কলকাতা শহরের রাস্তায় মঙ্গলবার দেখা গেল অন্য ধরনের ছবি। রাজপথে রিকশা চালাচ্ছেন শাসকদলের এক বিধায়ক। তিনি আর কেউ নন, মনোরঞ্জন ব্যাপারী। হুগলীর বলাগড়ের বিধায়ক। তবে এই রিকশায় বিধানসভায় যেতে চার বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। কলকাতায় গাড়ির সংখ্যা বেশি। সেখানে প্যাডেল রিকশা চললে যানজটের সৃষ্টি হবে বলে আপত্তি তোলা হয়েছিল। যদিও এসব বাধা মানতে নারাজ ছিলেন মনোরঞ্জন। নানা চেষ্টা করার জেরে চার বছর পর বিধানসভায় রিকশা চালিয়ে যাওয়ার অনুমতি পান তিনি।
তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক তথা দলিত সাহিত্য অ্যাকাডেমির প্রতিষ্ঠাতা মনোরঞ্জন ব্যাপারী মঙ্গলবার সকাল ৯টায় কিড স্ট্রিটের বিধায়ক আবাস থেকে রিকশা চালিয়ে বিধানসভা অভিমুখে যাত্রা করেন। এই নিয়ে এখন জোর চর্চা শুরু হয়েছে। খেটে খাওয়া মানুষের প্রতিনিধি হিসেবে নিজেকে বারবার উল্লেখ করেছেন মনোরঞ্জন। তাই এই সিদ্ধান্ত বলে জানিয়েছেন তিনি।
রিকশায় বিধানসভা যাত্রার প্রাক্কালে ফেসবুকে একটি দীর্ঘ পোস্ট করেছেন মনোরঞ্জন। নিজের মতামত খোলাখুলি জানিয়েছেন। গ্রামবাংলার সংস্কৃতির প্রতি কলকাতার নাগরিকদের পরোক্ষ অবজ্ঞা যেন ফুটে উঠেছে তার লেখায়।
বিধায়ক হয়েও মনোরঞ্জন ব্যাপারীর সাধারণ জীবনযাপন সকলেরই জানা। এখানে কোনও মেকি রাজনীতির বিষয় নেই। তিনি জেলায় টোটোও চালিয়েছেন। শ্রমজীবী মানুষেরই প্রতিনিধি হিসেবেই থাকতে চান তিনি। তাতে তার কোনও লজ্জা নেই।
উল্লেখ্য, মনোরঞ্জন ব্যাপারী এক সময় প্রকৃত অর্থেই রিকশাচালক ছিলেন। একদিন তার রিকশায় সওয়ারি ছিলেন লেখিকা মহাশ্বেতা দেবী। লেখিকার কাছে একটি শব্দের অর্থ জানতে চান। শব্দটি শুনে লেখিকা উনার সম্পর্কে জানতে উৎসাহী। নিজস্ব পত্রিকা বর্তিকায় লিখতে বলেন। শুরু হয়েছিল রিকশা চালকের সাহিত্যিক জীবন। মনোরঞ্জনের লেখা বইয়ের সংখ্যা অনেক। বিদেশি ভাষাতেও অনুদিত হয়েছে। দলিত সাহিত্যের তিনি একজন প্রথম সারির লেখক তিনি।