গত অর্থবছরের তুলনায় চলতি অর্থবছরে জানুয়ারিতে বাংলাদেশে ভারতীয় পণ্যের আমদানি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। এ বছর জানুয়ারিতে ১৭ শতাংশ বেশি পণ্য আমদানি করেছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশে শেখ হাসিনার সরকার পতনের পর, ভারত এবং বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক কিছুটা টানাপোড়েনের মুখে পড়লেও বাণিজ্যে তেমন কোনো প্রভাব পড়েনি। উল্টো, ভারতীয় পণ্যের আমদানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০২৪ সালের জানুয়ারির তুলনায় ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে আমদানি ১৭.২৭ শতাংশ বেড়েছে। গত জানুয়ারিতে ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রায় ৯ হাজার ৩৭৪ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা (ভারতীয় মুদ্রায়) মূল্যের পণ্য আমদানি করেছে। গত বছরের জানুয়ারিতে এটি ছিল প্রায় ৭ হাজার ৯৯৯ কোটি ৬৬ লক্ষ টাকা।
কেবল জানুয়ারি মাসেই নয়, গত ১০ মাসের হিসাবেও আমদানি বেড়েছে। গত অর্থবছরের (২০২৩-২৪) এপ্রিল থেকে জানুয়ারি পর্যন্ত ভারত থেকে আমদানি ছিল ৭৬ হাজার ৭৯৬ কোটি ১৩ লক্ষ টাকা, যা চলতি অর্থবছরে (২০২৪-২৫) একই সময়ের মধ্যে বেড়ে ৮১ হাজার ৮৯২ কোটি ৫৩ লক্ষ টাকায় দাঁড়িয়েছে।
ভারত থেকে আমদানি বৃদ্ধির তালিকায় আলু, পেয়াজ, ডিম এর সাথে যোগ হয়েছে চালও। যেই হারে ভারত থেকে আমদানি বেড়েছে, ঠিক একই হারে রপ্তানি বাড়ে নাই, বড়ন রপ্তানি পূর্বের চেয়ে কমেছে। গত ৭ মাসে বাণিজ্য ভারতে সাথে ঘটতি প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছে।
বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে, গত কয়েক মাসে বাংলাদেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে কিছু পরিবর্তন হয়েছে। হাসিনা সরকারের পতনের পর ভারতের সাথে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক নিয়ে নানা আলোচনা ও উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। তবে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের উন্নতির জন্য গত বছরের শেষ দিকে ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিক্রম মিস্রী বাংলাদেশ সফর করেন। এছাড়া, সম্প্রতি ওমানের মাস্কাটে ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর ও বাংলাদেশের বিদেশ উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেনের মধ্যে বৈঠক হয়েছে।
“দেশের জনগনের মাঝে যেহারে ভারত বিরোধী মনোভাব দেখা যাচ্ছে বা ভারতের সাথে সমানে সমানে চোখে চোখ রেখে বাণিজ্য করার হুমকি দিচ্ছিলেন উপদেষ্টা মাহফুজ আলম থেকে শুরু করে বাকিরা, আদতে সেটা বাস্তবে ঘটতে দেখা যাচ্ছে না। বাস্তবে ঘটোছে ঠিক উলটো, ভারত নির্ভরতা বাড়ছে বরং” বলছিলেন প্রাক্তন এক সচিব।
যদিও কিছুদিন আগে ভারতে ইলিশ মাছ পাঠানোর অভিযোগে বা সীমান্তে অস্থিরতার অভিযোগে বৈষম্যবিরোধীদের “দিল্লী না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা” স্লোগানে প্রকম্পিত হচ্ছিল ঢাকার রাজপথ, এখন আর সেইসকল ইস্যুর লেশমাত্র নেই। নেটিজেনদের এমন সব মন্তব্যের মাঝে এও বলছেন অনেকে যে, “হাসিনা সরকার যাও বা ভারত নির্ভরতা কমাতে অন্যান্য দেশের সাথে বাণিজ্য করেছে, কিন্তু এ সরকার দেখা যাচ্ছে পুরোপুরি ভারত নির্ভর হয়ে যাচ্ছে। তাহলে কি ইউনুস সরকার হাসিনার থেকে কম মূল্যে ভারতের কাছে দেশ বিক্রি করে দিল?”
সাবস্ক্রাইব
সর্বশেষ খবরের সাথে আপডেট থাকুন।
আমদানিতে “ভারত নির্ভরতা” আগের চেয়ে বেড়েছে, একপাক্ষিক বাণিজ্যে কমেছে রপ্তানি
Previous Articleএবার ওয়াশিংটনে আ.লীগ নেতাকর্মীদের তোপের মুখে দূতাবাস কর্মকর্তা