Close Menu

    সাবস্ক্রাইব

    সর্বশেষ খবরের সাথে আপডেট থাকুন।

    জনপ্রিয় সংবাদ

    মুরাদনগরের লজ্জা: ধর্ষক ধর্ষকই, নেই অন্য পরিচয়

    July 1, 2025

    মঈনপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (ESTD-১৯২৮) প্রাক্তন ও বর্তমান ছাত্র-ছাত্রীর ব্যতিক্রমী প্রশংসনীয় উদ্যোগ

    July 1, 2025

    আসিফ মাহমুদ সজীবের যত কাণ্ড

    July 1, 2025
    Facebook Instagram WhatsApp TikTok
    Facebook Instagram YouTube TikTok
    JoyBangla – Your Gateway to Bangladesh
    Subscribe
    • হোম পেইজ
    • বিষয়
      • দেশ (Bangladesh)
      • আন্তজাতিক (International)
      • জাতীয় (National)
      • রাজনীতি (Politics)
      • অথনীতি (Economy)
      • খেলা (Sports)
      • বিনোদন (Entertainment)
      • লাইফ স্টাইল (Lifestyle)
      • শিক্ষাঙ্গন (Education)
      • টেক (Technology)
      • ধম (Religion)
      • পরবাস (Diaspora)
      • সাক্ষাৎকার (Interview)
      • শিল্প- সাহিত্য (Art & Culture)
      • সম্পাদকীয় (Editorial)
    • আমাদের সম্পর্কে
    • যোগাযোগ করুন
    JoyBangla – Your Gateway to Bangladesh
    Home » কিংবদন্তি মুক্তিযোদ্ধা উইলিয়াম আব্রাহাম সাইমন ঔডারল্যান্ড(বীর প্রতীক)
    National

    কিংবদন্তি মুক্তিযোদ্ধা উইলিয়াম আব্রাহাম সাইমন ঔডারল্যান্ড(বীর প্রতীক)

    JoyBangla EditorBy JoyBangla EditorJanuary 22, 2025No Comments7 Mins Read
    Facebook WhatsApp Copy Link
    Share
    Facebook WhatsApp Copy Link

    মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে তিনিই ছিলেন একমাত্র রাষ্ট্রীয় খেতাবপ্রাপ্ত বিদেশী মুক্তিযোদ্ধা। ভদ্রলোক বাংলাদেশে এসেছিলেন চাকরির সুবাদে বাটা কোম্পানির প্রোডাকশন ম্যানেজার হিসেবে। সালটা ১৯৭০ সালের শেষের দিকের কথা। তার ঠিক কয়েক মাস পরেই পাকিস্তানি হানাদারদের নারকীয় তাণ্ডবলীলা চললো এদেশের বুকে।

    বিদেশি নাগরিক বটে কিন্তু সামলাতে পারলেন না নিজেকে। নিজের চেনা পরিচিতি আর বিশ্বস্ততাকে কাজে লাগিয়ে একটি দেশকে নিয়ে গেলেন বিজয়ের প্রান্তে। মুক্তিযুদ্ধে এই ভদ্রলোকের অবদান ছিল অবিস্মরণীয়। দ্বিতীয় বিশ্বযু*দ্ধের এই সৈনিক নেমেছিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের রণাঙ্গনে, তার কারখানা আর অফিস হয়ে উঠলো এক টুকরো প্রশিক্ষণ শি*বির। এছাড়া গোপনে মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য, পূর্বে  কমান্ডো হিসেবে তার অভিজ্ঞতা কাজে লাগিয়ে মুক্তিযুদ্ধে মুক্তিবাহিনীর হয়ে উঠলেন সামরিক বিশেষজ্ঞ। শুধু কি তাই, মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের পক্ষে বৈশ্বিক জনমত গঠনে তার ভূমিকা অনস্বীকার্য। তিনি কিংবদন্তি মুক্তিযোদ্ধা উইলিয়াম এ এস ঔডারল্যান্ড (বীরপ্রতীক)।

    উইলিয়াম আব্রাহাম সাইমন ঔডারল্যান্ডের জন্ম হল্যান্ডের আমস্টারডামে ১৯১৭ সালের ৬ ডিসেম্বর। তার যখন জন্ম হয়েছিল তখন গোটা বিশ্বজুড়ে চলছে প্রথম বিশ্বযু*দ্ধ। হল্যান্ডের আমস্টারডামে জন্ম হলেও ঔডারল্যান্ডের পিতৃভূমি অবশ্য ছিল অস্ট্রেলিয়ার পার্থে। মাত্র ৬ বছর বয়সে স্কুলে ভর্তি হয়েছিলেন ঔডারল্যান্ড। কিন্তু কয়েক বছর পড়াশোনা করার পর অবশ্য জীবিকার সন্ধানে তাকে পড়াশোনা ছেড়ে দিতে হয়। মাত্র ১৭ বছর বয়সে ঔডারল্যান্ড কাজ নিলেন এক কোম্পানিতে জুতা পালিশের কাজের। সালটা ১৯৩৪। এর কিছুদিন পর সে বছরই সেই চাকরি ছেড়ে যোগ দিলেন জুতা প্রস্তুতকারক বাটা কোম্পানিতে। দু বছর বাটা কোম্পানিতে কাজ করার পর চাকরি ছেড়ে ১৯৩৬ সালে জার্মানি যখন নেদারল্যান্ডস দখল করলো তার ঠিক কিছুদিন আগে  ঔডারল্যান্ড ওলন্দাজ জাতীয় সামরিক বাহিনীতে নাম লেখালেন। একসময় তিনি রয়্যাল সিগনাল কোরে সার্জেন্ট পদে যোগ দিলেন। এসময় তার দলে ছিল ৩৬ জন সদস্য। আর ১৯৩৯ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে ঔডারল্যান্ড যোগ দিলেন ওলন্দাজ বাহিনীর গেরিলা কমান্ডার হিসেবে। একটা সময় জার্মানির হিটলারের নাৎসি বাহিনী যখন নেদারল্যান্ডস, ফ্রান্স ও বেলজিয়াম দখল করলো তখন নাৎসি বাহিনী ঔডারল্যান্ডকে গ্রেপ্তার করে কারাগারে পাঠালো। কিন্তু তিনি কারাগার ছেড়ে পালালেন।  জার্মানি থেকে যুদ্ধ ফেরত সৈন্যদের প্রশিক্ষণ দিতেন তিনি। জার্মান ও ওলন্দাজ ভাষা জানতেন ঔডারল্যান্ড, আর তাই ওলন্দাজদের গোপন প্রতিরোধ আন্দোলনের হয়ে গুপ্তচর হিসেবে কাজ করেছিলেন তিনি।

    ষাটের দশকের দিকে আবার বাটা কোম্পানিতে ফিরে এলেন ঔডারল্যান্ড। কাজ করেছিলেন বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে। ১৯৭০ সালের শেষ দিকে বাটা শু কোম্পানি পূর্ব পাকিস্তানে বাটা’র প্রোডাকশন ম্যানেজার করে পাঠায় তাকে। ঢাকায় আসার পর কাজে যোগ দিলেন তিনি। তখন পূর্ব পাকিস্তান থেকে ভারতবর্ষ জুড়েই বাটা’র বিপুল চাহিদা। বাটার তখন রমরমা অবস্থা। ঔডারল্যান্ডের  চৌকস আর বুদ্ধিমত্তার জন্য বাটা কোম্পানি আরো প্রভাব বিস্তার করছে। বাটা কোম্পানি দেখলো ঔডারল্যান্ডকে পূর্ব পাকিস্তানের বাটাতে কর্মরত সমস্ত কর্মকর্তা থেকে কর্মচারী কারখানার কর্মী সবাই প্রচণ্ড ভালোবাসে শ্রদ্ধা করে তার কাজের জন্য। বাটার ব্যবসায়িক সাফল্যের তিনি নিজে একা কৃতিত্ব নিতেন না, বলতেন সবাই এর প্রাপ্য। অসম্ভব কর্মীবান্ধব ছিলেন। বাংলাদেশে আসার মাত্র তিন মাসের মাথায় প্রোডাকশন ম্যানেজার থেকে নির্বাহী পরিচালক হলেন তিনি।

    ১৯৭১ এর পহেলা মার্চ  ভুট্টোর সাথে আঁতাত করে প্রেসিডেন্ট ইয়াহিয়া খান জাতীয় পরিষদের অধিবেশন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করলে সমগ্র পূর্ব পাকিস্তানের মানুষ ফেটে পড়ে। শুরু হয় আন্দোলন। বঙ্গবন্ধুর ডাকে অসহযোগ আন্দোলন শুরু হলো। তখন টঙ্গীতে বাটা কোম্পানির কারখানাতেও এর প্রভাব পড়লো। ৫ মার্চ গাজীপুরের টঙ্গীতে মেঘনা টেক্সটাইল মিলের সামনে শ্রমিক জনতার বিক্ষোভ মিছিলে পাকিস্তানি প্রশাসনের নির্দেশে ইপিআর গুলি চালালো। ঘটনাস্থলে গুলিতে ৪ জন নিহত হলেন এবং আহত হলেন ২৫ জন। স্বচক্ষে ঔডারল্যান্ড দেখলেন এই তাণ্ডব।

    চোখ মুখ বুজে এই অসহনীয় দৃশ্য এড়ানোর চেষ্টা করেও বশে আনতে পারলেন না তিনি। ৭ মার্চ রেসকোর্সে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ দারুণভাবে উদ্দীপ্ত করেছিল ঔডারল্যান্ডকে। তিনি দেখেছিলেন একটি জাতির স্বাধীনতা আর মুক্তির আকাঙ্ক্ষা কতোখানি তীব্র হতে পারে। তিনি পেয়েছিলেন এই অসহায়র্ত মানুষগুলোর মধ্যে মুক্তির স্বপ্ন। ২৫ মার্চ কালরাতে তো ঢাকাসহ দেশের বড় শহরগুলোতে নারকীয় গণহত্যা চালালো পাকিস্তানি হানাদারেরা। ২৬ মার্চ প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু ডাক দিলেন স্বাধীনতার। ২৫ মার্চ কালরাতে ঢাকায় হানাদারদের গণহত্যা দেখে ও খবর শুনে প্রচণ্ড মর্মাহত হলেন তিনি।

    দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে চলমান নাৎসি বাহিনীর বর্বরতা ও নৃশংসতা তিনি দেখেছিলেন স্বচক্ষে। আর তার ২৯ বছর পর মুক্তিযুদ্ধের সময়ের বীভৎসতা আর নির্মমতা যেন হার মানলো সব কিছু ছাপিয়ে। মুক্তিযুদ্ধের শুরুর দিকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর নৃশংস নির্যাতন ও গণহত্যার আলোকচিত্র তুলে গোপনে বহিঃবিশ্বের বিভিন্ন তথ্যমাধ্যমে পাঠিয়েছিলেন ঔডারল্যান্ড। এক পর্যায়ে ঔডারল্যান্ড ছবি তোলার বদলে কৌশলগতভাবে সরাসরি যুদ্ধে অংশ্রগহণের সিদ্ধান্ত নিলেন।

    বাটা শু-কোম্পানির মতো বহুজাতিক একটি প্রতিষ্ঠানের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হওয়ার কারণে পশ্চিম পাকিস্তানে অবাধ যাতায়াত ছিল ঔডারল্যান্ডের। পাকিস্তানের উচ্চপদস্থ আমলাদের সঙ্গে তার সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে পূর্বের উচ্চ পর্যায়ে তার যোগাযোগ থাকার কারণে তার সঙ্গে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে পাকিস্তানি সামরিক বাহিনীর গুরুত্বপূর্ণ নীতি নির্ধারকদের সঙ্গে। আর এটাই যেন সূবর্ণ সুযোগ হয়ে আসে ঔডারল্যান্ডের জন্য। তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন বাংলাদেশের স্বাধীনতার জন্য কাজ করবেন গোপনে। তাই গুরুত্বপূর্ণ সামরিক প্রশাসকদের সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ে তোলেন। প্রথমে ঢাকা সেনানিবাসের ২২ বেলুচ রেজিমেন্টের অধিনায়ক লেফট্যানেন্ট কর্ণেল সুলতান নেওয়াজের সঙ্গে সখ্য গড়ে উঠে তার। সেই সুবাদে শুরু হয় তার ঢাকা সেনানিবাসে অবাধ যাতায়াত। ধীরে ধীরে তিনি ঘনিষ্ঠ হয়ে পড়েন উচ্চ পদস্থ সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে। এক পর্যায়ে লেফট্যানেন্ট জেনারেল টিক্কা খান, পূর্বাঞ্চলীয় কমান্ডার লেফট্যানেন্ট জেনারেল আমির আবদুল্লাহ খান নিয়াজী, পূর্ব পাকিস্তানের সামরিক উপদেষ্টা মেজর জেনারেল রাও ফরমান আলিসহ আরো অনেক সামরিক বেসামরিক কর্মকর্তাদের সাথে হৃদ্যতার সম্পর্ক গড়ে ওঠে ঔডারল্যান্ডের। নিয়াজীর ইস্টার্ন কমান্ড হেডকোয়ার্টার তাকে ‘ বিশেষ সম্মানিত অতিথি’ হিসাবে সম্মানিত করেছিল। নিয়াজীর অন্যতম প্রিয় বন্ধুত্বে পরিণত হন তিনি। তাকে সব ধরনের ‘নিরাপত্তা ছাড়পত্র’ দেয়া হয়েছিল।  ক্যান্টনমেন্টে তার যাতায়াত ছিল অবাধ। সেনাবাহিনীর নানা অনুষ্ঠানে তাকে আমন্ত্রিত করা হতো এবং সামরিক বাহিনীর আলোচনাতেও তার বিচরণ ছিল।

     কিন্তু এতোসবের মধ্যেও তার বিশেষ উদ্দেশ্য ছিল। তিনি চর হিসেবে ভিতরে ভিতরে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সংগ্রহ করতেন। পাকিস্তানি বাহিনীর কাছ থেকে প্রাপ্ত সকল সংগৃহীত সংবাদ তিনি গোপনে প্রেরণ করতেন ২নং সেক্টর এর ক্যাপ্টেন এ. টি. এম. হায়দার এবং জেড ফোর্সের কমান্ডার মেজর জিয়াউর রহমানের কাছে। মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষে বিশ্ব জনমত গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তার অবদান অসীম।

    .গোপনে মুক্তিযোদ্ধাদের খাদ্যদ্রব্য সরবরাহ, আর্থিক সহায়তা এবং অন্য সকল সম্ভাব্য উপায় তো ছিলই। মুক্তিযুদ্ধের মাঝামাঝি সময়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে গেরিলা কমান্ডো হিসেবে স্বীয় অভিজ্ঞতা কাজে লাগালেন ঔডারল্যান্ড।

    .টঙ্গীতে বাটা কারখানা প্রাঙ্গণসহ কয়েকটি গোপন ক্যাম্পে মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়মিত গেরিলা প্রশিক্ষণ দিতে শুরু করলেন তিনি। কমান্ডো হিসেবে তিনি ছিলেন অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং বিস্ফোরক বিশেষজ্ঞ। কীভাবে ব্রিজ ও কালভার্ট ধ্বংস করে  পাকিস্তানি হানাদারদের যোগাযোগ ব্যবস্থা বিপর্যস্ত করতে হবে তা পরিকল্পনা করেন তিনি।

    তার পরিকল্পনায় ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকায় বহু অপারেশন হয়েছে, উড়িয়ে দেয়া হয়েছে ব্রিজ, কালভার্টসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। আগস্ট মাসের শুরুর দিকে টঙ্গীতে বাটা কোম্পানির ভেতরে গেরিলা ট্রেনিং এর ব্যবস্থা করেন ঔডারল্যান্ড। পরিচিতদের মাধ্যমে মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য খাদ্য ও ওষুধ এবং আশ্রয় দিয়ে সাহায্য করেছিলেন । টঙ্গী ও এর আশেপাশের এলাকায় বহু সফল গেরিলা হামলার আয়োজকও ছিলেন ঔডারল্যান্ড।

    তিনি নিজেই লিখেছিলেন, “ইউরোপের যৌবনের অভিজ্ঞতাগুলো আমি ফিরে পেয়েছিলাম। মনে হচ্ছিল, বাংলাদেশে যা কিছু ঘটছে বিশ্ববাসীকে সেসব জানানো উচিত।” দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে চলমান নাৎসি বাহিনীর বর্বরতা ও নৃশংসতা তিনি দেখেছিলেন স্বচক্ষে। মুক্তিযুদ্ধের সময় ঢাকাস্থ অস্ট্রেলিয়ান ডেপুটি হাইকমিশনের গোপন সহযোগিতা পেতেন তিনি। ১৬ ডিসেম্বর পাকিস্তানি হানাদারেরা  আত্মসমর্পণ করলে ঢাকায় ফিরে আসেন ঔডারল্যান্ড।

    বাংলাদেশে স্বাধীনতার পর আরো ৬ বছরের বেশি সময় বাটা কোম্পানিতে চাকরি করেছিলে উইলিয়াম ঔডারল্যান্ড। ১৯৭৮ সালে বাটা কোম্পানির চাকরি থেকে অবসরের পর তিনি ফিরে গেলেন তার নিজের পিতৃভূমি অস্ট্রেলিয়ায়।

    মহান মুক্তিযুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ অংশগ্রহণ ও অসামান্য নৈপুণ্যের কারণে পরবর্তীকালে বাংলাদেশ সরকার উইলিয়াম ঔডারল্যান্ডকে  “বীরপ্রতীক”  সম্মাননায় ভূষিত করে।  স্বাধীনতা যুদ্ধে বীরপ্রতীক পুরস্কারপ্রাপ্তদের তালিকায় তার নাম ছিল ২ নম্বর সেক্টর গণবাহিনী- ৩১৭ নম্বর। ১৯৯৮ সালের ৭ মার্চ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক  খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা ও সনদপত্র বিতরণ অনুষ্ঠানে ঔডারল্যান্ডকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। কিন্তু তিনি অসুস্থ থাকায় আসতে পারেননি। আর বীরপ্রতীক হিসেবে পাওয়া তার সম্মানীর টাকা দান করে দিয়েছিলেন মুক্তিযোদ্ধা কল্যাণ ট্রাস্টে।

     বাংলাদেশে ছেড়ে যাওয়ার পরও আমৃত্যু এদেশকে স্মরণ করেছিলেন উইলিয়াম ঔডারল্যান্ড। কেবল তাই নয় মৃত্যুর পূর্বমুহূর্ত পর্যন্ত অত্যন্ত গর্ব ভরে ও শ্রদ্ধার্ঘ্য চিত্তে নিজের নামের শেষে বীরপ্রতীক খেতাবটি লিখতেন তিনি। ২০০১ সালের ১৮ মে চিরতরে ঘুমিয়ে গেলেন কিংবদন্তী যোদ্ধা উইলিয়াম আব্রাহাম সাইমন ওডারল্যান্ড।

    একটি স্বাধীন দেশের জন্য উইলিয়াম ঔডারল্যান্ডের ত্যাগ অবর্ণনীয়। এ দেশ তার জন্মভূমি ছিল না। এসেছিলেন তিনি এদেশে কেবল চাকরির সূত্রে। অল্পদিনেই ভালোবেসে ফেলেছিলেন এদেশের মাটি ও মানুষকে। সেই ভালোবাসা যে এতোটাই তীব্র ছিল যে নিজের প্রাণের ঝুঁকি থাকা সত্ত্বেও তিনি এক ইঞ্চি পরিমাণও বিচ্যুত হননি। ধরা যাক তিনি যদি  ধরা পড়তেন তবে তার উপর নেমে আসতো অত্যাচারের নির্মম খড়গ। যতো আপনই হোক না কেন গুপ্তচরবৃত্তির অপরাধে তাকে হত্যা করতেও দ্বিধা করতো না হানাদারেরা। এর সবই জানতেন ঔডারল্যান্ড। কিন্তু তবুও নিজের আদর্শ, মানুষের প্রতি ভালোবাসা, স্বাধীনতা ও মুক্তির প্রতি তীব্র আবেগ তাকে উদ্বেলিত করেছিল, তাইতো তিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন এই দেশের মানুষের মুক্তির জন্য, স্বাধীনতার জন্য।

    ২০০১ সালের ১৮ মে প্রয়াত হন বাংলাদেশের এই অকৃত্রিম বন্ধু। বাংলাদেশ যতদিন থাকবে, বাংলার স্বাধীনতা যতকাল থাকবে উইলিয়াম আব্রাহাম সাইমন ঔডারল্যান্ড থাকবেন প্রতিটি মুক্তিপ্রাণ বাঙালির প্রাণে। ঔডারল্যান্ড থাকবেন এদেশের মানুষের ভালোবাসায়। এদেশের মানুষ চির শ্রদ্ধায় স্মরণ করবে তাকে।সংগৃহীত

    Share. Facebook WhatsApp Copy Link
    Previous Articleবিএনপি নেতাদের চাঁদা না দেয়ায় ৮ তরুণ-তরুণীকে আটকে বিয়ে!
    Next Article ২০ জানুয়ারি বিমানে বোমা হামলার বার্তা আসে পাকিস্তানি নম্বর থেকে
    JoyBangla Editor

    Related Posts

    আদালত প্রাঙ্গনে আবারও উগ্রবাদীদের হামলা: আওয়ামী লীগ নেতার উপর নৃশংস আক্রমণ

    June 30, 2025

    জাফলংয়ে দুই উপদেষ্টার গাড়ি আটকে ভুয়া ভুয়া স্লোগান

    June 14, 2025

    সিলেটে আওয়ামী নেতা শাহ আসাদুজ্জামানের বাসায় বিএনপি ও জামাতের হামলা,ভাঙচুর ও টাকা লুট

    May 18, 2025

    সিলেটের বালাগঞ্জে সংঘর্ষে নিহত যুবলীগ নেতা লয়লুছ মিয়া

    May 18, 2025
    Leave A Reply Cancel Reply

    সম্পাদকের পছন্দ

    ইউনুস মাস্ট গো. . .

    July 1, 2025

    বিজয় সরণিতে মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ভাস্কর্য ‘মৃত্যুঞ্জয়ী প্রাঙ্গণ’ ভেঙে ফেলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিবৃতি

    June 30, 2025

    পদ্মাসেতু নিয়ে সবার মন্তব্য ভুল প্রমাণিত করেছিলেন শেখ হাসিনা

    June 28, 2025

    পারমানবিক যুগে প্রবেশ করলো বাংলাদেশ

    June 28, 2025
    • Facebook
    • Twitter
    • Instagram
    • TikTok
    মিস করবেন না
    Bangladesh

    মুরাদনগরের লজ্জা: ধর্ষক ধর্ষকই, নেই অন্য পরিচয়

    By JoyBangla EditorJuly 1, 20250

    ।। কবির য়াহমদ।। কে কোথায় কোন ‘মাফিয়া বাহিনী’ দ্বারা আশ্রিত বা পুনর্বাসিত, এসব দাবি-প্রচারণা ধর্ষকের…

    মঈনপুর বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় (ESTD-১৯২৮) প্রাক্তন ও বর্তমান ছাত্র-ছাত্রীর ব্যতিক্রমী প্রশংসনীয় উদ্যোগ

    July 1, 2025

    আসিফ মাহমুদ সজীবের যত কাণ্ড

    July 1, 2025

    ইউনুস মাস্ট গো. . .

    July 1, 2025

    সাবস্ক্রাইব

    সর্বশেষ খবরের সাথে আপডেট থাকুন।

    About Us
    About Us

    মুক্তিযুদ্ধের চেতনা ধারণ ও লালন করে দেশ ও বিদেশের খবর পাঠকের কাছে দুত পৌছে দিতে জয় বাংলা অঙ্গিকার বদ্ধ। তাৎক্ষণিক সংবাদ শিরোনাম ও বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পেতে জয় বাংলা অনলাইন এর সঙ্গে থাকুন পতিদিন।

    Email Us: info@joybangla.co.uk

    Our Picks

    ইউনুস মাস্ট গো. . .

    July 1, 2025

    বিজয় সরণিতে মহান মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি ভাস্কর্য ‘মৃত্যুঞ্জয়ী প্রাঙ্গণ’ ভেঙে ফেলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিবৃতি

    June 30, 2025

    পদ্মাসেতু নিয়ে সবার মন্তব্য ভুল প্রমাণিত করেছিলেন শেখ হাসিনা

    June 28, 2025

    Type above and press Enter to search. Press Esc to cancel.