বাংলাদেশের ইতিহাসে দীর্ঘতম রেলসেতু যমুনা রেলসেতু আজ নীরবে, চুপিসারে উদ্বোধন করা হয়েছে। এই মহৎ প্রকল্প ছিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দূরদর্শী পরিকল্পনার ফসল। অথচ এই প্রকল্প উদ্বোধনকে ঘিরে ছিল না কোনো জাঁকজমক বা মিডিয়ার আলোড়ন। কিন্তু কেন এই নীরবতা?
অনুসন্ধানে জানা যায়, এর পেছনে রয়েছে ড. ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকারের এক অস্বস্তিকর অবস্থান।
আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে শুরু হওয়া এই সেতুর নির্মাণ দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থায় এক যুগান্তকারী অবদান রাখবে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের কাছে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে দক্ষিণাঞ্চলের সংযোগ স্থাপন এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে এই প্রকল্প ছিল শীর্ষ অগ্রাধিকারের একটি।
অথচ অন্তর্বর্তী সরকার গত ৭ মাসে দেশের উন্নয়নে কোনো উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ নিতে পারেনি। বরং আওয়ামী লীগ সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন করে তার কৃতিত্বে ভাগ বসাচ্ছে বলে মত সাধারণ নাগরিকদের। তারই নমুনা হচ্ছে যমুন রেলসেতুর উদ্বোধনের তোড়জোর। এটি নিয়েও বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে পড়েছে ইউনূস-সরকার।
যেখানে ড. ইউনূস ও তার সরকারের লোকজন প্রতিদিনই আওয়ামী লীগের উন্নয়ন প্রকল্প নিয়ে সমালোচনা ও বিদ্রূপ করছে, সেখানে যমুনা রেলসেতুর মত এত বড় একটি অর্জনের কৃতিত্ব গ্রহণ করতে গিয়ে জনগণের বিদ্রুপ ও সমালোচনার ভয় তাদের গ্রাস করেছে।
এই লজ্জা এড়াতে ইউনূস-সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের কেউ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত হননি। পরিবর্তে, একজন সচিবকে দায়িত্ব দিয়ে বিষয়টিকে নীরবে সম্পন্ন করা হয়েছে। এমনকি অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু সমর্থক ও প্রচারকারী, যাদের অনেকেই “গোয়েবলস টিম” হিসেবে ইতিমধ্যে আখ্যা দিয়েছেন, তারাও এই ঘটনাকে মহিমান্বিত করার চেষ্টা করছেন।
কিন্তু প্রকৃত সত্য হলো এই, গত ৭ মাসে একটি সামান্য কালভার্ট বা গ্রামের খালের উপর সাঁকোও নির্মাণ করতে না পারা এই ইউনূস-সরকারের পক্ষে শেখ হাসিনার সরকারের সুবিশাল উন্নয়ন কর্মযজ্ঞের মোকাবেলা করা সহজ ছিল না।
যমুনা রেলসেতু শুধু একটি অবকাঠামো নয়, এটি শেখ হাসিনার স্বপ্নের প্রতীক— যিনি দেশের উন্নয়ন ও আধুনিকায়নে অবিচল প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। উত্তরবঙ্গের জনগণের জন্য এই সেতু যোগাযোগের নতুন দ্বার উন্মোচন করবে এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথে দেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে।
তবে অন্তর্বর্তী সরকারের এই নীরবতা ও পশ্চাদপসরণ অনেকের মনেই প্রশ্ন তুলেছে— শেখ হাসিনার উন্নয়নের ধারাকে তারা কীভাবে মূল্যায়ন করবে?
এই সেতুর উদ্বোধন হয়তো নিঃশব্দে হয়েছে, কিন্তু এর প্রভাব বাংলাদেশের জনগণের জীবনে দীর্ঘস্থায়ী ও সশব্দ হবে— এটিই শেখ হাসিনার দূরদর্শিতার প্রমাণ।