।। মহিউদ্দিন মোহাম্মদ ।।
ধর্ষিতা আছিয়া যেন ভণ্ডদের ধোঁকার উপলক্ষ না হয়। মাঝেমধ্যে এমন পরিস্থিতি আসে, যেখানে শয়তান বাধ্য হয় মানুষের সাথে কন্ঠ মেলাতে। নারী হেনস্তাকারী অর্ণবকে জামিন দিয়েছে কে? এই সরকার। জাতীয় সমন্বয়ক পার্টির সরকার। তার পক্ষে শাহবাগ থানায় মব সৃষ্টি করা হয়েছিলো কাদের আস্কারায়? এই সরকারের আস্কারায়। জাতীয় সমন্বয়ক পার্টির নিরব সম্মতিতে।
থানায় প্রকাশ্যে যারা ভিক্টিম মেয়েকে শাহবাগী বলে ডিহিউম্যানাইজ করেছিলো, তারা চিহ্নিত জ*ঙ্গী। থানা থেকে মেয়েটির নাম ঠিকানা ফোন নাম্বার নিয়ে সরাসরি ধর্ষণ ও হ*ত্যার হুমকি দিয়েছিলো। অন-ক্যামেরা মিথ্যা মামলা দেওয়ার কথা বলেছিলো। তাদেরকে ইচ্ছা করে গ্রেপ্তার করে নাই কে? এই সরকার। জাতীয় সমন্বয়ক পার্টর সরকার।
ভিক্টিম মেয়েকে মামলা তুলে নিতে বাধ্য করেছে কে? এই সরকার। জাতীয় সমন্বয়ক পার্টির করকার। কীভাবে? প্যাসিভ সম্মতির মাধ্যমে। যেখানে অ্যাকশন রিকোয়ার্ড, সেখানে ইনঅ্যাকশন অপরাধ। সরকার বা জাতীয় নাগরিক পার্টি ভিক্টিমের পাশে দাঁড়ানোর দায়িত্ব পালন করেনি বলেই মেয়েটি মামলা প্রত্যাহার করতে বাধ্য হয়েছে।
অর্ণবের গলায় ফুলের মালা পরিয়েছে কারা? হাতে কোরান শরীফ তুলে দিয়েছে কারা? তারা, যারা প্রকাশ্যে মানুষ খু**নের হুমকি দেওয়ার পরও সরকার তাদেরকে গ্রেপ্তার করে না। যাদের বিরুদ্ধে জাতীয় সমন্বয়ক পার্টি কোনো কথা বলে না।
নারীবিরোধী জ**ঙ্গী মবের সাথে থানায় আলোচনার নামে কৌশলে সাহস দিতে গিয়েছে কারা? ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিবির নেতারা। ক্যামেরায় আলোচনা দেখিয়ে গোপনে বলেছে, আছি, তোমাদের সাথেই আছি, অর্ণবকে ছাড়িয়ে নাও, আমরা তো নিজ নামে তাকে ছাড়াতে পারি না, আমাদের হয়ে কাজটা তোমরা করে দাও।
সুতরাং, কোনো ভণ্ড বাটে পড়ে আছিয়ার পক্ষে দাঁড়ালেই সে ধর্ষণের বিপক্ষে না। সে রাজনীতিক মতলব চরিতার্থ করতে গিয়েছে। পলিটিক্যাল স্কোর বাড়াতে গিয়েছে। লেফট-লিনিং ভোটারদের ধোঁকা দিতে গিয়েছে। দেশব্যাপী এদের আসল চেহারা দেখে ফেলেছে। এরাই সারাদেশে নারী নিপীড়নের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। এরাই মাজার ভেঙেছে, নারী ফুটবল বন্ধ করেছে, গানের আসর, বাউল মেলা, বইমেলা প্রভৃতিতে হামলা চালিয়েছে। এরাই নিজেদের বটবাহিনী দ্বারা ফেসবুকে নারীদের বুলিং করছে। গালাগালি করছে। মুখ না ঢাকলেই উলঙ্গ নারী বলে মন্তব্য করছে।
যদি এরা সত্যিই আছিয়ার পক্ষের লোক হতো, ধর্ষণ ও নারী পীড়নের বিরুদ্ধশক্তি হতো, তাহলে অর্ণবকান্ডে জড়িত প্রত্যেকে জেলে থাকতো। মাজার, বইমেলা, গানের আসর, বাউলমেলা এসবে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার করতো। ফেসবুকের বটরবাহিনীর বিরুদ্ধে কথা বলতো। বুলি শুনে ভোলার অভ্যাস বাঙালিকে ত্যাগ করতে হবে।