বিশ্ব নারী দিবস উপলক্ষে বাংলাদেশসহ বিশ্বের সকল প্রান্তের নারীদের প্রতি শুভেচ্ছা। নারী-পুরুষের যৌথ প্রয়াসে মানব সভ্যতার বিকাশ, উন্নয়ন ও অগ্রগতি সাধিত হয়েছে। তার পরও পৃথিবীর সকল রাষ্ট্র বা সমাজে নারীরা সমানাধিকার থেকে বঞ্চিত। নারীরা পৃথিবীর জনগোষ্ঠীর প্রায় অর্ধেক। তাদেরকে পিছিয়ে রেখে মানবসভ্যতাকে মসৃণভাবে এগিয়ে নেওয়া যাবে না।
বৈশ্বিক প্রেক্ষাপটে পুরুষদের তুলনায় নারীদের প্রযুক্তি এবং ইন্টারনেট ব্যবহার সীমিত। বাংলাদেশের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে নারীদের এগিয়ে নিতে আওয়ামী লীগ সরকার সর্বদা কাজ করেছে। সমাজ ও রাষ্ট্রে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে আওয়ামী লীগ সর্বদা সুনির্দিষ্ট নীতি ও আদর্শকে সামনে রেখে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। আওয়ামী লীগের আমলে সরকারের জাতীয় ও স্থানীয় পর্যায়ে নারীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করার লক্ষ্য নারীর জন্য সংরক্ষিত কোটা ব্যবস্থার প্রচলন করা হয়।
চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের এই যুগে জ্ঞানভিত্তিক দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার জন্য নারী-পুরুষ সবাইকে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে সরকার তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ে প্রশিক্ষণের আওতায় নিয়ে এসেছিল। বিজ্ঞান ও তথ্য-প্রযুক্তি জ্ঞানসহ শিক্ষা, স্বাস্থ্য, ক্রীড়া, সাংস্কৃতিক চর্চা, কর্মে অংশগ্রহণ ও কর্মসংস্থানে সুযোগের পাশাপাশি সার্বিকভাবে নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের অবদান সব থেকে বেশি। নারীর কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ও উদ্যোক্তা তৈরিতে জয়িতা ফাউন্ডেশনের অনলাইন মার্কেট প্লেস ‘ই-জয়িতা’ চালু করা হয়েছে।
তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে দেশের নারী ও শিশুর উন্নয়নে ভূমিকা রাখার জন্য অর্জিত হয়েছে জাতিসংঘের সাউথ-সাউথ পুরস্কার। নারীর ক্ষমতায়নে সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবে আমরা অর্জন করেছি জাতিসংঘ কর্তৃক ‘প্ল্যানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন’ ও ‘এজেন্ট অব চেঞ্জ’ অ্যাওয়ার্ড। শিক্ষায় লিঙ্গ সমতা আনার স্বীকৃতিস্বরূপ ইউনেস্কোর ‘শান্তি বৃক্ষ’ এবং গ্লোবাল উইমেনস লিডারশিপ অ্যাওয়ার্ড- ২০১৮। দারিদ্র্য দূরীকরণ, পৃথিবীর সুরক্ষা ও সবার জন্যে শান্তি-সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে উদ্যোগ গ্রহণ করায় ২০২১ সালে অর্জিত হয়েছে ‘এসডিজি অগ্রগতি পুরস্কার’।
অথচ আজকের বাংলাদেশে জনগণের জানমালের কোনো নিরাপত্তা নেই। অবৈধ দখলদার ফ্যাসিস্ট ইউনূস গং ক্ষমতা দখলের পর নারীর ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবন মারাত্মকভাবে সংকটাপন্ন। সর্বত্র নারীকে বিভিন্ন ধরনের হয়রানির মুখোমুখি হতে হচ্ছে। নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা অতীতের চেয়ে কয়েকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। সংবাদমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নারী ও শিশুকে ধর্ষণ বা গণধর্ষণ এবং তার পর হত্যার সংবাদে সয়লাব। নারী ও শিশুর প্রতি বিরামহীনভাবে সংঘটিত ধর্ষণ ও হত্যার মতো সন্ত্রাস ও সহিংসতা যে কোনো সংবেদনশীল মানুষের হৃদয়কে বিদীর্ণ করলেও সেই আর্তনাদ ফ্যাসিস্ট ইউনূস গংদের হৃদয়ে আচড় কাটা তো দূরের কথা, তারা এতে ভ্রুক্ষেপহীন। আমি নারী ও শিশুর প্রতি ধর্ষণসহ সকল ধরনের সন্ত্রাস ও সহিংসতার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই এবং মনে করি, দায়বদ্ধতাহীন সরকারের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ মদদে এসব সন্ত্রাস ও সহিংসতা সংঘটিত হচ্ছে। এর জন্য ফ্যাসিস্ট ইউনূসসহ বর্তমান সরকারের সবাইকে জবাবদিহি করতে হবে। যে সরকার ঘরে-বাইরে কোথাও একটা মানুষের ন্যূনতম নিরাপত্তা দিতে পারে না তাদের রাষ্ট্র পরিচালনার কোনো ভিত্তি নাই। নারী ও শিশুসহ দেশের জনগণের নিরাপত্তা বিধানে ব্যর্থ অসাংবিধানিক ও অগণতান্ত্রিক ফ্যাসিস্ট ইউনূস সরকার। নিজেদের নিরাপত্তা বিধানে ও জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় ভাবলেশহীন এই পুতুল সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। জয় বাংলা জয় বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ চিরজীবী হোক।