গ্যাস লাইটার বিস্ফোরণে দগ্ধ জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের নাতি বাবুল কাজীর (৫৯) শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটেছে। তাকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়েছে। এর আগে তার চিকিৎসায় ১৬ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়।
আজ রবিবার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের জরুরি বিভাগের আবাসিক চিকিৎসক শাওন বিন রহমান।
তিনি জানান, শনিবার ভোর ৫টার দিকে বনানীর বাসায় ওয়াশরুমে গ্যাস লাইটার বিস্ফোরণে দগ্ধ হন বাবুল কাজী। তার শরীরের ৭৪ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে আইসিইউতে ভর্তি নেওয়া হয়। তার চিকিৎসায় ১৬ সদস্যের মেডিকেল বোর্ড গঠন করা হয়েছে। শারীরিক অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়েছে।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বোন খিলখিল কাজী সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাবুল বাথরুমে ঢুকেছিলেন। পরে ধূমপান করার জন্য লাইটার জ্বালাতেই একটা বিরাট আওয়াজ হয় এবং বিস্ফোরণে দগ্ধ হন। তিনি নিচে পড়ে যান। কোনোমতে বাথরুমের দরজা খোলেন। সঙ্গে সঙ্গে তার স্ত্রী-সন্তানেরা ছুটে যান। তারা দেখেন, একেবারে দগ্ধ। পুরো মাথা, মুখ ও শরীর দগ্ধ হয়ে গেছে। আমি পাশের রোডে থাকি। ফোন পেয়ে ছুটে আসি। অ্যাম্বুলেন্স ডেকে বার্ন ইউনিটে নিয়ে যাই।’
উল্লেখ্য, ১৮৯৯ সালে পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান জেলার চুরুলিয়া গ্রামে জন্ম নেওয়া কাজী নজরুল ইসলাম ২৫ বছর বয়সে কলকাতায় প্রমীলা দেবীকে বিয়ে করেন।
তাদের ঘরে চার ছেলে সন্তানের জন্ম হয়, যাদের মধ্যে প্রথম সন্তান কৃষ্ণ মোহাম্মদ মারা যায় খুব ছোট বয়সে। দ্বিতীয় সন্তান অরিন্দম খালেদ বুলবুলের মৃত্যু হয় মাত্র চার বছর বয়সে। অপর দুই সন্তানের মধ্যে কাজী সব্যসাচী ও কাজী অনিরুদ্ধ কেউই দীর্ঘায়ু পাননি।
আবৃত্তিকার কাজী সব্যসাচী ও উমা কাজীর ছেলে তিন সন্তানের মধ্যে সবার ছোট বাবুল কাজী। তার বয়স ৫৯ বছর। বাবুল কাজীর বড় দুই বোন খিলখিল কাজী ও মিষ্টি কাজী; তারা সবাই বাংলাদেশের নাগরিক।
জাতীয় কবির আরেক ছেলে কাজী অনিরুদ্ধের পরিবারের বসবাস কলকাতায়। তার স্ত্রী কল্যাণী কাজী লেখক ও সংগীতশিল্পী।
তাদের তিন ছেলেমেয়ের মধ্যে কাজী অনির্বাণ সুইজারল্যান্ডে ঘুরতে গিয়ে গত ২ অক্টোবর মারা যান। অনির্বাণের ভাই কাজী অরিন্দমের (সুবর্ণ) থাকেন কলকাতায়, আর তাদের বোন অনিন্দিতা কাজী নিউ জার্সি প্রবাসী।
তাদের বাবা অনিরুদ্ধ কাজী ১৯৭৪ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি কাজী নজরুল জীবিত থাকতেই মারা যান।