ইউক্রেন যুদ্ধের অবসান ঘটাতে সম্মত হয়েছে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্র। শুধু তাই নয় কূটনৈতিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নেও কাজ শুরু করতে সম্মত হয়েছে প্রতিদ্বন্দ্বী দুই পরাশক্তি। এ অবস্থায় ফের ইউরোপীয় দেশগুলোর মধ্যে বৈঠকের ডাক দিয়েছেন ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ।
গতকাল মঙ্গলবার সৌদি আরবের রিয়াদে ওয়াশিংটন ও মস্কোর প্রতিনিধিদের সাড়ে চার ঘণ্টা বৈঠকে কোনো ইউক্রেনীয় কর্মকর্তাকে রাখা হয়নি। সেই সঙ্গে কোনো ইউরোপীয় দেশের প্রতিনিধিদেরও ডাকা হয়নি সেখানে।
বৈঠক শেষে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও এবং রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সার্জেই ল্যাভরভ জানান, উভয় পক্ষই তিনটি লক্ষ্য পূরণে ব্যাপকভাবে সম্মত হয়েছে: ওয়াশিংটন ও মস্কোতে তাদের নিজ নিজ দূতাবাসে কর্মী পুনরুদ্ধার, ইউক্রেন শান্তি আলোচনার জন্য একটি উচ্চ পর্যায়ের দল গঠন এবং দুই দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা খোঁজা।
এর আগে ট্রাম্পের পূর্বসূরি জো বাইডেন রাশিয়াকে একঘরে করার আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টার নেতৃত্ব দেন। সেই প্রচেষ্টায় যুক্ত ছিল বেশিরভাগ ‘শক্তিশালী’ ইউরোপীয় দেশ। তবে ট্রাম্প ক্ষমতায় আসার পর থেকেই রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠকের পথ প্রশস্ত করতে কাজ শুরু করেন। এর ফলস্বরূপ রিয়াদে সাম্প্রতি রুশ-মার্কিন বৈঠক অনুষ্ঠিত হলো।
ফরাসি আঞ্চলিক সংবাদপত্রকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ম্যাক্রোঁ জানান, তিনি কয়েকটি ইউরোপীয় ও অ-ইউরোপীয় দেশের সঙ্গে আবারও জরুরি বৈঠকের পরিকল্পনা করছেন। স্থানীয় সময় বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) বিকালে এই আলোচনা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা।
সাক্ষাৎকারে ম্যাক্রোঁ রাশিয়াকে ‘ইউরোপীয়দের জন্য অস্তিত্বের জন্য হুমকি’ উল্লেখ করে বলেন, রাশিয়া আমাদের শত্রু বানানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমাদের চোখ খুলতে হবে, হুমকির মাত্রা উপলব্ধি করতে হবে এবং নিজেদের রক্ষা করতে হবে।
মস্কোর সঙ্গে ‘অতীতের ভুলগুলো’ স্বীকার করে তিনি বলেন, এখন সময় এসেছে পদক্ষেপ নেওয়ার। আমরা যদি কিছু না করি, যদি আমরা হুমকির প্রতি অন্ধ থাকি, যুদ্ধ আমাদের সীমান্তের আরও কাছাকাছি চলে আসবে।
তিনি ‘যুদ্ধের চেয়ে আলোচনায়’ জোর দেন বলে ইঙ্গিত দিয়েছেন। বলেন, প্যারিস অবশ্যই ইউক্রেনে স্থল সেনা পাঠানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে না।
এর আগে গত সোমবারও রাশিয়ার বিষয়ে ওয়াশিংটনের ‘নীতি পরিবর্তনের’ ইঙ্গিত পেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ইউরোপীয় নেতাদের পাশাপাশি ন্যাটো ও ইইউ প্রধানদের জরুরি আলোচনার ডাক দিয়েছিলেন ম্যাক্রোঁ।