মাহবুব সাদিক
আর এক দিন পরই শুরু হতে যাচ্ছে বাংলাদেশের একুশে বইমেলা ২০২৫। এই মেলা ঘিরে আমার প্রত্যাশা তেমন কিছু নেই। মেলায় খুব যে ভালো বই প্রকাশিত হচ্ছে তা নয়। সময়টা এমন। ভালো বইয়ের সংখ্যা যেমন কমেছে, তেমনি ভালো পাঠকের সংখ্যাও কমেছে। এতসব প্রতিকূলতা সত্ত্বেও ভালো বই বের হলে আমাদের জন্য আনন্দের হতো। লেখকরা যদি ভালো বই বের করতেন, তাহলে হয়তো আমরা অনেক বই সংগ্রহ করতে পারতাম।
ভারতীয় বইমেলা আমি দেখেছি। খুব একটা তফাত নেই। ভালো বই যেমন বের হয়, তেমনি খারাপ বইও বের হয়। প্রচুর খারাপ বই বের হওয়ার নজির ওখানে যেমন আছে, এখানেও আছে। নির্বাচিত কিছু ভালো লেখক ছাড়া তো কারো বই তেমন পড়া হয় না। আসলে খুব একটা ঘর ছেড়ে বের হই না, এটাই একটা সমস্যা। তবে চিরকালই ভালো লেখকের সংখ্যা কম। এটা আমাদের মানতেই হবে। ভারতীয় বইমেলার চেয়ে আমাদের বইমেলা আকারে-প্রকারে একটু বড়। বইও হয়তো আমাদের এখানে একটু বেশিই বের হয়। আমাদের লেখককুল যে খুব একটা ভালো তা জোর দিয়ে বলা যায় না, তবে…(এসব কথা বলার দরকার নেই আর কি)।
মেলায় আগে থেকে ভালো পরিকল্পনা থাকে না, এটাই মুশকিল। ট্র্যাডিশনালি প্রতিবছর যা হয় এবারও হয়তো তা-ই হবে। সে রকমই হবে, সে রকম করেই তারা চেষ্টা করছে। নতুন পরিকল্পনা তেমন নেই। এর মধ্যে কী আর ভাবব, কী প্রত্যাশা রাখব? এর চেয়ে কী আর ভালো আশা করব? খুব বেশি ভালো হওয়ার সম্ভাবনা আমাদের দেশে নেই। বইমেলা আরো সুন্দর, সুশৃঙ্খল করতে বা আরো পাঠকবান্ধব করতে হলে মেলা প্রাঙ্গণ কেমন সাজবে, ভাবনার বিষয় এটি হওয়া উচিত নয়। বইমেলা হবে লেখককেন্দ্রিক, ভালো বই কেন্দ্রিক। শুধু ভালো লেখকরা যদি তাঁদের ভালো ভালো বই প্রকাশ করতেন, ভালো লেখকের সংখ্যা যদি আমাদের বেশি হতো বা পর্যাপ্ত ভালো লেখক থাকত, তাহলেই একটা মেলা চমৎকার হয়ে উঠত। মেলার যেসব ব্যাপার তা হলো মেলা সাজানো কেমন, স্টলগুলো দেখতে কেমন—এগুলো খুব গৌণ বিষয়। মূল ব্যাপারটা হলো ভালো বইয়ের প্রকাশ। এটি যদি হতো তাহলে খুব ভালো হতো। শুধু ঢাকাকেন্দ্রিক নয়, মেলা হওয়া উচিত সারা দেশ কেন্দ্রিক। তাহলে প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে কিছু লেখক-পাঠক অন্তত বেরিয়ে আসত। আমাদের সেদিকে নজর দিতে হবে।
এবার বইমেলায় আমার কোনো বই বের হচ্ছে না। তবে শাহানা মাহবুব সাদিকের একটা কবিতার বই বের হচ্ছে। বইয়ের নাম ‘অন্তর্লীন আলোর আঁধার’। এটা সাত নম্বর কাব্য। বের হবে সাহিত্য প্রকাশ থেকে।