়া পদক প্রদান করেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস।
কিন্তু তারই সরকারের অধীনস্থ ও জুলাই আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়া রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক খন্দকার মুহাম্মদ মাহমুদুল হাসান সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বেগম রোকেয়াকে ‘মুরতাদ কাফির’ বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্টেটাস দিয়েছেন। নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্টে বেগম রোকেয়ার একটি ছবি শেয়ার করে তাকে ‘মুরতাদ’ ও ‘কাফির’ হিসেবে উল্লেখ করে এমন ফতোয়া দেন বিতর্কিত এই শিক্ষক। পোস্টে সংযুক্ত কার্ডে বেগম রোকেয়ার বিভিন্ন বক্তব্য তুলে ধরে সেগুলোর ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ থেকে সমালোচনা করেন তিনি।
মাহমুদুল হাসানের ওই পোস্টে এক ব্যক্তি ‘সরি স্যার’ মন্তব্য করেন এবং প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল ইসলামের শেয়ার করা একটি স্ক্রিনশট যুক্ত করেন, যেখানে দেখা যায় প্রধান উপদেষ্টা ‘আমিই রোকেয়া’ লেখা লোগোর সামনে দাঁড়িয়ে আছেন।
এর আগে, ৫ ডিসেম্বরও মাহমুদুল হাসান বেগম রোকেয়াকে নিয়ে আরেকটি ধর্মীয় বিশ্লেষণধর্মী বক্তব্য শেয়ার করেছিলেন, যেখানে একই ধরনের সমালোচনা উপস্থাপন করা হয়।
পেশাগত জীবনে মাহমুদুল হাসান ২০০৯ সালে ইস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে লেকচারার হিসেবে যোগ দেন। পরবর্তীতে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত থাকার পর ২০১৩ সালে তিনি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগে যোগদান করেন। তিনি নারী বিদ্বেষী ও জঙ্গি মনোভাব সম্পন্ন বলে ক্যাম্পাসে পরিচিত আছে। নারীদের অপমান, অবমাননা ও তাদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময়ে কুরুচিপূর্ণ বক্তব্য দিয়েও বারবার রেহাই পেয়ে যাচ্ছেন। বেগম রোকেয়াকে নিয়ে তার এমন মন্তব্যে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন ক্যাম্পাসের একাধিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থী।
