ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নতুন রাজনৈতিক দল নিবন্ধনের জন্য আবেদন চেয়ে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে নির্বাচন কমিশন।
তাতে বলা হয়েছে নিবন্ধন পেতে নতুন দলগুলোকে আবেদনের জন্য এক মাস দশ দিন সময় দিয়েছে ইসি। বিদ্যমান বিধির মধ্যে থেকে, নিবন্ধনের জন্য নতুন কোনো শর্ত যোগ বা শিথিল করা হয়নি বলে জানিয়েছেন ইসির সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ।
সোমবার আগারগাঁওয়ে নির্বাচন ভবনে তিনি বলেন, “নতুন দল নিবন্ধনের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। নতুন যারা রাজনৈতিক দল হিসেবে নিবন্ধিত হতে চান, তারা আগামী ২০ এপ্রিল পর্যন্ত নির্ধারিত শর্ত পূরণ করে আমাদের কাছে আবেদন করতে পারবেন।” এরপর আবেদন পর্যালোচনা ও যাচাই-বাছাই করে নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
সচিব আখতার আহমেদ বলেছেন, বিদ্যমান আইন-বিধি মেনে নিবন্ধন পেতে ইচ্ছুক দলগুলোকে আবেদন করতে হবে। “নতুন করে শর্তারোপ বা শর্ত শিথিল করা হয়নি।” বর্তমানে ইসিতে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সংখ্যা ৪৯।
সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে রাজনৈতিক দলের নিবন্ধন বাধ্যতামূলক। সংসদ নির্বাচনে দলীয় প্রার্থীর বাইরে অন্যদের স্বতন্ত্র প্রার্থী হতে হয়।
ত্রয়োদশ সংসদ নির্বাচনের আগে নতুন দলের নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার কথা রয়েছে বর্তমান ইসির। ডিসেম্বরে ভোট করতে অক্টোবরে তফসিল দেওয়ার প্রস্তুতিও নেওয়া হচ্ছে।
নতুন দলের আবেদন নেওয়ার পর তা যাচাই-বাছাই করতে তিন-চার মাস সময় লাগে। সে হিসেবে অগাস্টের মধ্যে কাজটি শেষ করতে চায় বর্তমান কমিশন।
আবেদনপত্রে যা যা প্রয়োজন
ইসি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিদ্যমান আইন-বিধি অনুযায়ী ১০টি তথ্য আবেদনপত্রের সঙ্গে জমা দিতে হবে। নিবন্ধন ফি হিসেবে দিতে হবে ৫ হাজার টাকা, যা অফেরতযোগ্য।
দলীয় প্যাডে দরখাস্তের সঙ্গে দলের গঠনতন্ত্র, নির্বাচনি ইশতেহার (যদি থাকে), দলের বিধিমালা (যদি থাকে), দলের লোগো ও দলীয় পতাকার ছবি, দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সব সদস্যের নামের তালিকা, ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ও সর্বশেষ স্থিতি, তহবিলের উৎস, দল নিবন্ধনের আবেদনকারীর ক্ষমতাপত্র, নিবন্ধন ফি বাবদ অফেরতযোগ্য ট্রেজারি চালানের কপি এবং নিবন্ধনের তিনটি শর্তের মধ্যে যে কোনো একটি পূরণের প্রমাণ জমা দিতে হবে।
নিবন্ধন যেভাবে
গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী, কমিশনের তিনটি শর্তের মধ্যে একটি পূরণ হলে একটি দল নিবন্ধনের যোগ্য বিবেচিত হয়।
১. দেশ স্বাধীন হওয়ার পর যে কোনো জাতীয় নির্বাচনের আগ্রহী দলটি যদি অন্তত একজন সংসদ সদস্য থাকেন।
২. যে কোনো একটি নির্বাচনে দলের প্রার্থী অংশ নেওয়া আসনগুলোতে মোট প্রদত্ত ভোটের ৫ শতাংশ পায়।
৩. দলটির যদি একটি সক্রিয় কেন্দ্রীয় কার্যালয়, দেশের কমপক্ষে এক তৃতীয়াংশ [২১টি] প্রশাসনিক জেলায় কার্যকর কমিটি এবং সদস্য হিসেবে অন্তত ১০০টি উপজেলা/মেট্রোপলিটন থানায় প্রত্যেকটিতে কমপক্ষে ২০০ ভোটারের সমর্থন সম্বলিত দলিল থাকে।
এক্ষেত্রে নতুন দলের নিবন্ধন পেতে তৃতীয় শর্তটি পূর্ণ করতে হবে। ১ ও ২ নম্বর শর্ত নতুন দলের পূরণের সুযোগও নেই।
২০০৮ সালে এটিএম শামসুল হুদা কমিশন আইনি সংস্কার এনে নিবন্ধন প্রথা চালু করে। তাতে তিনটি নিবন্ধন শর্ত দেওয়া হয়। ভোটে নিবন্ধিত দলগুলোকেই অংশ নেওয়ার সুযোগ দেওয়া হয়।
ক্ষমতার পালাবদলের পর এক ডজনের বেশি নতুন দলের আবির্ভাব হয়েছে রাজনীতির মাঠে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি আলোচনায় রয়েছে অভ্যুত্থানের ছাত্রনেতাদের সামনে রেখে আত্মপ্রকাশ করা জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
সাবস্ক্রাইব
সর্বশেষ খবরের সাথে আপডেট থাকুন।