।। আকাশ আনোয়ার ।।
বাংলাদেশের নাটক, সংগীত, নৃত্য, চলচ্চিত্র, চিত্রকলা জগৎ সাম্প্রদায়িক আগ্রাসনে আজ পুরোই ধ্বসে পড়ছে। শিল্প ও সংস্কৃতির যে কোন অঙ্গন; নাটক, সংগীত, নৃত্য, চিত্রকলা, চলচ্চিত্র জগতের জুনিয়র, সিনিয়র’রা নিজের স্বার্থ আর প্রাণ বাঁচাতেই যেন বেশী তৎপর। শিশু ও নারীর সম্মান আজ শুধু ভূলুন্ঠিতই নয়, নির্যাতন, নিপিড়নের শিকার দেশের সর্বত্র। অথচ বাংলাদেশের এ চিত্র গত ১ দশক আগেও ছিলো না। বাংলাদেশ হারতে পারে না !
সংগীত, নাটক, নৃত্য, চিত্রকলা, চলচ্চিত্র সহ সংস্কৃতির প্রায় সকল ক্ষেত্রের মানুষের পদচারণায় মুখর হতো অন্যায়, অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের ভাষা। আজ তবে কেন সবাই গা, হাত, পা ছাড়া? বাংলাদেশে যখন মৌলবাদ এর ছোবল, তখন তারা নিরব কেন? দেশের ও মানুষের এ ক্রান্তি লগ্নে তাদের কি কোন দায়িত্ব নেই। তবে কেন এ শিল্প চর্চা, সংস্কৃতি চর্চা। রাজপথে তারা নেই, মিটিং মিছিলে তারা নেই, একটি লাইন লিখেও তাদের প্রতিবাদ করতে দেখি না, এ কষ্ট সইবো কেমন করে।
জানি এ সংকট একদিন কেটে যাবে। হাতে গোনা কিছু শিল্প ও সংস্কৃতি চর্চার মানুষ এখনো তাদের বিবেক কারো কাছে বিক্রি করেন নি, তারা লিখতে বা বলতে দ্বিধা করেন না। কিন্তু আমাদের সে ঐক্য কোথায় হারালো, কিসের এতো ভয়?
প্রত্যাশা করবো সবাই দ্বিধা, ভয় এড়িয়ে সকল অঙ্গনের কলা-কুশলীরা রাজপথে নেমে আসবেন, শহীদ মিনারের পাদদেশে এসে একবার এই উলঙ্গ রাজার সামনে নির্ভয়ে দাঁড়াবেন। জনতার হাততালির উর্ধ্বে গলা তুলে জিজ্ঞাসা করবেন; ❝রাজা তোর কাপড় কোথায়?❞
দেশের এ দূর্যোগ মূহূর্তেও অভিনেত্রী শবনম ফারিয়া অন্তত প্রতিবাদের কন্ঠে উচ্চারণ করেছেন ❝যে দেশে প্রতি রিফ্রেশে ধর্ষণের সংবাদ সে দেশে আবার ওমেনস্ ডে কি?❞ সহমত জানাই, শুভেচ্ছা ফারিয়া, অনেক শুভকামনা।
একই সাথে বাংলাদেশের সংগীত, নৃত্য, নাটক, চলচ্চিত্র, চিত্রকলা সহ সকল অঙ্গনের শিল্পী ও কলা-কুশলীদের মিলিত প্রতিবাদ চাই অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে, মৌলবাদের বিরুদ্ধে, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে। সকল মানুষ নিরাপদে থাকুক, শিশু ও নারীর সম্মান সুরক্ষা হোক বাংলাদেশে।
লেখক: অস্ট্রেলিয়া প্রবাসী।