ঢাকা, ১২ মার্চ ২০২৫: বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ জানিয়েছে, ধর্মীয় ও জাতিগত সংখ্যালঘু এবং আদিবাসী সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সহিংসতা এখনও থামছে না। গতকাল ১২ মার্চ প্রকাশিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সংগঠনটি জানায়, চলতি বছরের জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারি মাসে সংখ্যালঘু ও আদিবাসীদের টার্গেট করে মোট ৯২টি হামলার ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে রয়েছে ১১টি হত্যা, ৩টি ধর্ষণ, ২৫টি মন্দিরে হামলা, ১টি ধর্ম অবমাননার অভিযোগ, ৬টি আদিবাসীদের ওপর হামলা এবং ৩৮টি বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাংচুর ও লুটপাটের ঘটনা। এছাড়া চাকরি থেকে অপসারণের ২টি এবং অন্যান্য হামলার ৬টি ঘটনাও রেকর্ড করা হয়েছে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, গত বছরের ৪ আগস্ট থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাঁচ মাসে সংখ্যালঘুদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে মোট ২১৮৪টি। এর মধ্যে ৩২টি হত্যা, ১৩৩টি উপাসনালয়ে হামলা, ১৩টি নারী নির্যাতন ও ধর্ষণ, ১৯০৬টি বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাংচুর-লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ, ৪৭টি জমি ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান দখল এবং ১৫টি ধর্ম অবমাননার অভিযোগে গ্রেফতারের ঘটনা রয়েছে। এসব বিষয়ে গত ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪ এবং ৩০ জানুয়ারি ২০২৫-এ সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে দেশবাসীকে অবহিত করা হয়েছিল।
নেতৃবৃন্দের ঘটনাস্থল পরিদর্শন
গত ৯ মার্চ রাতে সাভারের আশুলিয়ার নয়ারহাট বাজারে স্বর্ণ ব্যবসায়ী দিলীপ দাসকে নির্মমভাবে হত্যা ও স্বর্ণ লুটের ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন ঐক্য পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মনীন্দ্র কুমার নাথের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল। প্রতিনিধি দলে ছিলেন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রবীন্দ্র নাথ বসু, যুব ঐক্য পরিষদের দপ্তর সম্পাদক সুজিত কুমার ঘোষ, ঢাকা জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ কুমার দাস, আশুলিয়া থানা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি আশিস নাগসহ স্থানীয় নেতৃবৃন্দ।
নেতৃবৃন্দ দিলীপ দাসের স্ত্রী ও পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান এবং হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনার দাবি জানান। ঘটনাস্থলে উপস্থিত অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিবি) তরিকুল ইসলামের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তারা হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত নিশ্চিত করার আহ্বান জানান। এছাড়া, আশুলিয়ার বাঁশবাড়ি এলাকায় সন্তোষ ঠাকুরের জমি জনৈক জাহাঙ্গীর আলম কর্তৃক অবৈধভাবে দখলের ঘটনাস্থলও পরিদর্শন করেন প্রতিনিধি দল।
নেতৃবৃন্দের দাবি
মনীন্দ্র কুমার নাথ বলেন, “সংখ্যালঘু ও আদিবাসীদের ওপর হামলার ঘটনা বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা না হলে এ ধরনের ঘটনা অব্যাহত থাকবে।” তিনি সরকার ও প্রশাসনের প্রতি এ বিষয়ে জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদ এসব ঘটনার বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরে সংখ্যালঘু ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছে।
(প্রতিবেদন: বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের প্রেস বিজ্ঞপ্তির ভিত্তিতে)