জুয়েল রাজ
১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর বিজয়ী বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটলেও বঙ্গবন্ধু তখনো বন্দি ছিলেন পাকিস্তানি হায়েনাদের কারাগারে। দেশ-বিদেশে তখনো চলছিল বঙ্গবন্ধুকে ফিরিয়ে আনার সংগ্রাম। বঙ্গবন্ধু আদৌ বেঁচে আছেন কিনা কিংবা পাকিস্তান তাঁকে ফিরিয়ে দেবে কিনা- সেসব নিয়ে চলছে নানা জল্পনা কল্পনা।
বঙ্গবন্ধু ছাড়া বাংলাদেশ বা বাংলাদেশের স্বাধীনতা আর ৩০ লক্ষ মানুষের আত্মাহুতি ও চার লক্ষ মা-বোনের সম্ভ্রম হারানোর বেদনার্ত ইতিহাস- সবকিছু অসম্পূর্ণ মিথ্যা ছিল বঙ্গবন্ধুকে ছাড়া।
তবে সব জল্পনা কল্পনার অবসান ঘটিয়ে পাকিস্তানের কারাগার থেকে বিজয়ীর বেশে আসলেন ইতিহাসের মহানায়ক, বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
মুক্তি পাওয়ার পরই তিনি যেতে চেয়েছেন সদ্য স্বাধীন দেশ তাঁর স্বপ্নের বাংলাদেশে। কিন্তু জেনেভা কনভেশন অনুযায়ী সেটা সম্ভব ছিল না। সম্ভব ছিল না প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারতের আকাশসীমা ব্যবহার করা।
পাকিস্তান সরকারের পক্ষ থেকে তৃতীয় দেশ হিসেবে ইরান অথবা তুরস্ককে বেছে নেওয়ার প্রস্তাব দিলে বঙ্গবন্ধু তা নাকচ করে দেন। এবং তাঁকে লন্ডন হয়ে পাঠানোর প্রস্তাব দেওয়া হয়। কারণ বাংলাদেশের পর সবচেয়ে বেশি বাঙালির বসবাস তখন ব্রিটেনে। ব্রিটেন প্রবাসীদের সঙ্গে বঙ্গবন্ধুর ছিল আত্মিক যোগাযোগ, সেই ১৯৫৬ সাল থেকেই, তিনি যখন প্রথম বিলেতে এসেছিলেন। তাই তিনি বেছে নিয়েছিলেন লন্ডনকে।
বঙ্গবন্ধুর ইচ্ছা অনুযায়ী এই সংবাদ পাকিস্থান প্রচার করেনি। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, আমি নিজেই বিশ্বকে জানাতে চাই আমার মুক্তির বার্তা। বঙ্গবন্ধু মাত্র একদিনের যাত্রা বিরতি করেছিলেন লন্ডনে। সেখান থেকেই বিশ্বকে জানিয়েছিলেন তাঁর বিজয়ের বার্তা, মুক্তির বার্তা।
সারা পৃথিবীর রাজনীতি সেদিন চোখ রাখছিল ইতিহাসের মহানায়কের প্রতি, লন্ডনের প্রতি।
কেমন ছিল সেদিনের লন্ডনের সকাল? কেমন ছিল বঙ্গবন্ধুর প্রিয় প্রবাসী বাঙালিদের সেদিনের অনুভুতি?
১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি, শনিবার, বিলেতের শীতের সকাল, বাইরে বৃষ্টি, কিন্তু ব্রিটেন প্রবাসী হাজার হাজার বাংলাদেশি কিছুই তোয়াক্কা করছেন না। ছুটে চলছেন, গন্তব্য সেন্ট্রাল লন্ডনের ক্ল্যারেজ হোটেল। শুধুমাত্র লন্ডন নয় বার্মিংহ্যাম, ম্যানচেস্টার থেকেও লোকজন ছুটে আসছিলেন।
বৃষ্টির জল আর চোখের জল সেদিন একাকার হয়ে গিয়েছিল। বেদনার অশ্রু নয় সেই চোখের অশ্রু ছিল আনন্দের আর বিজয়য়ের। কণ্ঠে জয়বাংলা। কারণ, বঙ্গবন্ধু ফিরে এসেছেন, জাতির জনক ফিরে এসেছেন।
পাকিস্তানের কারাগার থেকে মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসেছেন তিনি। বঙ্গবন্ধুর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন নিয়ে স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে এভাবেই উল্লেখ করেছিলেন তৎকালীন ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের সদস্য বর্তমানে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি মুজাম্মিল আলী। ব্যারিস্টার আনিস রহমানও সেদিন সেই আলোর সকালের স্বাক্ষী হয়েছিলেন।
ব্যারিস্টার আনিস বলেন, ‘আমরা যে শুধু মুক্তিযোদ্ধের জন্য আন্দোলন সংগ্রাম করেছি তাই নয়, আমাদের শ্লোগান ছিল রিকগনাইজ বাংলাদেশ, রিলিজ বঙ্গবন্ধু। আমরা জানতাম না বঙ্গবন্ধু ফিরছেন কিনা। ২৯ ডিসেম্বর প্রথম বিশ্ব সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত হয় বঙ্গবন্ধুকে মুক্তি দেওয়ার কথা ভাবছেন ভুট্টো। আমরা বঙ্গবন্ধুর মুক্তির আন্দোলন আরো বেগবান করি। ২৯ তারিখের পর থেকে আমরা অপেক্ষায় ছিলাম বঙ্গবন্ধু কবে মুক্তি পাবেন। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে যখন দেখা হয়, পা ছুঁয়ে সালাম করার পর তিনি জড়িয়ে ধরে প্রথমেই জিজ্ঞাসা করেন, ‘তোমার বাপ-মা কি জীবিত আছেন? ওরা কি আমার দেশের সব মানুষ মেরে ফেলেছে?
মুজম্মিল আলী বলেন , ‘সে সময় আমাদের বেশিরভাগ মানুষেরই টেলিভিশন বা রেডিও কেনার ক্ষমতা ছিল না। ৮ তারিখ সকালে হিথ্রো বিমানবন্দরে বঙ্গবন্ধুকে বহনকারী পাকিস্তানি একটি বিশেষ ফ্লাইট ৬৩৫এ অবতরণ করার আগে সকালের বিবিসি মর্নিং সার্ভিসে প্রথম ঘোষণা করা হয় বঙ্গবন্ধু মুক্ত হয়ে লন্ডনে আসছেন।
সকাল ৭টায় বিবিসি ওয়ার্ল্ড সার্ভিসে প্রচারিত খবরে বলা হয়, বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের নেতা শেখ মুজিবুর রহমান বিমানযোগে লন্ডনে আসছেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই বিমানটি লন্ডনের হিথ্রো বিমান বন্দরে অবতরণ করবে। সেই সংবাদটি সাথে সাথে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সিনিয়র কয়েকজন নেতা ফোন করে জানিয়েছিলেন। রয়টার্স সেদিন শিরোনাম করেছিল ‘লন্ডনে শেখ মুজিব’।
হিথ্রো বিমানবন্দরে ভিআইপি লাউঞ্জে বৈদেশিক দপ্তরের কর্মকর্তারা তাঁকে স্বাগত জানান। সেখানে ছুটে আসেন ব্রিটিশ পররাষ্ট্র অফিসের দক্ষিণ এশিয়া বিভাগের প্রধান কর্মকর্তা স্যার ইয়ার মাদারল্যান্ড। তিনি বঙ্গবন্ধুকে জানান, ব্রিটিশ সরকারের সম্মানিত অতিথি হিসেবে নিতে এসেছেন তাঁকে।
সেখানে সেদিন উপস্থিত ছিলেন শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক। সাত সকালে ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক মোহাম্মদ হোসেন মঞ্জু (যিনি বর্তমানে বাংলাদেশেই বসবাস করেন)। ফোন করে বঙ্গবন্ধুর লন্ডনে আসার বার্তাটি বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিককে দেন এবং ক্ল্যারেজ হোটেলে চলে আসতে বলেন।
সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক, বিলেতে এক টেলিভিশন অনুষ্ঠানে নিবন্ধকারকে বলেছিলেন সেদিনের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাস আর ভালোবাসার কথা।
মানিক বলেন, কিন্তু তিনি যে লন্ডনে এইভাবে আসবেন সেটা আমাদের কল্পনায়ও ছিল না। যে মানুষটির ডাকে জীবন বাজি রেখে স্বাধীন বাংলাদেশের জন্য প্রাণ দিয়েছে লাখ লাখ মানুষ। যাকে ধারণ করছি নিজেদের বুকে যার অপেক্ষায় স্বাধীন বাংলাদেশ, সাড়ে সাত কোটি বাঙালি, সেই মানুষটি আমাদের মাঝে আসলেন ৮ জানুয়ারি।
সকালবেলা বিখ্যাত ক্ল্যারেজ হোটেলের রাজকীয় স্যুইটে হাতে গোনা কয়েকজন মানুষ আমরা। তখনো খুব বেশি মানুষের ভিড় হয়নি, বঙ্গবন্ধু সবার কথা জিজ্ঞাসা করছিলেন। দেশের ক্ষয়ক্ষতির কথা জিজ্ঞাসা করছিলেন। নারীদের মধ্যে সেখানে উপস্থিত ছিলেন ড. সুরাইয়া খানম যিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির শিক্ষক ছিলেন পরবর্তী সময়ে। ছিলেন শেফালি বেগম ও আওয়ামী লীগ নেতা বর্তমানে যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের সভাপতি সুলতান শরীফের আইরিশ স্ত্রী নোরা শরীফ।
শেফালী-সুরাইয়ারা বঙ্গবন্ধুকে দেখে হাউমাউ করে কাঁদছিলেন। শেফালী তো প্রায় অজ্ঞান হওয়ার মতো অবস্থা। বঙ্গবন্ধু বারবার জিজ্ঞাসা করছিলেন শহীদদের কথা, দেশের কথা, ধ্বংসের কথা, সেখানে উপস্থিত কেউ আর চোখের পানি ধরে রাখতে পারছিলেন না। বঙ্গবন্ধু উদগ্রীব ছিলেন কখন বাংলাদেশে ফিরবেন। সেখান থেকেই দেশে টেলিফোনে পরিবারের সদস্যদের সঙ্গেও কথা বলেছিলেন।
রাস্তায় তখন শত শত মানুষ। এক নজর তাদের প্রিয় বঙ্গবন্ধুকে দেখতে চান। হোটেল কর্তৃপক্ষকে হিমশিম খেতে হয়েছে সেই ভিড় সামলাতে। সবাইকে হোটেলে প্রবেশ করতে দেওয়া হচ্ছে না। বঙ্গবন্ধু জানালায় এসে বারবার হাত নাড়ছেন, বাইরে শ্লোগান হচ্ছে জয়বাংলা জয়বঙ্গবন্ধু!
হোটেলে অবস্থানকালেই আমেরিকার সিনেটর এডওয়ার্ড কেনেডি ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন। সেই সাত সকালেই সেখানে ছুটে এসেছিলেন সেই সময়ের ব্রিটেনের বিরোধী দলের নেতা হ্যারল্ড উইলিয়াম যিনি পরবর্তীতে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। সেখানে এসে বঙ্গবন্ধুকে প্রথম মি. প্রেসিডেন্ট বলে সম্বোধন করেছিলেন তিনি।
সেদিন ইতিহাসের সেই মাহেন্দ্রক্ষণে অনেকের মাঝেই সেখানে উপস্থিত ছিলেন শেখ আব্দুল মান্নান, নজরুল ইসলাম, খন্দকার মোশারফ হোসেন (বর্তমানে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য), জাকারিয়া খান, (জাতীয় পার্টির সাবেক মন্ত্রী), লুলু বিলকিস বানু, জেবুন্নেসা বক্স, গাউস খান আতাউর রহমান খান, আব্দুল হামিদ, রমজান আলীসহ ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ ও যুক্তরাজ্য আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ।
বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বলছিলেন, ‘আমি যখন হোটেল থেকে বের হয়ে আসছিলাম শত শত মানুষের চোখে সেদিন দেখেছিলাম আনন্দে অশ্রু ঝরছে, বৃষ্টি উপেক্ষা করেই শ্লোগান দিচ্ছে জয়বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু। এই মুহূর্তগুলো খুব কম মানুষের জীবনেই আসে। এই সময়গুলোকে ধারণ করা যায় কিন্তু ভাষায় প্রকাশ করা কঠিন।’
পাকিস্তান হাইকমিশনে উচ্চপর্যায়ে কর্মরত বাংলাদেশি তিন কূটনৈতিক মহিউদ্দিন আহমদ, রেজাউল করিম ও আজিজুর রহমান সেদিন সেখানে উপস্থিত ছিলেন। এদের মধ্যে শুধুমাত্র মহিউদ্দিন আহমদ পাকিস্তানের পক্ষ ত্যাগ করে চাকরি ছেড়ে, সন্তানসম্ভাবা স্ত্রীকে নিয়ে এক অনিশ্চিত অবস্থায় বাংলাদেশের পক্ষে এসে যোগ দিয়েছিলেন। বাকি দুইজন দেশ স্বাধীন হওয়ার পর এসে বাংলাদেশের পক্ষে যোগ দিয়েছিলেন এবং দুঃখজনকভাবে বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে সেদিন হোটেলে সাক্ষাৎপ্রার্থীদের যাচাই বাছাই করার দায়িত্বে ছিলেন এই দুই কর্মকর্তা। কে যাবে, না যাবে- তারা নির্ধারণ করে দিচ্ছিলেন।
ব্যারিস্টার আনিস বলেন, ‘হোটেল লবিতেই সবাই গিজগিজ করছিলেন, তখন ঢাকা বা দিল্লি থেকে একটা ফোন আসল এবং বঙ্গবন্ধু হোটেলের বলরুমে অপেক্ষমান সাংবাদিকদের সঙ্গে ঐতিহাসিক প্রেস কনফারেন্সে বসেন। কনফারেন্স শেষ করে ফিরে আসার সময় বিখ্যাত সাংবাদিক ডেভিড ফ্রস্ট বঙ্গবন্ধুর একটি সাক্ষাৎকার নিতে চেয়েছিলেন হোটেলে, বঙ্গবন্ধু রাজি হলেন না, বললেন তুমি বাংলাদেশে আসো। সেই ঐতিহাসিক সাক্ষাৎকারটি পরে ডেভিড ফ্রস্ট বাংলাদেশে গিয়ে নিয়েছিলেন।
শুধু কি বাঙালিরাই ছুটে এসেছিলেন সেদিন! ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথ তাঁর সরকারি সফর সংক্ষিপ্ত করে ফিরে এসেছিলেন লন্ডনে। শুধুমাত্র বঙ্গবন্ধুকে সম্মান জানাতে। ৮ তারিখ বিকেল ৫টায় ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে এক বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু। যাবতীয় রীতি উপেক্ষা করে প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড হিথ বঙ্গবন্ধুকে বহন করা গাড়ির দরজা খুলে দাঁড়িয়েছিলেন যতক্ষণ না বঙ্গবন্ধু গাড়িতে ওঠেন।
উল্লেখ্য, ব্রিটেন তখনো বাংলাদেশকে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়নি। বঙ্গবন্ধুর ফিরে আসার প্রায় এক মাস পর ফেব্রুয়ারির ৫ তারিখ বাংলাদেশকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছিল।
যদিও এডওয়ার্ড হিথের বঙ্গবন্ধুকে দেওয়া সম্মান নিয়ে অনেকেই সমালোচনা করেছিলেন, উত্তরে হিথ বলেছিলেন, ‘আমি জানি কাকে সম্মান জানাচ্ছি, তিনি হচ্ছেন একটি জাতির মুক্তিদাতা মহান বীর। তাঁকে এই সম্মান প্রদর্শন করতে পেরে বরং আমরাই সম্মানিত হয়েছি। বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে দেখা করতে সেদিন ছুটে এসেছিলেন ব্রিটেনের সেই সময়ের ফরেন মিনিস্টার অ্যালেকডক্লাস হিউ।
৯ জানুয়ারি সানডে টাইমস ব্রিটেনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে শেখ মুজিবের বৈঠক শিরোনামে সংবাদ প্রকাশ করে। ৯ জানুয়ারি বঙ্গবন্ধুকে বহনকারী ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া বিশেষ বিমানটি হিথ্রো বিমান বন্দর ছাড়ার পর বিবিসি ঘোষণা দেয় বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের উদ্দেশে যাত্রা করেছেন। সেই বিশেষ বিমানে ভারতে যাত্রা বিরতি করে ১০ জানুয়ারি বিজয়ের দেশে, বিজয়ীর বেশে, স্বপ্নের সোনার বাংলার মাটিতে পা রাখেন জাতির জনক। যে স্বপ্নের জন্য জীবনের ১৩টি বছর কাটিয়েছেন পাকিস্তানিদের জেলে, সহ্য করেছিলেন নির্যাতন নিপীড়ন।
করতলে সূর্য ধরা যায় না। বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের সেই স্বাধীনতার সূর্য যাকে জেল, ফাঁসির মঞ্চ কিছুই পিছু হটাতে পারেনি। আলো দিয়ে উদ্ভাসিত করে গেছেন একটি জাতিসত্ত্বাকে। একটি স্বাধীন ভূখণ্ডকে। এমন ক্ষণ হাজার হাজার বছরে এক আধবার আসে। কিছু মানুষ সেইসব ক্ষণের সাথী হতে পারে, মহাকালের সাক্ষী হতে পারে। বঙ্গবন্ধুর ৮ জানুয়ারির লন্ডনে আসার সেই ক্ষণটিও মহাকালের সাক্ষী হিসেবে রয়ে গেছে।
লেখক : কালের কণ্ঠ’র যুক্তরাজ্য প্রতিনিধি ও ব্রিকলেন পত্রিকার সম্পাদক